Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা-১৩ আসনে নৌকা ধানের শীষের প্রচার জমে উঠেছে

সায়ীদ আবদুল মালিক | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

রাজধানীর মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর গান-বাজনায় মাতিয়ে রেখেছে। কখনো কখনো নৌকা প্রতীকের মিছিল করছে। এই ক্যাম্পের পাশ দিয়েই কিছুক্ষণ পর বিএনপির নেত-কর্মীরা ধানের শীষের মিছিল নিয়ে যাচ্ছে। এই সময় দুই প্রার্থীর প্রচারণায় বেশ প্রাণ পেয়েছিল সেখানে। গতকাল শুক্রবার ঢাকা-১৩ নির্বাচনী আসনের মোহাম্মদপুর এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বড় দুই দলের প্রার্থী এবং কর্মী-সমর্থকরা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন চমকপ্রদ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নিয়ে তার ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন ক্লান্তিহীনভাবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরে বাংলা নগর নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৩ নির্বাচনী আসন। এই আসনে মহাজোটের মনোনীত প্রার্থী ঢাকা মহানগর উত্তরের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক এই কাউন্সিলরের এলাকায় রয়েছে বেশ পরিচিতি। এই পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিতে যাবে বলে মনে করছেন নৌকার কর্মী-সমর্থকরা।
অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুস সালাম প্রচারণায় নেমে বার বার সরকারদলীয়দের হামলার শিকার হচ্ছেন। তবুও প্রচারণায় থেমে নেই তিনি। প্রতিদিনই নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে ধানের শীষের প্রচারণায় তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন অলি-গলি চষে বেড়াচ্ছেন।
এই আসনে বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বেশ প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে মনে করছেন এলাকার ভোটাররা। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির ভোটে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর কাজ করবে এই আসনে। বিশেষ করে নতুন ভোটার এবং নিম্নবিত্ত বা বস্তিবাসীর ভোট বড় ফ্যাক্টর হবে বলে তারা মনে করেন।
সরেজমীন দেখা গেছে, গতকাল মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে নৌকার প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী ক্যাম্প বেশ জমজমাট নেতা-কর্মীর উপস্থিতি। গান-বাজনায় মাতিয়ে রেখেছিলেন কর্মীরা। কিছুক্ষণ পর বিএনপির নারীকর্মীরা মিছিল নিয়ে পাশ দিয়ে যাচ্ছেন। দুই প্রার্থীর প্রচারণায় বেশ প্রাণ পেয়েছিল ওই মুহূর্তটি।
এই আসনে একাধিক প্রার্থী থাকলেও মূলত আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। ভোটারদের মন কাড়তে দুই প্রার্থীই নানান প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন। তবে কিছু আশঙ্কার কথা বলছেন বিএনপিপ্রার্থী।
প্রচারণাকালে বিএনপিপ্রার্থী আব্দুস সালাম বলেন, ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারে সে পরিবেশ সৃষ্টি করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের। জনগণ খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপিকে ভোট দেবে। ভোটে ধানের শীষের পক্ষে একটা বিপ্লব ঘটবে বলে ধানের শীষের প্রার্থী মনে করেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাদেক খান বলছেন, প্রধানমন্ত্রী পর পর দুইবার প্রধানমন্ত্রী হওয়াতে এই দেশে যথেষ্ট উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। এখন যে সমস্ত কাজ অসমাপ্ত রয়েছে সেগুলো শতভাগ পূরণ করা হবে। অনুন্নত এলাকাগুলোকে আরো উন্নত করা, বস্তিবাসীদের থাকার সুব্যবস্থাসহ পানি ও গ্যাস সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন সাদেক খান।
মোহাম্মদ পুর এলাকার বাবর রোডে কথা হয় ওই এলাকার ভোটার জাফর আহমদের সাথে। তিনি বলেন, নৌকার প্রতিযোগিতা হবে ধানের শীষের সাথে। খুব বড় ব্যবধানে নয়, কনটেস্ট হবে। তিনি বলেন, নৌকা প্রতীরের গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা যেভাবে বাধাহীন উৎসব মুখর হচ্ছে সেভাবে ধানের শীষের গণংযোগ ও প্রচার চালতে পারছে না। নৌকা প্রতীকের বিরোধী পক্ষ প্রচারণায় নামলেই বাধা, হামলার কবলে পড়তে হচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে তো আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব হবে না। ভোটাররাও নির্ভিঘেœ কেন্দ্রে যাওয়ার সাহস পাবে না।
ঢাকা-১৩ নির্বচনী এলাকার বেড়ি বাধে কথা হয় ফারুক আহমেদের সাথে। তিনি বলেন, এখানে কোনো দ্বিধা-বিভক্তি নাই। সাদেক ভাই এখানে বড় হয়েছেন। ধনী-গরিব সবার সাথে মিশতে পারেন। এলাকার ছেলে হিসাবে তিনি ভোট পাবেন। তিনি আরও বলেন, ‘সোয়িং ভোটার’, সাধারণ কিছু ভোটার যারা তাৎক্ষণিকভাবে ঠিক করবেন কোথায় ভোট দেবেন এবং ইয়াং জেনারেশনের ভোট যেদিকে যাবে সেই প্রার্থী জয়ী হবেন।
এই তিন শ্রেণির ভোটারদের ভোট পেতে বাড়ি বাড়ি ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন দুই জোটের নেতা-কর্মীরাই। মহিলা ভোট বেশি। মহিলাদের কাছে যেতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন নারী কর্মীরা। তবে বিহারি ক্যাম্পের ভোটও কিছুটা প্রভাব রাখবে।
এ এলাকায় মোট ভোটার ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৬৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯২ হাজার ৬১২ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৬৫৭ জন। সারা দেশে ছয়টি আসনের মধ্যে এই আসনটিতেও ইভিএমে ভোট হবে। তবে ভোটাররা ইভিএমের সাথে তেমন পরিচিত নন। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ