Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে গণগ্রেফতারে ফাঁকা ভোটের মাঠ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

পৌষের কনকনে ঠান্ডায় দক্ষিণাঞ্চলে ভোটের রাজনীতিতে ইতোমধ্যেই উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। হামলা-মামলা আর গণগ্রেফতারে এ অঞ্চলে বিরোধী দলীয় মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ইতোমধ্যে ঘর ছাড়া হতে শুরু করেছেন। বিরোধী দলের প্রচারণায়ও লেগেছে ভাটির টান। বিএনপির সদর উপজেলা সভাপতি শেখ আবদুর রহিম বাবা-মা ও বড় ভাই-এর কবর জিয়ার করতে মুসলিম গোরস্থানে গেলে সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ২৪ ডিসেম্বরের পর থেকে সেনাবাহিনী মাঠে নামলে প্রতিপক্ষের হামলা থেকে রেহাই মিলতে পারে বলে আশা করছেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা। এদিকে, গতকাল থেকে বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি’র রণ পাহারা শুরু হয়েছে। সাইরেন বাজিয়ে গাড়ির বহর নিয়ে দুপুরের পর থেকে বিজিবি বরিশাল মহানগরীতে টহল শুরু করেছে।
জানা গেছে, গত তিন দিনে অর্ধ-শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতারের ফলে রাজনৈতিক ময়দানে নানা শঙ্কা বাড়ছে। গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের সাথে জেল গেটে দেখা করতে যাওয়া আট জনকে সেখান থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরওয়ার অভিযোগ করেছেন, তার নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার করে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে ভোটের মাঠের দখল নিচ্ছে পুলিশ। তিনি অভিযোগ করেন, পরিস্থিতি এমনই হচ্ছে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে প্রচারণায় যেই নামছে তাকেই পুলিশ আটক করছে পুলিশ। গতকাল দুপুর পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার অভিযোগ করেন তিনি। পোস্টার লাগানো ও দলীয় প্রচার চালানোর সময়ে এবং বাসায় বাসায় অভিযান চালিয়ে ধানের শীষ প্রতীকের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করার কথাও জানান তিনি।
গণগ্রেফতারের ঘটনায় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা ইতোমধ্যেই হ্রাস পেয়েছে। বেশীরভাগ কর্মী আত্মগোপনে। নেতৃবৃন্দ সতর্কভাবে চলাফেরা করছেন, রাতে ঘরে ঘুমাচ্ছেন না। বিএনপি নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন গত কয়েক দিনে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মহানগর ও জেলা শাখাসহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীও রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি সৈয়দ আহসানুল হক কবির হাসান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মন্টু খান, মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুল হাসান রতন, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, ছাত্রদল কেদ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আফরোজা খানম নাসরিন, শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একেএম শামসুল হক, শামসুল আলম ফরহাদ, মামুন হাওলাদার, মাইনুল হাসান, আবুল খায়ের, খালেদ হোসেন বাবর, মো. সোহেল, মো. রিয়ন, বাচ্চু দুয়ারী, ১০ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সভাপতি কামরুল ইসলাম এবং কামরুজ্জামানও রয়েছে।
এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন স্তরের ১২ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে বিএনপি’র গণগ্রেফতারের অভিযোগ প্রসঙ্গে মহানগর পুলিশ কমিশনার মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। নির্বাচনে নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন মামলার তালিকাভুক্ত আসামী ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।
এদিকে বরিশালের উজিরপুর উপজেলা নৌকা ও ধানের শীষের প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের ৬৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
বাদী মিজানুর রহমান মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তিনিসহ ২০/২৫ জন কর্মী গত সোমবার দুপুরে বড়াকোঠার ডাবেরকুল এলাকায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ কালে বিএনপির প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন সান্টু প্রচারণা চালাতে একই সময়ে ওই পথ গিয়ে গাড়ির বহর নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় হত্যার উদ্দেশ্যে তার গায়ের ওপর মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয় বিএনপির কতিপয় নেতা। একই সময়ে ছাত্রলীগ কর্মী রুবেলকে কুপিয়ে জখম এবং ৫টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ