পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে রাখা সোনার কোনও হেরফের হয়নি। শুল্ক গোয়েন্দাদের প্রতিবেদনে সোনার বিশুদ্ধতার হার নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সেটা সঠিক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি গত ২৮ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার কাছে পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
প্রতিবেদনে শুল্ক গোয়েন্দাদের উত্থাপিত আপত্তিগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে, এমনটা গণ্য করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে শুল্ক গোয়েন্দাদের পরিদর্শন প্রতিবেদনের প্রতিটি আপত্তি খণ্ডন করে বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভল্টের সোনা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত কমিটি তাদের প্রতিবেদনটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে জমা দিয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখা সোনার হিসাব ও ওজনে গরমিল নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দাদের তৈরি প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ঘটনাটি তদন্তে ২২ জুলাই ছয় সদস্যের ‘উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন’ কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এএনএম আবুল কাশেমকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি সোনার চাকতি ও রিঙের বিশুদ্ধতা লিপিবদ্ধ করার সময় ভুলবশত ৪০ শতাংশের বদলে ৮০ শতাংশ লেখায় জটিলতার উদ্ভব হয়। সোনার মান নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দাদের উত্থাপিত আপত্তির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রক্রিয়ার বাইরে ভিন্ন প্রক্রিয়ায় মান নির্ধারণের কারণে তারতম্য হয়েছে। ওজনে ভিন্নতার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় না নিয়ে ওজন করায় ওজনে তারতম্য হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চাকতি ও রিংটির (আংটি) গায়ে লাগানো মাস্কিং টেপের ওপর কাস্টম হাউসের প্রতিনিধির লাল কালিতে হাতে লেখা ভিজিআর নম্বর অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। এই কাগজ অক্ষত অবস্থায় উঠিয়ে নতুন তৈরি আরেকটি চাকতি ও আংটিতে লাগানোর আলামত পাওয়া যায়নি। বিশুদ্ধতার মান তারতম্যের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, দুটি ভিন্ন প্রক্রিয়ায় স্বর্ণালংকারের মান নির্ধারিত হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ড করা মানের সঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা পরিদর্শন দলের যাচাই করা মানের পার্থক্য দেখা গেছে। এর যৌক্তিকতায় বলা হয়, শুল্ক গোয়েন্দা দল বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনার বিশুদ্ধতার মান নির্ধারণের প্রক্রিয়া বিবেচনায় নেয়নি এবং তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশুদ্ধতার মান নির্ধারণ প্রক্রিয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলে সোনার মানে তারতম্যের কারণ স্পষ্ট হতো।
ওজনে তারতম্যের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওজন পরিমাপক মেশিনের অবস্থানগত ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ (ওজন যন্ত্রের কাছেই বড় আকারের কয়েন বক্স ওঠানো-নামানো, প্যাডস্ট্যাল ফ্যান চালু থাকায় সৃষ্ট কম্পন, ওজন মেশিনটি স্থির হতে সময় না দেওয়া), ওজনের ক্ষেত্রে কিছুটা রক্ষণশীল নীতি অবলম্বন, অনেক ক্ষেত্রে রাউন্ড ফিগার করা এবং জমা গ্রহণকালে ওজন যন্ত্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার ভিত্তিতে স্বর্ণালংকার একত্রে ওজন করা হয়।
এক্ষেত্রে শুল্ক গোয়েন্দা পরিদর্শনের সময় আইটেমভিত্তিক স্বর্ণালংকার (যেমন- নাকফুল, কানের দুল, আংটি, গলার চেইন আলাদা করে) পৃথকভাবে ওজন করেছে। এ কারণে প্রতিটি আইটেমের ওজনে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পার্থক্য একীভূতভাবে ৪৪৯ দশমিক ৭০ গ্রাম পার্থক্য হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ডকৃত ওজনের সঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা পরিদর্শন দলের পরিমাপ করা ওজনে যেটুকু পার্থক্য হয়েছে, তা বিএসটিআই স্বীকৃত পার্থক্য বিবেচনায় গ্রহণযোগ্য। এছাড়া, নিলামের আগে স্বর্ণালংকার পুনরায় ওজন করা হয়, তাই এ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।
এনবি আরের চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত সোনা পরীক্ষকের যাচাই অনুযায়ী জমাদানের সময় চাকতি ও রিংটির সোনার বিশুদ্ধতার মান ৪০ শতাংশ হলেও ওই তারিখে অন্য সব স্বর্ণালংকারের মান ছিল ৮০ শতাংশ। অন্য সব স্বর্ণালংকারের বিশুদ্ধতার মান ৮০ শতাংশ হওয়ায় অসাবধানতাবশত চাকতি ও রিংটির মানও একই ধারাবাহিকতায় ৪০ শতাংশের স্থলে ৮০ শতাংশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।