Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রচারণায় সহিংসতার ঘটনা ভোটারদের ওপর কেমন প্রভাব ফেলছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:৩৫ পিএম

বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দু'সপ্তাহ সময় হাতে থাকতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ঘটনায় নোয়াখালী-১ আসনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন গুলিবিদ্ধ হন। শুক্রবার ঢাকায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গাড়ি বহরে এবং তারও আগে নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মিছিলের ওপর হামলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। খবর বিবিসি

কিন্তু দেশ জুড়ে এসব নির্বাচন-পূর্ব সহিংসতার প্রভাব কি ভোটারদের ওপর পড়তে পারে? এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার ওপর গুরুত্ব দেন।

কিন্তু বর্তমানের নির্বাচন পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে তিনি মনে করেন। বিবিসি বাংলাকে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, " নির্বাচনী পরিবেশ বলে একটা কথা আছে। যে পরিবেশ নির্বাচনী পূর্বকালীন সময় থেকেই ভাল থাকার কথা।"

"কিন্তু আমাদের সব নির্বাচনে তো কিছু না কিছু ঘটনা ঘটে। কিন্তু এবার এক ধরণের ত্রাসের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই যে হুমকি-ধমকি চলছে - এর প্রভাব প্রার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ওপরেও ফেলছে।"

তার বলেন, "১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যে কয়টি নির্বাচন হয়েছে এরমধ্যে এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি।"

বর্তমানেও অস্থিতিশীল পরিবেশ অব্যাহত থাকায় এই পরিস্থিতি সামাল দেয়া বা নিয়ন্ত্রণ করা নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, "এবার প্রথম থেকেই নির্বাচন পরিস্থিতি এতোটা প্রকট বলে মনে হয়েছে। সিইসিকে দেখলাম যে তিনি দু:খ প্রকাশ করে কিছু কথা বলেছেন, মর্মাহত হয়েছেন, বিব্রত হয়েছেন। তাতে মনেহচ্ছে যে পরিস্থিতি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।"

নির্বাচন কমিশন বলছে, যে তারা একটি নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যে ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার দরকার তার সবই নিচ্ছেন।

কিন্তু বিরোধী দলগুলো বলছে যে, নির্বাচনে এসব সহিংসতা ঠেকাতে যে বিশেষ উদ্যোগের দরকার - এটা তারা দেখতে পারছেন না।

এবারের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ কি আরও কঠোর হওয়ার সুযোগ রয়েছে? বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে, মিস্টার হোসেন বলেন, "নির্বাচন কমিশন কী বলছে বা বিরোধী দল কি বলছে - সেটা বড় কথা নয়। আপনি আমি কী দেখছি, সাধারণ মানুষ কী দেখছে - সেটাই বড় কথা।"

সাবেক নির্বাচন কমিশনার জানান যে, নির্বাচন কমিশনের কাছে সর্বময় ক্ষমতা দেয়া আছে। এবার তারা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অর্থাৎ তাদের তদন্ত করার জন্য কাউকে বলতে হবেনা।

এই ধরণের পরিস্থিতি এড়াতে অভিযান পরিচালনার জন্য এবং কঠোর অভিযান পরিচালনার জন্য বিশেষ ধারা দেয়া আছে। যার অধীনে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

তবে এই পদক্ষেপগুলো কার্যকর করার ব্যাপারে এবং পরিস্থিতি বুঝে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। সাখাওয়াত হোসেন বলেন, "নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার প্রথম দুই দিনে যে ঘটনাগুলো ঘটলো, তার পরে সেই ব্যবস্থা গ্রহণের কোন উদ্যোগ তো দেখা গেল না।"

"ঢাকাতেও গাড়ি বহরে হামলা হয়েছে, ভাঙচুর হয়েছে। এতে বলা যায়, এবারে দৃশ্যমান কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা।"

তবে নির্বাচন কমিশন যদি এসব ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা না নিতে পারে, তাহলে এই ফলাফলে বর্তমান নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং সেই প্রভাব ভোটারদের ওপর পড়বে বলে তিনি মনে করেন। এক্ষেত্রে তিনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নারী ভোটারদের উদাহরণ টানেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, "এখন যেমন অস্থিতিশীলতা শুরু হয়ে গিয়েছে। যদি কোন ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে এই সহিংসতা বাড়তেই থাকবে।"

"এতে ভোটাররা ভোট দিতে অনীহা প্রকাশ করবে। অনেকে ভোট দিতেই যাবেনা। বিশেষ করে নারী ও মার্জিনালাইজড ভোটাররা।"

দেশের প্রায় ৫০ শতাংশের মতো নারী ভোটার রয়েছে। এছাড়া একটি বড় সংখ্যায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠী । এখন তাদের ভোট দেয়ার আগ্রহের বিষয়টি খেয়াল রাখার ওপর জোর দেন তিনি।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, "যদি এই সহিংসতা বন্ধ করা না যায়, নির্বাচন কমিশন যদি এর নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারে, তাদের যে ব্যবস্থা নেয়ার কথা সেগুলো না নেয় - তাহলে বুথগুলো দখল হয়ে যাবে। যেভাবে নির্বাচন হওয়ার কথা। সেভাবে হবেনা।" এ নিয়ে কোন পদক্ষেপ চোখে না পড়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।

তার মতে, মানুষ এখনও মধ্যে শঙ্কা আছে যে এই অবস্থার মধ্যে নির্বাচন আদৌ হবে নাকি হবেনা অথবা তারা ভোট দিতে পারবেন নাকি পারবেন না।



 

Show all comments
  • হতদরিদ্র দীনমজুর ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:৫৩ পিএম says : 0
    সত্যিকথা যদি কেউ বলে তাহলে বলতে হবে হামলা মামলা গ্রেফতার র্র্਀সুষ্ঠ নির্বাচন হবে এরকম আশা করা যায়না ਀ আর নিবাচন কমিশন কিংবা আইন শৃংখলা বাহীনি এখন পযন্ত দৃস্যমান আস্থার সৃস্টি করতে পারছেন বলে জনগনের কাছে প্রতিয়োমান হচ্ছেনা਀ এখনই পদোখ্খেপ নেওয়া উচিৎ
    Total Reply(0) Reply
  • ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:৪১ পিএম says : 0
    Election kay question mark ( ? ) korer jonno kono ak mohol korcay ki na ta carefuly dakha uchit.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ