Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোন্দলে জর্জরিত সিলেট আ.লীগ

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আবারও শেখ হাসিনার সরকার দেখতে চায় সিলেট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু সংসদে পুনরায় দেখতে চায় না দল মনোনীত বেশিরভাগ এমপি প্রার্থীকে। এই সব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে পাহাড়সম অভিযোগ দলীয় হাইকমান্ডে উত্থাপন করে মনোনয়ন বিরোধীতায় সক্রিয় ছিলেন বঞ্চনার শিকার নেতাকর্মীরা। নিজস্ব সুবিধাভোগী বলয় নিয়ন্ত্রণ, ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবজ্ঞা, বিএনপি-জামায়াত শিবির নেতাকর্মীদের লালন-তোষণ, আধিপত্যবাদী মানসিকতা, অহংকারী আচরণ, স্থানীয় উন্নয়ন বিমুখতা- বৈষম্য, প্রকল্পের নামে লুটপাট, স্থানীয় নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীদের অসহযোগিতা সহ নানা ধরনের অনিয়ম দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে নিয়ে এমপিদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন, বক্তব্য, বিবৃতি, মিছিল মিটিং ও মানব বন্ধন করেছে খোদ দলের নেতাকর্মীরা। এতে করে এমপিরা নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের সাথে দা-কুমড়া সর্ম্পক গড়ে উঠে। একাধিক আসনে এমপিরা সুবিধাভোগী অরাজনৈতিক বা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বা স্থানীয় সম্পদ উৎস গুলোতে প্রভাব বিস্তারে সুযোগ দেননি বিগত জোট সরকারের আমলের কারা নির্যাতিত দলীয় নেতাকর্মীদের। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতা বা আনুকূল্যের বদলে বঞ্চনা-তিরস্কার জুটেছে তাদের কপালে। এছাড়া আপদে-বিপদে, সুযোগ, সেবা বা অধিকার আদায় করতে যেয়ে স্থানীয় প্রশাসনিক স্তরে এমপিদের বিরোধীতার মুখে পড়েছেন তারা। এতে করে দলীয় মাঠ পর্যায়ের পরিশ্রমি নেতাকর্মীদের সাথে দুরত্ব গড়ে উঠে এমপিদের। সরকার দলের লোক হয়েও স্থানীয় ভাবে বিরোধী দলের লোকদের মতো সর্তকভাবে চলতে হয়েছে নেতাকর্মীদের। স্থানীয় ইউনিয়ন, পৌরসভা, মেয়র পদের নির্বাচনগুলোতে অংশ নিয়েছেন দলীয় প্রতীক নিয়ে দলের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা। সাধারণ মানুষ ধারণা করেছিল সরকারে প্রভাব ও স্থানীয় এমপিদের সহযোগিতায় নির্বাচনে বিজয়ে মুকুট পড়বেন তারা। বাস্তবে দেখা গেছে, এমপিরা কথিত নিরপেক্ষতার নামে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ভরাডুবিতে ভূমিকা রেখেছেন। তারা দলের মধ্যে বিকল্প প্রার্থী নিয়ে মনোনয়ন টার্গেট করে তোড়জোড় চালায়। মাঠ চষে বেড়ায় নতুন মুখের প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়নের প্রত্যাশায়। দলের কেন্দ্রিয় কর্মসূচীতে তারা শো-ডাউন করে নিজেদের শক্তিমত্তা দেখায়। কেন্দ্রিয় নেতারা সিলেটে আগমন করলে, সুযোগে তুলে ধরতেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্থানীয় এমপিদের নানামুখি অপকর্ম সহ দল বিরোধী কর্মকান্ড। নেতারা গুরুত্ব সহকারে কান ভরে অভিযোগ শুনলেও এমপিদের সাথে দুরত্ব গোছাতে কোন পদক্ষেপ নেননি। বঞ্চিতদের পাশে ছায়া হয়ে, সরব রেখেছেন নেতাকর্মীদের। এর মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগে বিভক্তি বিভাজন সুস্পষ্ট হয়ে উঠে সর্ব-মহলে। এমপিদের বদলে নতুন মুখ দলীয় এমপি প্রার্থীর মনোনয়ন পাচ্ছেন সেই আওয়াজ দৃড় হয়ে উঠে। এমপি বলয়ের মধ্যে উদ্বেগ-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায়, নতুন মুখের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে গোপন যোগাযোগ গড়ে তুলতে মরিয়া হয়ে উঠেন। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত মনোনয়ন দৌড় শুরু হয় নির্বাচন ঘিরে। মনোনয়ন প্রত্যাশি নতুন মুখের সমর্থকরা আশাবাদি হয়ে উঠেন, আ‘লীগের নীতি নির্ধারকদের মনোনয়ন চুড়ান্তের গ্রহনযোগ্য শর্ত প্রকাশের দৃড়তায়। খোদ দলের সভানেত্রী একাধিক বার বলেছেন, জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মনোনয়নে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। দলের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় বাস্তবে দেখেছেন, তাদের এমপিরা সাধারন মানুষের নিকট তো দুরের কথা দলের মধ্যেই বির্তকিত ও জনপ্রিয়তার কোন বিবেচনায় তারা উর্ত্তীণ হওয়া বলা বাহুল্য। অনেক স্থানে মনোনয়ন বাতিলের দাবীতে বিক্ষোভ ফেঁটে পড়ে এমপি বিরোধী নেতাকর্মীরা। কিন্তু তাদের বিক্ষোভ বা বিরোধীতার কোন মূল্যায়ন করেনি দলের নীতি নির্ধারক মহলও। এই সব এমপিদের বিজয় মানেই নতুন করে আবারও নিজ নিজ এলাকায় পরাজয় ঘটবে তাদের ও দলের সাংগঠনিক ভিত্তির। নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এই সব এমপিরা পুনরায় জয়ী হলে, দল ও নেতাকর্মীদের প্রতি কোন দরদ-ই দেখাবে না তারা। বরং দলের ত্যাগি নেতা-কর্মী সহ মনোনয়নে নতুন মুখের দাবীদার, সমর্থকদের উপর প্রতিহিংসা চরিচার্থ করবেন এমপিরা। সেকারনে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, নিরাপত্তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় তারা।



 

Show all comments
  • Md Iqbal Hossain ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:২২ এএম says : 0
    সমাজের যত অভদ্র, বেয়াদব, গুন্ডা বদমাইশ আছে সব-ই তো আওয়ামীলীগে। কুত্তায় কুত্তায় কামড়া কামড়ি করলে কে পারে তাদের থামাতে?
    Total Reply(0) Reply
  • Faruq Ahammed ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:২২ এএম says : 0
    এইটা শুরু হইছে বিগত ইউনিয়ন ইলেকশন এর পর। কারন আওয়ামী লীগ টাকার বিনিময়ে হাইব্রিড নেতাদের নমিনেশন দিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • নীল আকাশ নিলাদ্রী ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:২৩ এএম says : 0
    বিশ্বে মনে হয় এটাই প্রথম কোনো দল, যে দলের নিজের লোকেরা ক্ষমতা আর টাকার লোভে নিজের দলের লোক কে খুন করতে পারে,যারা নিজেদের কাছে নিজেরা নিরাপদ না। তাদের কাছে অন্যদলের মানুষ বা সাধারণ মানুষ কতো টা নিরাপদ??
    Total Reply(0) Reply
  • Raian Amin ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:২৩ এএম says : 0
    হানাহানির মূল কারন নব্য আওয়ামীলীগরা,যারা মৌসুমী পাখি হিসেবে পরিচিত, এদের কুনু দল নাই,যখন যে ক্ষমতায় থাকে তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।আর অতি তোষামোদকারী নেতারা এদের কাছে টেনে নেয়,ফলে দলের নিরীহ নেতাকর্মীরা অত্যাচারিত হয়।এভাবে চলছে বর্তমান অবস্থা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Abir ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:২৪ এএম says : 0
    উন্নয়ন সব ঢাকা পড়ে যাচ্ছ, শুধু ছাত্রলীগের কারনে। আওয়ামী লীগ এর জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে, ছাত্রলীগের কার্যকলাপে।
    Total Reply(0) Reply
  • Anik Chandra Barman ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:২৫ এএম says : 0
    পৃথিবীতে খারাপ লোকেরা এভাবেই হানাহানি করে মরবে । এদের জন্য খরাপ কিটপতঙ্গ আরো বৃদ্ধি পাবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ