Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রী একটা কথাও রাখেননি

গুলশান কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সংলাপের সময় প্রধানমন্ত্রী যে কথা দিয়েছিলেন তার একটিও তিনি রাখেননি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংলাপে সকলের সামনে কথা দিয়েছিলেন যে তফসিল ঘোষণার পর থেকে আর গ্রেপ্তার হবে না। একটা কথাও তার সরকার রাখেনি বা তিনি রাখতে দেননি। গ্রেপ্তার চলছেই। আমাদের এমপি প্রার্থী ১৪ জন কারাগারে। আমাদের প্রতিদিন দুই‘শ থেকে তিন‘শ গ্রেপ্তার হচ্ছে। হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছে। জামিন নিয়ে বেরুবে হাইকোর্টের গেইটে আবার গ্রেপ্তার করেছে আবার নতুন মামলা দিয়ে জেলে ঢুকাচ্ছে। অত্যাচার-নির্যাতনের শেষ নেই। এখন নতুন করে শুরু হয়েছে আমাদের প্রার্থিতা বাতিল। সেটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে জানি না। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পেশাজীবীদের সাথে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনকে ঠুটো জগন্নাথ অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, কাদের সিদ্দিকীসহ আমরা সেখানে গেছি। আড়াই ঘণ্টা কথা বলেছি। তারা চুপ করে থাকেন কোনো উত্তরই দেন না। মনে হয় যে, অসহায়- এই ধরনের মনে হয়। যাই হোক তারা কিছু করতে পারেননি। তাদের ক্ষমতা আছে বলে মনে হয় না। এর মধ্যেই আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, এর মধ্যেই আমাদের টিকে থাকার জন্য লড়াই করতে হবে আন্দোলন করতে হবে।
আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দেউলিয়া হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাজনীতির ব্যাপারে তাদের কোনো চিন্তা নাই, জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপরে তাদের কোনো চিন্তা নাই। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা সব চেষ্টা করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একাদশ নির্বাচন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে আমরা কী গণতন্ত্রে থাকবো না পুরোপুরিভাবে একনায়কতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্রের মধ্যে চলে যাবো। আমরা কী আমাদের স্বাধীনতার যে চেতনা ছিলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা সেটাকে কী আমরা রক্ষা করতে পারবো নাকী স্বৈরতন্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় চলে যাবো। আমাদের বাক স্বাধীনতা, আমাদের সংগঠনের যে স্বাধীনতা এবং সংবিধানের যে মূল বিষয়গুলো আছে সেগুলোকে রাখতে পারবো কী পারবো না। এই নির্বাচনকে ইতোমধ্যে সরকার প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছে। তারা নানা ষড়যন্ত্র করে করছে।
জনগণকে জাগিয়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, মানুষকে জাগিয়ে তোলা। এই রাষ্ট্র জনগণের, প্রতিরোধ তাদেরকেই করতে হবে। এই ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে ব্যর্থ করতে হবে এই জনগণকে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অতন্দ্র প্রহরী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে নির্দেশ সেই নির্দেশ অনুয়ায়ী লড়াই-সংগ্রাম করতে থাকি শেষ পর্যন্ত। মানুষের চোখের যে ভাষা আমরা দেখেছি, মানুষের মধ্যে যে আকুতি আমরা দেখেছি তাতে এই নির্বাচনে অবশ্যই আমরা জয়ী হবো ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, আপনার যদি দেখেন নির্যাতন-নিপীড়ন-গ্রেপ্তারের ঘটনা। কল্পনা করতে পারবেন না যে, আমরা এখনো টিকে আছি কী করে মাঠে। আমরা টিকে আছি শুধু একটি কারণে সেটা হচ্ছে মানুষের সমর্থন। যেখানেই আমরা গেছি আমাদের জন্য মানুষ বেরিয়ে আসছে। বুধবার আমরা কুমিল্লা গিয়েছিলাম যে আসনে (কুমিল্লা-১০) বক্তব্য রেখেছি সেখানের প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী জেলে। আমাদের সেখানে বিকল্প প্রার্থী আবদুল গফুর ভুঁইয়া ও মোবাশ্বের আলী ভুঁইয়া সাহেব তারাও জেলে। তারপরেও লক্ষ্য মানুষ সভায়। চান্দিনায় গেছি, বগুড়ায় গেছি সেখানে মানুষের ঢল দেখেছি। জনগণের এই শক্তির উপর ভিত্তি করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অপকর্মের আগাম ঘোষণা মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভূয়া ব্যালট পেপার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সরকারের আরেকটি অপকর্মের আগাম ঘোষণা। আপনারা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রায় খেয়াল করবেন যেটা উনি করবেন সেটা আগে বলে দেন। চোরাই ব্যালট ছাপানো। ব্যালট তো ছাপাবেন আপনারা। কারণ ব্যালট ছাপানোর অধিকার আপনাদের। আর ছাপানো হয়েও গেছে। আমরা আসল ব্যালেট দিয়ে ভোট দিতে চাই। সেই ব্যালট তো নিতে দিচ্ছেন না। এই কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করে আরেকটা অপকর্ম করবার যে একটা আগাম ঘোষণা দিয়েছেন সেজন্য আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) ধন্যবাদ।
এই মতবিনিময় সভায় পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে ছিলেন রুহুল আমিন গাজী, শওকত মাহমুদ, মাহফুজুল্লাহ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, প্রফেসর একেএম আজিজুল হক, প্রফেসর সদরুল আমিন, প্রফেসর আ ফ ম ই্উসুফ হায়দার, প্রফেসর তাজমেরী ইসলাম, প্রফেসর বোরহান উদ্দিন, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়াসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Engr Amirul Islam ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৯:১৩ এএম says : 0
    She is by born... so it most unlikely she will keep words
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ