পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা রয়েছে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, সেনাবাহিনী-বিজিবি মাঠে থাকলে ভোটাররা আরও বেশি নিরাপদবোধ করবেন। সব প্রার্থী সমানতালে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কোন সমস্যা দেখছি না। তিনি গতকাল (মঙ্গলবার) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।
নগরীর কাজির দেউড়ীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসারসহ বিভাগীয় পর্যায়ের ২৪ জন কর্মকর্তা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান। প্রায় দুই ঘণ্টার মতবিনিময় সভায় মাঠ পর্যায়ের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সংঘাত-সহিংসতার বিষয়ে জানতে চান সিইসি।
তবে বেশিরভাগ কর্মকর্তা তাদের এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে দাবি করেন। তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের আট জেলার ডিসি-এসপি-ইউএনও ও থানার ওসিরা সবাই উপস্থিত ছিলেন। বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকালই চট্টগ্রাম বিভাগে বিজিবি মোতায়েন হয়েছে। সেনা ও নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২২ তারিখের মধ্যে তারা নির্বাচনী এলাকায় চলে যাবে এবং যথারীতি ২৪ ডিসেম্বর দায়িত্ব পালন শুরু করবে।
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩ হাজারের বেশি প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ১৮শ’র বেশি প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এতকিছুর পরেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই কীভাবে? ভোটারদের উৎসাহ-উদ্দীপনাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালানোর জন্য প্রার্থীদের প্রতি পরামর্শ দেন তিনি। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা এবং পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের আহŸান জানান। প্রার্থীদের কোনো অভিযোগ থাকলে তা কমিশনে না গিয়ে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সিইসি বলেন, সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা রয়েছে। সেনাবাহিনী ও বিজিবি মাঠে নামলে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। সিইসি বলেন, নির্বাচনের মূল দায়িত্ব পালন করেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তাদের ভ‚মিকার ওপর নির্ভর করবে সার্বিক নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা।
ভোটাররা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিয়ে একটি নতুন সংসদ ও নতুন সরকার উপহার দিতে চায় নির্বাচন কমিশন। কমিশনের এ দায়িত্ব মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সবাইকে নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়ে বলেন, আপনার সফল হলে নির্বাচন কমিশন সফল হবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সব প্রার্থী যাতে সমানতালে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা এবং বিশ্বাস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর ভোটাররা আরও বেশি উৎসাহী হবেন। তিনি সংঘাত-সহিংসতা রোধে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, কোন ঘটনা যাতে ভোটের পরিবেশকে বিঘি্নত করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
আর কোনো সংঘাত চাই না
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আর কোনো নির্বাচনী সংঘাত-সহিংসতা কমিশন চায় না। ইতোমধ্যে সিইসি পুলিশের আইজিকে কমিশনে ডেকে এনে এ ব্যাপারে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দেন। ইসি সচিব বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে আমরা আর কোনো অভিযোগ শুনতে চাই না। এবার কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে কমিশন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। পুলিশকে যে কোনো পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সব প্রার্থীকে সমান দৃষ্টিতে দেখতে হবে। ভোটের দিন রোহিঙ্গারা যাতে ক্যাম্প থেকে বাইরে যেতে না পারে সে ব্যাপারে ক্যাম্প পুরোপুরি সিলগালা করে দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। প্রতিদিন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সার্বিক পরিস্থিতি কমিশনকে জানানোর নির্দেশনাও দেন তিনি।
বৈধ অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে
মাঠ পর্যায়ের প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা বক্তব্য দিলেও তাদের কেউ নির্বাচনী এলাকায় কোন সংঘাত-সহিংসতা নেই বলে দাবি করেন। নোয়াখালীর ডিসি তন্ময় দাশের কাছে জানতে চাওয়া হয় সেখানকার পরিস্থিতি। তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে বেশিরভাগ ঘটনা বানানো। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়ে অভিযোগ করছেন। কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, সেখানে প্রায় প্রতিটি আসনে এক দলের ও জোটের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। এ কারণে কিছু ঘটনা ঘটছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে বৈধ অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে জানিয়ে অবিলম্বে বৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশনা জারির অনুরোধ করেন। জবাবে ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ জানান, আগামী ২১ তারিখের মধ্যে প্রার্থী এবং সরকারি কর্মকর্তারা ছাড়া সব বৈধ অস্ত্র নিকটবর্তী থানা অথবা ট্রেজারিতে জমা দেয়ার নির্দেশনা জারি করা হবে। সিএমপির কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। কিন্তু আমরা পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করছি। বাদী আর বিবাদী ছাড়া আমরা কাউকে চিনি না। ফেনী সদর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার এলাকায় কোনো সমস্যা নেই। সব প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
রেডজোনে পাঁচ জেলা
চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুর জেলাকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করে নির্বাচন কমিশন এসব জেলায় সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান ইসি সচিব হেলাল উদ্দিন। তিনি এ পাঁচ জেলার প্রার্থীদের যে কোন অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক সমাধানের নির্দেশ দেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান চট্টগ্রামের স›দ্বীপ, ফটিকছড়ি এবং কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সেন্টমার্টিনে বিশেষ নিরাপত্তার দাবি জানান। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আলী হোসেন মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সেন্টমার্টিনে নিরাপত্তার জন্য ভোটের দিন হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেন। সিইসি তাৎক্ষণিক তার এ প্রস্তাব সমর্থন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।