পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে দেশ সেবা করে যাচ্ছি। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনই লক্ষ্য আমাদের, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন নয়।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের ইয়ুথ ক্লাব মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্ত্যবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে বিদেশে বাংলাদেশের নাম শুনলে মানুষ নাক সিটকাতো। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পানির সমস্যার সমাধান করেছে। কিন্তু এই পানির প্রত্যেক লিটার পরিশোধন করতে অনেক অর্থ ব্যয় হয়। তাই পানির যাতে অপচয় না হয়, সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখতে হবে। শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। দেশে শান্তি, নিরাপত্তার জন্য, দুর্নীতি দমন করার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাই। নৌকার পালে হাওয়া লেগেছে, জোয়ার উঠেছে, নৌকা মার্কার জয় হবে বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিদ্যুৎ সমস্যারও সমাধান করা হয়েছে। ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ খাতকে বে-সরকারিকরণ করা হয়েছে। নতুন নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা মাটির নিচ দিয়ে করা হচ্ছে, যাতে ঝড় কিংবা অন্য কোনো কারণে বৈদ্যুতিক লাইনের কোনো ক্ষতি না হয়। এ সময় সবাইকে বিদ্যুতের অপচয় রোধের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, বিদ্যুৎ অপচয় করা যাবে না, সাশ্রয় করতে হবে। তাহলে নিজেদের বিদ্যুৎ বিলও বাঁচবে, দেশেরও উন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকাকে যানজটমুক্ত করতে মেট্রো রেল করা হচ্ছে। পাতাল রেল স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মানুষের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের জন্য ইউনিয়ন গুলোকে সিটি করপোরেশনের আওয়াভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা সিটিকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ঢাকার আশপাশে ছোট ছোট শহর গড়ে তোলা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক-বীমা বেসরকারি করণ করা হয়েছে। ১০০টি শিল্পাঞ্চল তৈরি করা হচ্ছে, যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত হয়। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। ৪৪টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ৩৩টি চালু আছে। সেগুলোতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি ১৬০০ থেকে ৮ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
সভানেত্রী বলেন, শুধু অর্থশালী নয়, হতদরিদ্রদের দিকেও আওয়ামী লীগের দৃষ্টি আছে। ঢাকার বস্তিবাসীদের জন্য ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। বস্তিগুলোতে বহুতল ভবন তৈরি করা হবে। সেই ফ্ল্যাটের ভাড়া দৈনিক, মাসিক বা বাৎসরিক ভাবে পরিশোধ করা যাবে। যার যেভাবে সুবিধা হবে সেভাবেই ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, দেশের প্রত্যেক মানুষেরই জীবনমান বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে একজন দিনমজুর সারা দিনের আয় দিয়ে ২-৩ কেজি চাল কিনতে পারতো, এখন ৮-১০ কেজি চাল কিনতে পারছে মাছ কিনতে পারছে। আর এসব সম্ভব হয়েছে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতি করছে না, এতিমের টাকা আত্মসাত করছে না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাও মামলা করেনি, আওয়ামী লীগও করেনি। মামলা করেছে তার প্রিয় লোকেরাই। সেই মামলায় খালেদা জিয়া এখন জেলে। বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে যারা মানুষ হিসেবে মনে করে না, তারা কিভাবে ধানের শীষে ভোট চায়! ধানের শীষ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, দুর্নীতি, এতিমের টাকা আত্মসাত। আর নৌকা মানেই শান্তি, উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা। জনসভায় বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে দলের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে আমাদের প্রার্থী যাঁরা আছেন, উত্তরে (ঢাকা উত্তর) আমি তাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। এই সিট (আসনে) যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা জনসভা করছি, ঢাকা-১৭, এই আসনে আমাদের প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান ফারুক,বিশিষ্ট সিনেমার নায়ক। তিনি জনগণের সেবা করতে আপনাদের কাছে এসেছেন নৌকা মার্কায় আপনাদের ভোট চান।
অন্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা-১১-এর প্রার্থী এ কে এম রহমতউল্লাহ। তিনি একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, রপ্তানি করেন এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি। ঢাকা-১২ আসাদুজ্জামান খান কামাল, তেজগাঁও-রমনাতে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আজকে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করে, জঙ্গিবাদ দমন করে এই ঢাকা শহরেও আজকে একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৈরি করতে পেরেছেন। কাজেই তিনি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চান। ঢাকা-১৩ সাদেক খান। তিনি আমাদের মোহাম্মদপুর এলাকার। এই ঢাকারই সন্তান। জনগণের সেবা করার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ঢাকা-১৪ আসলামুল হক (যদিও তিনি জনসভায় ছিলেন না), ঢাকা-১৫ কামাল আহমেদ মজুমদার আর ঢাকা-১৬ মো. ইলিয়াছ উদ্দিন মোল্লাহ, তাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিন। আর ঢাকা-১৮, আমাদের সাহারা আপা, এই যে সাহারা আপা বাংলাদেশে সেই ১৯৬৯-এর ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে আমরা একই সঙ্গে রাজপথে সংগ্রাম করেছি। কাজেই ১৯৭০-এর নির্বাচন, মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তাঁর অবদান, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, ভোট ও ভাতের আন্দোলন এবং স্বৈরতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন, সব আন্দোলনে তিনি ছিলেন। কাজেই আমি তাদের জন্য ভোট চাই। ঢাকা-১ আসনে সালমান ফজলুর রহমানের জন্যও ভোট চান তিনি।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী মায়া, যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন প্রমুখ জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।