Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনায় সুষ্ঠু পরিবেশ চান ভোটাররা

আবু হেনা মুক্তি : | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ভোটের বাদ্য বাজছে সর্বত্র। নির্বাচনী উত্তাপ শীতকে উপেক্ষা করে ছড়িয়ে পড়েছে খুলনাঞ্চল জুড়ে। খুলনা শহর থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বইছে নির্বাচনী হাওয়া। শীতের আমেজে শীতার্ত বাতাসে প্রকম্পিত হচ্ছে স্লোগান। খুলনাঞ্চলে দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নেমেছেন প্রচারে।
নির্বাচন জমে উঠলেও হামলা এবং অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে দুশ্চিন্তায় পড়েছে সাধারণ ভোটাররা। খুলনাঞ্চলে ভোট কেন্দ্রে নির্বিঘ্নে আদৌ ভোটাররা ভোট দিতে যেতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছে। সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে খুলনার একটি হোটেলে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি টাউন হল সভার আয়োজন করা হয়। সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র খুলনার মনোনীত প্রার্থীদের সাথে খুলনার স্থানীয় নাগরিকদের দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনার জন্য এই সংলাপ আয়োজন করা হয়েছিল। আয়োজনে অংশ নেন খুলনার প্রধান দুইটি দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, যুব প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকগণসহ ভোটারদের একটি অংশ।
অনুষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ও সহনশীল রাজনীতি বিষয়ে ভোটারদের প্রত্যাশা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে তুলে ধরা হয়। রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে খুলনা জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থীবৃন্দ স্থানীয় ইস্যুতে তাদের অতীত সাফল্য ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তারা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ও সহাবস্থানে তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে দুই প্রার্থী মঞ্চে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বপক্ষে শপথ গ্রহণ করেন।
অপরদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ চান খুলনার রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতারা ও আমজনতা। নির্বাচনে অনিয়ম, কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির মতো কোন পরিবেশ দেখতে চায় না কোন ছাত্রনেতারাসহ আমজনতা। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল বিতর্ক উর্ধ্বে রেখে ছাত্র সংগঠনগুলো ও সাধারণ মানুষ কেমন পরিবেশ চায় ও তাদের চাওয়া কী-এ নিয়ে খুলনার কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের নেতা ও কিছু আমজনতার সঙ্গে কথা বলা হয়।
ছাত্রলীগের খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল বলেন, ছাত্রলীগ কখনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বিশ্বাসী নয়। আমরাও চাই সকলের অংশগ্রহণে একটি সুন্দর নির্বাচন। গত নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় অনেক স্থানে অনেকে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে। এবার সকল দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য ভাল দিক। ভোটে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সবার সহযোগিতায় ভোট কেন্দ্র পাহারা দেবো। কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করতে আসে তাহলে তাদের প্রতিহত করবো।
খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কতটা বাস্তবায়িত এটা গত সিটি নির্বাচন এবং বর্তমান সময়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা এবং নির্যাতনের ছবি দেখলেই সেটা স্পষ্ট। আমরা ভোট দেয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। যেখানে সাধারণ জনগণ তাদের স্বাধীন মতামত ভোট প্রদানের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ভোট কেন্দ্রে যদি কোন কারচুপি হয় এবং প্রশাসন নির্বিকার হয়ে বসে থাকে তাহলে নাগরিকদের অধিকার আদায়ে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির ঐক্য হয়ে তাদের প্রতিহত করবে।
অধ্যক্ষ শেখ আব্দুস সামাদ বলেন, খুলনা নগরীর উন্নয়নে যিনি আন্তরিক তাকেই সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই। হয়রানি ছাড়া মানুষ উপকৃত হবে- এমন মানুষকেই বেছে নিতে হবে। অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ উল্লেখ করেন, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে চাই।
খুলনা পাবলিক কলেজের ছাত্র মো: সজিব বলেন, জনবান্ধব ব্যক্তিকেই সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই। যিনি মানুষের সুখ-দুঃখে সঙ্গে থাকবেন এবং জনদাবিকে প্রাধান্য দেবেন- এমন কেউ নির্বাচিত হলে মানুষ উপকৃত হবে। তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি খুলনার সাধারণ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তবে, এবারের নির্বাচনে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটে অংশ নেবেন। সে ক্ষেত্রে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ ও ভোটারদের নিরাপত্তার দাবি জানান তিনি।
অধ্যক্ষ বিধান চন্দ্র রায় মতামত দিয়েছেন, মানুষের সার্বিক কল্যাণে যিনি নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন- তেমন ব্যক্তিকেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা প্রয়োজন। নির্বাচিত প্রতিনিধি মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকবেন। অ্যাডভোকেট রকিবা খান রুবার মতে, খুলনার জন্য যিনি মঙ্গলজনক কাজ করবেন তাকেই সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ