Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দীর্ঘশ্বাস বিএনপির ফুরফুরে আ.লীগ

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

বৃহত্তর খুলনার ১৪টি আসনের ৭৮ প্রার্থীরা এখন ভোটের মাঠে। এ অঞ্চলে জৌলুসপূর্ণ প্রচারণায় অনেকটা এগিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। অপরদিকে হামলা মামলার ফাঁদে ক্ষমতাসীনদের তুলনায় পিছিয়ে আছে বিএনপি প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের চাপে ভোটের মাঠে কোণঠাসা তারা। তথাপি এ অঞ্চলে ধীরে ধীরে হলেও ঘুরে দাড়াচ্ছে বিএনপি
এদিকে ইসলামী আন্দোলন, বিএনএফ, জাকের পার্টি, গণফ্রন্ট থেকে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন ভোটের মাঠে দুর্বল তারা। কেউ কেউ বলছে তারা ভোটে আছে মাঠে নেই। একই অবস্থা জাতীয় পার্টির প্রার্থীদেরও। খুলনা মহানগরীর দুটি আসনে বাম জোটের প্রার্থীরা কিছুটা তৎপর থাকলেও অন্য আসনগুলোতে তারা অনেকটা নীরব।
আওয়ামী লীগ নানামুখী নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত। জোরেশোরেই প্রচারে নেমেছে এ দলের প্রার্থীরা। ব্যানার, ফেস্টুন আর পোস্টারের প্রচারণার বাইরেও এবার ডিজিটাল প্রচারণায় গুরুত্ব দিচ্ছে প্রার্থীরা। মোড়ে মোড়ে পোস্টার, মাইকিং ও মিছিলে উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ। দিন যত যাচ্ছে বাড়ছে প্রচারের কলেবর।
খুলনায় নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা বেশ আগে শুরু হলেও ডিজিটাল প্রচারণা একটু দেরিতে শুরু হয়েছে। ডিজিটাল প্রচারণার নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায়, রঙ্গিন প্রচ্ছদে ইন্টারনেটভিত্তিক প্রচারণা শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ, গ্রæপ, ইউটিউব, টুইটার, ওয়েবসাইট, মেসেঞ্জারের মাধ্যমে প্রচারণা চালান হচ্ছে বলে জানিয়েছে আ’লীগের এক দলীয় সূত্র।
মহাজোট সমর্থিত খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী সেখ সালাহ্উদ্দিন জুয়েল বলেন, ‘প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে আজকের তরুণ হবে, আমাদের আগামী প্রজন্ম। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন সেটা আজ বাস্তবায়িত।
অপরদিকে খুলনায় অনলাইন ভিত্তিক এ ডিজিটাল প্রচারণায় আওয়ামী লীগের ধারে কাছেও নেই ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। ক্ষমতাসীন দলের তুলনায় অনেকাংশে পিছিয়ে রয়েছে তারা। ক্ষমতাসীনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোটি মানুষের কাছে নির্বাচনী বার্তা পৌঁছে দিতে পারলেও এ ব্যাপারে তেমন এগোতে পারছেনা বিএনপি। কয়েকটি ফেসবুক পেজে ডিজিটাল প্রচারণায় ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করা হচ্ছে। তবে নির্বাচনী প্রচারের থেকেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র রক্ষার প্রচার বেশি দেখা যাচ্ছে বিএনপির ডিজিটাল প্রচারণায়।
মহানগর বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এহতেমুল হক শাওন বলেন, ‘নির্বাচনে ডিজিটাল প্রচারণা পদ্ধতি এখন বেশ জনপ্রিয় ও আধুনিক। কিন্তু আমরা যে প্রচারণা করব তাতে ব্যয়ের সাথে সঙ্গতি করে পারছি না। ক্ষুদ্র আকারে ডিজিটাল প্রচারণাও চলছে। তবে স্ব-উদ্যোগেই মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে ধানের শীষের ভোট বিপ্লবের আহŸান জানাচ্ছেন।’
এছাড়া বৃহত্তর খুলনার ১৪টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জৌলুসপূর্ণ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চলছে। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীরা প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চালাচ্ছেন গণসংযোগ।
অপরদিকে, বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ অঞ্চলে বিএনপি জামায়াতের প্রার্থীরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাচ্ছে না। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা মামলা প্রতিনিয়িত বেড়েই চলেছে। পোষ্টার ছিড়ে ফেলা ও প্রচরণায় বাঁধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রার্থীদেরকে মুভ করতে দেয়া হচ্ছে না।
এর মধ্যে খুলনা ৬ আসনের ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগর আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (ধানের শীষ) কারাবন্দি রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে দলের নেতাকর্মীরা নীরবে চালাচ্ছেন প্রচারণা। ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া জামায়াত প্রার্থীর সমর্থকদের মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাশকতা মামলায় খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ১২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর এইচ এম আবু সালেককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে হাউজিং বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে খালিশপুর থানা পুলিশ। এ খবর পেয়ে ধানের শীষ প্রতীকে খুলনা-৩ আসনের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল খালিশপুর থানায় হাজির হন এবং নেতা-কর্মীদের নিয়ে থানার সামনের অবস্থান নেন। বিনা ওয়ারেন্টে সালেককে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে এ ঘটনার নিন্দা জানান তিনি। তবে হামলা মামলা ও ভয়ভীতির মাঝেও গত ৩-৪ দিন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা মুখ খুলেছে। প্রচার প্রচারণায় রাজপথে বেরিয়ে পড়েছে। তাদের এ গণজাগরণের মিছিল প্রতিনিয়ত লম্বা হচ্ছে। মানুষের ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটতে শুরু করেছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ