Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

শান্ত ভোট রাজনীতির মাঠ অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা

সিলেট ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সিলেটে মহাজোট বা ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের মধ্যে অপ্রীতিকর উল্লেখযোগ্য কোন ঘটনা ঘটেনি। হানাহানি, সংঘাত, সংঘর্ষ বা প্রার্থী নির্ভর উত্তেজনায় জড়ায়নি প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক। তবে গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টায় নির্বাচনী জনসভা শেষে ফেরার পথে সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ইমরান আহমদের গাড়িবহর লক্ষ করে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলার স্থানীয় কোওর বাজার এলাকায় ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ইমরান আহমদ। এর আগে একই আসনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী দিলদার হোসেন সেলিমের গাড়িতে কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় হামলার শিকার হয়। সিলেট-১ আসনে মহাজোট প্রার্থী ড. মোমেনের প্রচার গাড়ি ও নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ঘটনাও ঘটে। বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত এ সংগঠিত ঘটনাতে নেতিবাচক আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। এতে করে সিলেটে নির্বাচনী মাঠের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। এরমধ্যে দিয়ে ভোট রাজনীতিতে অস্থিরতাসহ নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। গোটা নির্বাচনী পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে হিংসা-প্রতিহিংসার দাবানল।
এই ঘটনা ছাড়া তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এখনও জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা। সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ আশাতীত। নানা রকম উদ্বেগ-উৎকন্ঠার পরও নির্বাচনী আমেজকে বেগবান করছেন মুখে মুখে। নিরবে সরবে ব্যস্ত তারা পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে। প্রধান রাজনীতিক দলের সক্রিয় নেতাকর্মীরা নির্বাচনী এলাকায় কৌশলী প্রচারণা চালাচ্ছেন পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে। বিশেষ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা গা-বাঁচিয়ে আপাতত প্রচারণায় ব্যস্ত। মহাজোট প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের চেয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলতে হচ্ছে তাদের। রাতে ঘরবাড়ি ছাড়া তারা। ভেতরে ভেতরে চাপা ক্ষোভে তারা ফুঁসছেন। হামলা-মামলা-হয়রানীর অপ্রত্যাশিত চাপ থেকে মুক্তির জন্য এ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। সেকারণে ৩০ ডিসেম্বরের জন্য অধীর অপেক্ষায় দেখা যাচ্ছে তাদের মধ্যে।
স্থানীয় আ.লীগের কর্মী-সমর্থকদের সাথে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যোগাযোগ জিইয়ে রেখে প্রশাসনের ধরপাকড় থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। অনেকে আবার সুকৌশলে রাত কাটাচ্ছেন আ‘লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে। বিএনপির কর্মী সমর্থকদের প্রশাসনের হাত থেকে রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন ক্ষেত্র বিশেষে। তৃণমূলে এমন অবস্থা সিলেটের রাজনীতিক সম্প্রতির অতীত বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আ.লীগের প্রার্থী জয়-বিজয় নিয়ে তেমন আগ্রহ বা ত্যাগি ভূমিকা রাখার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধারনা জন্মেছে, আ.লীগের প্রার্থীরা যেভাবেই হোক বিজয়ী হবেন সহায়ক কোন শক্তির বদৌলতে। তাই এনিয়ে টেনশনে দলের এমপি প্রার্থীকে নিয়ে। দল সমর্থিত প্রার্থী সহায়ক শক্তি নির্ভর হয়ে, স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাত্তাই দিচ্ছে না, প্রয়োজন মনে করছে না কোন গুরুত্বের। সাজানো ছকে টাকা পয়সা খরচ করে দিনমজুর দিয়ে পোস্টার, লিফলেট বিতরণ করছেন দায়সারা ভাবে। দলের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নের এহেন ঘটনা এমপি বিরোধী অবস্থানকে আরো দৃঢ় করে তুলছে। একই সাথে নেতাকর্মীদের মান-অভিমান বা বিরোধী মনোভাবকে এমপিরা আমলে না নিয়ে, তাদের পক্ষে স্থানীয় থানার ওসি দিয়ে নেতাকর্মীদের ডেকে নিয়ে চাপ সৃষ্টি করছেন মাঠে কাজ করার জন্য । ভয়-ভীতি দেখানোরও খবর পাওয়া যাচ্ছে। মহাজোট প্রার্থীদের নিয়ে স্থানীয়ভাবে দলে দৃশ্যমান কোন্দল কল্পনার সীমাকে হার মানাচ্ছে। সেকারনে রাজনীতিকভাবে বিরোধ নিস্পত্তি না করে প্রশাসনের খবরদারিতে, দলের বিরোধী নেতাকর্মীদের নমনীয় করতে চেষ্টা চলাচ্ছেন এমপিরা । কিন্তু এতে করে আরো ক্ষেপে উঠছেন প্রার্থী বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা। তারা প্রার্থী ও প্রার্থীর পক্ষে প্রশাসনের এহেন ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। একাধিক সূত্র জানায়, আ‘লীগের কর্মী-সমর্থকরা দলের প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচনের দিন মাঠে জানান দিবে, সেই সাথে প্রশাসনের অযৌক্তিক ভূমিকার বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়াবে তারা।
জানা গেছে, আ.লীগের এমপি বলয়ের সাথে দলের ত্যাগি নেতাকর্মীদের বিরোধ ভেতরে ভেতরে ক্রমশ: ছড়াচ্ছে। প্রশাসনিক একচ্ছত্র ছায়ায় এমপি প্রার্থীরা নিজদের ভোটের মাঠে তাজা রাখার চেষ্টা করে গেলেও যেকোন মুহূর্তে নিজ দলের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের প্রতিরোধে পড়তে পারেন ওই এমপিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ