Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঐক্যবদ্ধ জনতার বিজয় অনিবার্য

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা অভিযোগ করে বলেছেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হোক সরকার তা চায় না। এ জন্য সারাদেশে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করা হচ্ছে। নির্বাচনের প্রার্থীদের গুলি করা হচ্ছে। জনগণ এর প্রতিরোধ গড়ে তুলে গৃহযুদ্ধ বেধে যেতে পারে। তবে এমন পরিস্থিতির তৈরী হোক আমরা চাই না। তাই সরকারকে বলবো এখনো সময় আছে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উপর হামলা মামলা বন্ধ করুন। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী করুন।
গতকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পল্টনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মোস্তফা মহসীন মন্টু, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, আসন্ন নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু না হয় সে ব্যাপারে যথেষ্ট আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ ক্ষমতাসীনরা জনমত বুঝে গেছে। আর সে কারণে জোর করে ক্ষমতায় থাকার সব ধরনের চেষ্টাই তারা করছে। নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয় ক্ষমতাসীনরা সে চেষ্টা করছে বলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ড. কামাল বলেন, আমাদের স্বাধীন দেশের একটি সংবিধান রয়েছে। সেখানে কিভাবে নির্বাচন হবে সে বিধান রয়েছে। দেশের মালিক জনগণ। জনগণই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করে থাকে। সেজন্য নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য খুব চেষ্টা করে যাচ্ছি। আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে মিডিয়ারও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ভোটাররা যেন স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্য বাধা সৃষ্টিকারীদের শনাক্তের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহŸান জানান তিনি।
ড. কামাল বলেন, খ্বুই দুঃখজনক যে, ভোটারদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। মিছিল মিটিংকারীদের আক্রমণ করা হচ্ছে, প্রার্থীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। গুলি করা হচ্ছে। আরও দুঃখজনক যে, এসব ঘটনায় কোনো তদন্ত হয় না, কোনো আইনানুগ ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে না। এসব তো খেয়াল খুশির ব্যাপার না। তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন নিশ্চিত করার কথা সংবিধানে বলা হয়েছে। যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, বাধা সৃষ্টি করে, আক্রমণ করে এদের ব্যাপারে সংবিধান অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও তা নেয়া হচ্ছে না। সে কর্তব্য পালনে আমরা ঘাটতি দেখছি।
ড. কামাল বলেন, শুধু বিরোধী দলের প্রার্থীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, এটা অবাক কান্ড। তাদের উপর হামলা করে আবার তাদেরই আটক করা হচ্ছে। অথচ যারা আক্রমণকারী তারা আক্রমণ করেই যাচ্ছে। এগুলো উদ্বেগের। স্বাভাবিকভাবেই আশঙ্কা হচ্ছে, আসলে ভোটের দিন কী হবে।
নেতাকর্মী ও মিডিয়ার প্রতি আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব এবং কর্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়াকে সতর্ক থাকতে হবে। জনগণের হয়ে পাহারা দিতে হবে। ভোটের দিন যেন সেরকম কিছু না ঘটে। যাতে ভোটাররা বঞ্চিত না হয়, অন্যের ভোট দেয়া ও জাল ভোট দেয়ার ঘটনা না ঘটে।
প্রার্থী, সমর্থকদের উপর আক্রমণ ও গ্রেফতারের অভিযোগ আপনাদের। এমতাবস্থায় নির্বাচন হবে কি-না বা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে কিনা? আশঙ্কা কী? জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, এটাতো অভিযোগ নয়, সত্য কথা। আমরা তো তথ্য দিচ্ছি। আশঙ্কা তো আছেই। নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে দেয়া হবে না। এটা তো আপনারা দেখতেছেন আমরা দেখতেছি। জনমত কাদের পক্ষে তারা তো তারা বুঝে গেছে। রাষ্ট্রপতির ডাক আমরা এখনো পাইনি। আশা করছি অনুমতি পাবো। অনুমতি পেলে আপনাদের জানানো হবে।’
নির্বাচনের আর ১৪ দিন। আপনারা সেভাবে মাঠে নামতেই পারেননি বলছেন। এমতাবস্থায় বাকি সময়টুকুতে আপনারা টিকে থাকতে পারবেন বলে মনে করেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, অবশ্যই টিকে থাকতে পারবো। জনমত থাকলে মাঠে টিকে না থাকার কোনো প্রশ্নই নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্যে আ স ম আবদুর রব বলেন, প্রচার শুরুর কয়েকদিনের মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উপর সারাদেশে হামলা চলছে। প্রথমে লাঠি সোটা দিয়ে হামলা হয়েছে। গতকাল থেকে প্রার্থীদের গুলি করা হচ্ছে। এখনি যদি গুলি চলে তাহলে সামনে তো কামান ট্যাংক দিয়ে আক্রমণ করা হবে। তবে আমরা ভোটের মাঠে আছি, এবং থাকবো। আমরা রোডমার্চে দেখেছি জনতার ঢল। এ জনগণ যদি আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাহলে গৃহযুদ্ধ বেধে যেতে পারে। আমরা তা চাই না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। তাই সরকারকে বলবো, আজ থেকে হামলা-মামলা, গ্রেফতার বন্ধ করুন। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী করুন। অন্যতায় যে কোন পরিস্থিতির দায় ভার সরকারকেই নিতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমরা ভোটের মাঠে আছি, থাকবো। আমাদের জন সমর্থন দেখে সরকার ভিত হয়ে জোর করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। সরাদেশে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করছে। প্রার্থীকে গুলি করে আহত করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সহজেই বোঝা যাচ্ছে সরকার চায় না ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে থাক। তবে আমরা নির্বাচনে আছি এবং থাকবো। জনগণ আমাদের সাথে আছে। জনগণ যদি প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাহলে যে পরিস্থিতির তৈরী হবে তার দায় সরকারকে নিতে হবে।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৮:৩০ এএম says : 0
    Jonotar joar BNP mukhi eaita 100% shotto kintu voy viti srishti kore jongon jate vote kendre na jai khomotashin EC polisher shohaiotai shei bebsta kortese tai apnader kase onorodh apnara shudho boktobbo na dia karjjoto bebosta nin.Noyle eai deshe fesibad eak nayoktontro protishta korar shob bebsta paka pokto ete shondeher kono obokash nai.....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ