পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাগনভূঁইয়া ও সোনাগাজী উপজেলা নিয়ে জাতীয় সংসদের আসনÑ২৬৭ ফেনী-৩ নির্বাচনী এলাকা। এ আসনে ২ পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯২ হাজার ৯শ’ ৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩শ’ ৭৭ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ৫শ’ ৭৯ জন। এ আসনে প্রায় দেড় ডজন নেতা মনোনয়ন লাভের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত মহাজোট প্রার্থী হিসেবে এরশাদের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দীন চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এর রেশ ধরে যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল বাশার তার ছেলে ইশতিয়াক আহমেদ সৈকতকে নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন লে.জে. মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। স্থানীয় আ.লীগ নেতাকর্মীরা তার পক্ষে কাজ করলেও এ আসনে তিনি অপরিচিত মুখ। এ আসনের দুই উপজেলায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তাকে বিজয়ী করতে এ আসনের দুইটি উপজেলার আ.লীগের সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ আসনে জাপার তেমন কোন সমর্থক বা নেতাকর্মী না থাকলেও মহাজোট প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় আ.লীগের সমর্থন পাচ্ছেন তিনি। এতে তার নির্বাচনী প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
এদিকে আ.লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত আবুল বাশার আপেল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার ছেলে ইসতিয়াক আহম্মেদ সৈকতও নোঙ্গর মার্কা নিয়ে এ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। বাশারের পক্ষে আ.লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এছাড়া সাধারণ ভোটারদের মাঝেও তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। বাশার দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে এ অঞ্চলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন ছায়ার মতো। দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে ভোটারদের অনুরোধে তিনি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হন। তার পক্ষে স্থানীয় আ.লীগের উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের সমর্থন না থাকলেও তৃণমূল নেতাকর্মীরা তার পক্ষ নিয়েছেন।
এ আসনে বর্তমানে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর ভাই আকবর হোসেন। ফলে তার সাথে মহাজোট প্রার্থী ও আ.লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হেভিওয়েট স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবুল বাশারের তুমুল প্রতিযোগিতা হবে। কারণ মহাজোট প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে নতুন এবং আবুল বাশার এর আগে দুইবার আ.লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করেছেন। তবে এ আসনটি বিএনপির ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এ আসনে বিএনপি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন।
ফেনী-৩ আসনের বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ আসনে পুলিশের গ্রেফতারের তাÐব অব্যাহত আছে। নেতাকর্মীরা এলাকায় থাকতে পারছে না। প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় নামলে তার ওপর হামলা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রার্থী আকবর হোসেন বলেন, এ আসনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে কিছুই নেই। তিনি ১৭ ডিসেম্বর সোনাগাজীতে গণসংযোগ করে ফেরার পথে মহাজোট প্রার্থীর নেতাকর্মীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। এতে প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তিনি আরো জানান, দলের নেতাকর্মীরা তার বাড়ীতে দেখা করতে আসলে তাদেরকে পুলিশ রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তারা বাড়ীঘরে শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না। পুলিশ তাদের বাড়ীতে গিয়ে তল্লাশি করছে। নেতাকর্মীবিহীন নির্বাচনী মাঠে আমি প্রচারণায় নামলেও নেতাকর্মীরা আছে পুলিশের ধরপাকড় আতঙ্কে। নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে তার পোস্টার ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে, প্রচার মাইক নিয়ে যায় এবং সরঞ্জামাদী ভাঙচুর করে ও ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশ প্রায় ৩০-৪০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন আকবর হোসেন। পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে তিনি রাতদিন এক করে মাঠে থাকবেন বলে জানান। প্রশাসন গণগ্রেফতার বন্ধ ও নেতাকর্মীদের হয়রানি না করলে এ আসনে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন বলে নিশ্চিত করেন। তিনি নির্বাচনী মাঠে অবাধ প্রচারণার সুযোগ নিশ্চিতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও পুলিশ সুপারকে অনুলিপি প্রেরণ করেন।
ওদিকে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ভোটের মাঠে এ আসনে বিএনপিই সেরা। কারণ এর আগে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মরহুম মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ১৯৯৬ সাল থেকে টানা তিনবার বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে এখানে বলার কিছুই নেই। জনগণ ধানের শীষের মার্কাকে ভালবেসে ভোট দেবে। প্রার্থী কে হলো তা মূল বিষয় নয়। ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা ভোট কেন্দ্রে যাবে। যদি ভোট দেয়ার মতো পরিবেশ থাকে। তাদের প্রশ্ন, ভোট আদৌ হবে কি। তারা প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে আছেন।
উপরোক্ত প্রার্থীরা ছাড়াও নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, বাসদ প্রার্থী হারাধন চক্রবর্তী, বিএনএফ-এর শাহরিয়ার ইকবাল টেলিভিশন, ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মাও. আবদুর রাজ্জাক হাতপাখা মার্কা, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল মনোনিত প্রার্থী গোলাম হোসেন বাঘ মার্কা, ইসলামী ফ্রন্টের মো. মাঈন উদ্দিন চেয়ার, আনোয়ারুল কবির রিন্টু আনোয়ার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে মহাজোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচন করেছিলেন এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থী হাজী রহিম উল্লাহর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। এবার তিনি জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে কার মার্কায় নির্বাচন করছেন। হাছান মাহমুদ সিংহ ও মাঈন উদ্দিন স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন এবং তারা স্বস্ব এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।