পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতিকারহীন অভিযোগের ফাইল ভারী হচ্ছে
নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাজশাহী অঞ্চলে উত্তাপ ও উত্তেজনা দুইই বাড়ছে। নির্বাচনী অফিস পোড়ানো, পোষ্টার কেটে পুড়িয়ে ফেলা, ব্যানার, ফেষ্টুন তছনছ, প্রচার কর্মীর মটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া, প্রচারণার মাইক ভেঙ্গে পুকুরে ফেলে দেয়া ও হত্যার হুমকি।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দাবি করে ওইসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো গ্রেফতার হতে হচ্ছে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের। এমনকি বিএনপির প্রার্থীকে জানাযার নামাজে অংশ নিতে বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থীর গাড়ির চাবি কেড়ে নেয়া হয়েছে। হুমকি ধামকি মারধর নাজেহাল চলছেই। এসব ব্যাপারে প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট রিটানিং অফিসারের কাছে অভিযোগের পর অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। তারপরও অভিযোগপত্র দিচ্ছেন।
রিটানিং অফিসাররা বলছেন অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু কার্যত এখন অবধি কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে গায়েবি পত্রিকা ছাপিয়ে বিএনপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিষেদাগার ও নেতিবাচক বিষয় নিয়ে মিথ্যেচার করা হচ্ছে।
অন্যদিকে সরকারি দলের পক্ষে গুনগান, সরকারের উন্নয়ন ইত্যাদি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিনামূল্যে বিতরন করা হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পরও তা বন্ধ করা যায়নি। এনিয়ে বিব্রত প্রার্থীরা। বিভ্রান্ত ভোটাররা। তবে সচেতন ভোটাররা এটাকে নোংরামী হিসাবে দেখছেন। ক্ষমতার সুবাদে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের প্রার্থীরা বেশ দাপুটে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বত্র তাদের ব্যানার ফেষ্টুনের প্রাধান্য। বাধা বিঘœহীন ভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্মীরাও রয়েছে বেশ মুডে।
বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা চরম প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে নির্বাচনের মাঠে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের প্রতিপক্ষ ক্ষমতাধর শক্তি। সবকিছু তাদের অনুকূলে। বিএনপি ভয়কে জয় করে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। পাঁচ বছর হামলা মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের সাহসী করছেন প্রচারণার মাধ্যমে। হামলা নির্যাতন সহ্য করেও মাঠে থাকার কথা বলছেন।
প্রতিপক্ষের পাতা ফাঁদে যেন পা না দেয়া হয় সে জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। সামনে আরো বড় ঝড় আসতে পারে তার জন্য প্রস্তুত থাকার কথা বলছেন। কোনভাবেই কেউ নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে যাবেন না এমন অভয় দেয়া হচ্ছে। বিএনপির জন্য এটাই ঘুরে দাঁড়াবার শেষ সুযোগ। মাঠে নেতাকর্মীদের দেখে চুপসে যাওয়া সমর্থকরা সক্রিয় হচ্ছেন। আলাপ আলোচনায় চায়ের কাপে ঝড় তুলছেন।
রাজশাহী সদর পবা-মোহনপুর, বাগমারা, বাঘা, চারঘাট, দুর্গাপুর, পুঠিয়ায় বিভিন্নভাবে বাধা বিঘœ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিশেষ করে বাঘা-চারঘাটে বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রচার প্রচারণায় সাংঘাতিক বিঘœ ঘটাচ্ছে। প্রার্থী জেলে থাকলেও তার পরিবারের লোকজনকেও প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে।
সবচেয়ে বেকায়দায় আছেন নাটোরের বিএনপির প্রার্থী নেতাকর্মী সমর্থকরা। পুরো মাঠ দাপিয়ে চলেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিএনপি প্রার্থীরা চরম বাধা বিঘেœর সম্মুখীন হচ্ছেন। বিএনপির সাবেক মন্ত্রী সদর আসনের প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর মনোনয়নপত্র বাতিল ও গ্রেফতারে বেশ খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে নাটোর বিএনপি। তার স্থলে নির্বাচন করছেন স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবি। তিনি প্রচারণার শুরুতেই হামলার শিকার হন।
সাবিনা অভিযোগ করে বলেন, তাকে পদে পদে বাধা দেয়া হচ্ছে। প্রচারকর্মীদের হাতুড়ি পেটা করে গুরুতর আহত করা হয়। রেলস্টেশন এলাকায় প্রচারণা চালাতে গেলে হামলার শিকার হন। পোষ্টার লাগাতে বাধা দেয়া হচ্ছে। অভিযোগের তীর বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের শফিকুল ইসলাম শিমুলের দিকে। সাংবাদিক সম্মেলনে সাবিনা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তাকে নৌকার লোকজন গুলি করে হত্যা করবে। নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে রিটানিং অফিসার ও পুলিশের নিকট আবেদন করেছেন। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এতে বেপারোয়া হয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা চালানো অব্যহত রেখেছে।
নাটোর চার আসনের প্রার্থী আব্দুল আজিজ বড়াই গ্রামের জোনাইল ইউনিয়নের চামটা গ্রামে এক জানাযায় অংশ নিতে গেলে তাকে আওয়ামী লীগের ১৫/২০ কর্মী মোটরসাইকেলে এসে বাধা দেয়। তাকে বহনকারী মাইক্রোবাসের চাবি কেড়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে চাবি নিয়ে ফেরত দেয়।
নাটোর-৩ সিংড়ায় ধানের শীষের প্রার্থী দাউদার মাহমুদ নির্বাচিনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন। শেরকোল ও পুটিমারী বাজারে তার কর্মীদের হাতুড়ি পেটা করা হয়। এতসব প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে খানিকটা ভাল অবস্থায় রয়েছে নাটোর-১ আসনটি। নওগার রানীনগর পরইল ইউনিয়ন পরিষদের বাগারবাড়ি বাজারে বিএনপির নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। এমন সব হামলা নির্যাতন জখম অব্যাহত রয়েছে। দিন যত যাচ্ছে এর মাত্রা তত বাড়ছে।
ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট এলাকার আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন তারা কোন রকম হামলা ভাঙুর মারধর করছেন না। এগুলো বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ। আমাদের উপর দোষ চাপিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাবার পথ খুঁজছে। পাবনার পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনটিতে মোটামুটিভাবে প্রচার প্রচারণা বিএনপি চালাতে পারলেও ১ ও ২ আসনে বিভিন্নভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে রিটানিং অফিসারের নিকট অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি।
পাবনা-১ আসনে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করছেন গণফোরাম নেতা অধ্যাপক আবু সাঈদ। তাকে বিভিন্নভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। পাবনা-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী রয়েছেন সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিব। এ দুই আসনে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রচারণায় নামলে আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের বাধা দিচ্ছে। পাবনা- রিটানিং অফিসার জানান, অভিযোগ পেয়ে পুলিশের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি ভাল রয়েছে।
নাটোর, পাবনা ও রাজশাহীর নির্বাচনী এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের সাথে এসব বিষয় নিয়ে আলাপকালে তাদের মাঝে ভোট নিয়ে যেমন উৎসাহ দেখা যায় আবার শঙ্কাও কম নয়। গত সোমবার পর্যন্ত যে অবস্থা ছিল তা অব্যাহত থাকলেই ভোটদানে মানুষের ঢল নামবে। কারো কারো সতর্ক মন্তব্য ভোটের অনুকূল আর প্রতিকূল হাওয়া দেখে ভোটের মাঠ গরম আর নরম হবে। যা বোঝা যাবে ভোটের সপ্তাহ খানেক আগে। আর তখনই বোঝা যাবে এক পক্ষের ক্ষমতা ধরে রাখা আর অন্যদের ফিরে পাওয়ার লড়াই। সর্বত্রই সেনাবাহিনী মোতায়েনে স্বস্তি দেখছেন। অন্যদের নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সুষ্ঠুভাবে ভোট হবে কিনা এনিয়ে সংশয় রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।