পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচন একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটা তামাশায় পরিণত হয়েছে। আজকে সকলের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এই নির্বাচন আদৌও অনুষ্ঠিত হবার মতো অবস্থা এখানে আছে কিনা। নির্বাচনের কোনো মাঠ নেই। অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করছি যে, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এমনকি বিচার বিভাগ তারা আজকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধবংস করবার জন্য একজোট হয়েছে। এটা আমাদের কাছে শুধু বিস্ময়কর নয়, অত্যন্ত আতঙ্কের। এই কথাগুলো অত্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে বলছি। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
একের পর এক দলীয় প্রার্থিতা বাতিলের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অবস্থা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আশা করেছিলাম নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে আমরা দেখতে পাবো বিরোধী দল তাদের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের নিয়ে তারা প্রচারণায় নামতে পারছে, বিএনপি প্রচারণা করতে পারছে এবং মামলা-মোকাদ্দমা যা ছিলো তা আপাততঃ স্থগিত থাকছে। গত বছরে মিথ্যা মামলা, ভৌতিক মামলা ও গায়েবী মামলা অনেক হয়েছে। এসব মামলা দিয়ে বিরোধী দলকে পুরোপুরিভাবে আজকের পত্রিকাও আছে বিএনপি করনার্ড। একেবারে একটি অবিশ্বাস্য একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যে পরিস্থিতিতে কোনো মতেই একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এটা হবার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, নির্বাচনের ৬/৭দিন বাকী। আমরা এখনো আশা করছি যে, নির্বাচন কমিশন শেষ মুহুর্তে তার সম্ভিত ফিরে পাবে, সরকার তার সম্ভিত ফিরে পাবে এবং এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সেনাবাহিনী যারা ২৪ তারিখ নামবে বলে বলা হয়েছে সকলের মধ্যে দেশপ্রেম-দায়িত্ববোধ কর্তব্যবোধ ও তাদের চার্টারে যা বলা আছে সেভাবে তারা দায়িত্ব পালন করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
বিচার বিভাগের ওপর পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে একদম উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের প্রার্থিদের প্রার্থিতা বাতিল করছে। একটা উদাহরণ আমি দেখা চাই সিলেট-২ আসনে। সেখানে আমাদের গুম হয়ে যাওয়া নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তিনি পদত্যাগ করে প্রার্থী হয়েছে। তিন বছর আগে কেনো করেননি সেই অভিযোগে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ড. এনামুল হক সরদার জৈন্তাপুর সরকারি ইমরান আহমেদ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আছে। লুনার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে কিন্তু এনামুল হক সরদারের প্রার্থিতা বাতিল হয়নি।
তিনি বলেন, লুনার প্রার্থিতা নির্বাচন কমিশন থেকে বাতিল হয়নি। কারণ আমাদের দেশে যে আইন আছে, সরকারি চাকরি না করলে ওই তিন বছরের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যেকোনো স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে যেকোনো প্রার্থীর নির্বাচন করা সম্ভব এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে আছে নির্বাচন চলাকালেও পদত্যাগ করতে হবে না, নির্বাচিত হলে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। সম্পূর্ণভাবে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছে এই আদেশটাকে আমরা কি বলব? এটাকে কি আইন সম্মত বলব না বেআইনি বলব। এটা কি ইনোসেন্ট অর্ডার অথবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আদেশ বলব। আমর বক্তব্য হচ্ছে- আজকে এই কাজগুলো কেনো করা হচ্ছে। একই ব্যক্তিকে একই আদালতে একজনকে বলা হচ্ছে বৈধ আরেকজনকে বলা হচ্ছে অবৈধ।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রশ্নটা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন যাকে বৈধ ঘোষণা করলো তারপরে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে হাইকোর্টে কোনো এখতিয়ার আছে কিনা সেই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার। আইনটা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন যথন ফাইনালি বলে দিলো সে বৈধ চলে গেলো প্রতীক নিয়ে। তারপরে নির্বাচন শেষ না হওয়া পযর্ন্ত ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার বিধান আছে- নির্বাচনের পরে আগে নয়।এভাবে প্রত্যেকটা জায়গায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। শুধু হস্তক্ষেপ নয়। আমার দলের প্রার্থী কাকে মনোনয়ন দেবো সেকথা হাইকোর্ট থেকে বলে দেয়া হয়েছে। এটা প্রশ্ন? তাহলে আমি কী করে বুঝব, হাইকোর্ট থেকে আমি ন্যায় বিচার বা সুবিচার পাচ্ছি। আমি কী করে বলব, হাইকোর্ট তার আইনের প্রয়োগ করছেন। আমি বুঝতে পারছি না, মানুষ বুঝতে পারছে না। এখানে নির্বাচনে প্রধান স্টেকহোল্ডার হচ্ছে রাজনৈতিক দল। প্রধান রাজনৈতিক দলকে এভাবে ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের প্রার্থীদের বাতিল ঘোষণা করা হয় তাহলে কী মানুষ বলতে না যে, আজকে বিচার বিভাগও সরকারের যে ইচ্ছা সেই ইচ্ছার সঙ্গে যাচ্ছে, সরকারের ইচ্ছা পূরণ করছে।
প্রার্থিতা বাতিলের আসনে পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি:
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিচার বিভাগ যার ওপর মানুষের আস্থা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আজকে তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে বলেছি যে আসনগুলোতে আমাদের প্রার্থীদের প্রার্থিতা অবৈধভাবে বেআইনিভাবে শূণ্য ঘোষণা বা বাতিল করা হয়েছে সেই আসনগুলোতে আমাদের প্রার্থী দেয়ার সুযোগ প্রদান অথবা সেই আসনগুলোর নির্বাচন স্থগিত রাখা হোক। পরে সিডিউল ঘোষণা আবার নির্বাচন দেয়া হোক। নির্বাচনে পুলিশ বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবারের নির্বাচনে আমাদের প্রতিপক্ষ হচ্ছে পুলিশ। আমি খুব স্পষ্ট করে বলছি। কেনো? মিটিং ভেঙে দেয়া, ভূয়া মামলায় গ্রেপ্তার করা, জেল গেট থেকে গ্রেপ্তার করা- এটা নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন নতুন ঘটনা করছে তারা। আওয়ামী লীগ-যুব লীগের সন্ত্রাসীরা তারা নিজেরা নিজেদের অফিস ভাংচুর করছে, এটা পরিত্যক্ত ঘরের মধ্যে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। এসব ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমরা যখন সংলাপে যাই সেখানে দীর্ঘ আলোচনা পরে তিনি বলেছিলেন তফসিল ঘোষণার পরে আর কোনো রাজনৈতিক গ্রেপ্তার হবে না। একটার পর একটা গ্রেপ্তার এমনকি প্রার্থীরাও গ্রেপ্তার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, এরসঙ্গে নিম্ন আদালতগুলো কলাবোরেট করছে। এখন আমাদের ১৫ জন প্রার্থী কারাগারে। তাদের মধ্যে কালকে একজন কোনো রকমে আইনজীবীদের সহায়তা নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন। আমাদের এখন কারাগারে আছেন তার মধ্যে মো. আবদুল হামিদ, মো. আবু সাঈদ চাঁদ, রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা, মনোয়ার হোসেন, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আবদুল খালেক, গাজী নজরুল ইসলাম, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, এসএম জিলানি, মনিরুল হক চৌধুরী, ডা. শাহাদত হোসেন, আনম শামসুল ইসলাম, এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ। ইতিমধ্যে ৭ জনের প্রার্থিতা বাতিল। আরো ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ঝুলছে। সুতরাং বুঝতে পারছেন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঘোষণা করা হয়েছিলো এবার সেটা পারিনি। এখন ভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে আজকে তারা (সরকার) একতরফা নির্বাচন করার পায়তারা করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।