Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে ইসিতে ৩ ধরনের বক্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে খোদ নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) ত্রিমুখী বক্তব্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে এ নিয়ে তৈরী হয়েছে মতপার্থক্য। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের সাথে সুর মিলিয়ে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনও তৈরী হয়নি বলে গণমাধ্যমে নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদারের মন্তব্য নিয়ে অস্বস্থিতে পড়েছেন নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটির অপরাপর কমিশনারও। নির্বাচনের পূর্বমুহুর্তে খোদ ইসি থেকেই দ্বৈতমত বেরিয়ে আসায় এটি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে।
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদারের করা এ মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, মাহবুব তালুকদার সত্য বলেননি। নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। তিনি বলেন, অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হবে। পাহাড়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোন ধরনের ঝুঁকি নেই।
গতকাল মঙ্গলবার রাঙামাটিতে একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিন পার্বত্য জেলার আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ কথা বলেন। সোমবার নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার বলেন, আমি মনে করি না নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মাহাবুব তালুকদার এসব কথা বলেন। মাহাবুব তালুকদারের এ মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি দ্বিমত পোষণ করেন। নূরুল হুদা বলেন, আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে একজন স্বাধীন মতপ্রকাশ করতেই পারে। এটা একেবারেই অসত্য কথা। দেশে এখন সুষ্ঠ নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। সবাই নিজেদের মতো প্রচারণা চালাচ্ছেন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে অসুবিধা কোথায়?। মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সমতল এলাকার মতো পাহাড়েও গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। প্রত্যক ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। পার্বত্য অঞ্চলে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো ঝুঁকি নেই। দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থায় নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সব সদস্য ও সামগ্রী আনা- নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে কমিশনারদের কেউই মুখোমুখি না হলেও গনমাধ্যমের মাধ্যমেই মাহাবুব তালুকদারের মন্তব্য হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছেন সিইসি কেএম নূরুল হুদা। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে দাবি করে বেশ কয়েকবার নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কমিশন বৈঠক বর্জন করা ওই কমিশনারের কথার সত্যতা নেই বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি। এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্ট যে কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে চায় নির্বাচন কমিশন। এজন্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা এবং ভোটের ফলাফল ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বরতদের সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সিইসি ও এক কমিশনারের মিডিয়া গুলোতে সমালোচনার ঝড় ারণ মধ্যেই গতকাল এমন নির্দেশনা দেন নির্বাচন কমিশনার মো, রফিকুল ইসলাম।
ইসি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার গনমাধ্যমের মাধ্যমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হওয়ার বিষয়টি জাতির সামনে নিয়ে আসলে বিষয়টি স্পষ্টত দ্বিধাভক্ত হয়ে যায় কমিশন। সোমবার নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ বলতে কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, আমি মোটেই মনে করি না, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। এই কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে। সিইসি বলেছেন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে আপনি কি তার বিরোধিতা করছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাব তিনি একটু ভিন্নভাবে দিয়ে বলেন, আমি কখনো তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করি না। তিনি তার কথা বলেন। আমি প্রয়োজনে আমার ভিন্নমত প্রকাশ করি। আপনারা তো সাংবাদিক। আপনারা দেশের সব খবর রাখেন, সবকিছু দেখেন। আপনারা নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, নির্বাচনে এখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কিনা, তাহলেই উত্তর পেয়ে যাবেন। সিইসির সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাসেও ভিন্নমত পোষণ করেন এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, সব দল অংশগ্রহণ করলে এটিকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটি প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কিনা এবং বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কিনা। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনো লাভ নেই।
গনমাধ্যমে মাহবুব তালুকদারের দেয়া এই মন্তব্যের জের ধরে শুরু হওয়া নানা গুঞ্জনের মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার এই মন্তব্যকে ভিত্তিহীন এবং ব্যক্তিগত মতামত বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। বিষয়টি নিয়ে নানামুখি আলোচনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে চট্টগ্রামে এক সভায় কে এম নূরুল হুদা বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের সংজ্ঞা কী? লেভেল প্লেয়িং ঠিক নেই এই কথা বারবার বলা হয় কেন? কোথায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, কিসের ফিল্ড ঠিক নেই? সিইসি বলেন, এবার রেকর্ডসংখ্যক প্রায় ৩ হাজার ৬০০ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ১ হাজার ৮৪৬ জন প্রার্থী আছেন। অর্থাৎ গড়ে প্রতিটি আসনে ছয়জন প্রার্থী। এতে প্রমাণ হয় যে, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সরকারি দল বা বিরোধী দল মিটিং-মিছিল আবার অনেক সময় শোডাউনও করছে। তাদের কি কেউ বাধা দিয়েছে? তাহলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা আসে কেন?
এদিকে গতকাল নির্বাচন ভবনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারি ও কম্পিউটার অপারেটর কর্মচারিদের এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ভোটের ফলাফল প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম।
রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী দলগুলোর শঙ্কা কাটানোর জন্যই এ সিদ্ধান্ত। ২২ ডিসেম্বর বিজিবি নামানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শঙ্কা থাকায় আগাম নামালাম। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যাতে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার না হয় সে জন্য নির্বাচনের সকল তথ্য ও ফলাফল ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিতদের সতর্ক হয়ে সঠিক তথ্য দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। কোনো ধরনের ভুল তথ্য প্রচারিত হলে তা সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে। এতে ইসির প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হওয়ারও ঝুঁকি থাকে। তাই ভোটের ফলাফল প্রকাশে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে ইসিতে ৩ ধরনের বক্তব্য
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->