Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবারের ভোট মুক্তিযুদ্ধের মতো গণতন্ত্র মুক্তির লড়াই

ঐক্যফ্রন্টের রোডমার্চে টঙ্গীতে আ স ম রব

টঙ্গী থেকে মো: হেদায়েত উল্লাহ | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৮ এএম

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর গণজাগরণ হবে। স্বাধীনতার জন্য ৭০’এর নির্বাচনে যেমন ভোটের বিপ্লব হয়েছিল এবার গণতন্ত্র মুক্তির জন্য ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোটের বিপ্লবে ধানের শীষের বিজয় হবে।। তিনি বলেন, ধানের শীষ শুধু বিএনপির নয়, ১৬ কোটি মানুষের প্রতীক। ধানের শীষের বিজয় মানে দুঃশাসন ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিজয়। এবারের ভোটের লড়াই ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মতো গণতন্ত্র মুক্তির লড়াই। এ লড়াইয়ে আমাদের সবাইকে জিততে হবে। ৩০ ডিসেম্বর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোট কেন্দ্র পাহারায় থাকতে হবে। ভোট গ্রহণ ও গণনা শেষ করে ফলাফল হাতে নিয়ে বিজয়ের স্লোগান দিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে।
তিনি বলেন, এলাকার মুরুব্বী, মসজিদের ইমাম, স্কুলের শিক্ষক, মাদ্রাসার সুপারেন্টেন্ড তাদের সবাইকে নিয়ে ১০১ সদস্যের ‘গণ পাহারা কমিটি’ গঠনের জন্য তিনি ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন। গতকাল টঙ্গিতে গাজীপুর-২ আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপির প্রার্থী আলহাজ¦ সালাহ্ উদ্দিন সরকারের নির্বাচনী জনসভায় আ স ম আবদুর রব এসব কথা বলেন। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা দুপুরে রোডমার্চ শুরু করেন। রোডমার্চের অংশ হিসেবে দুপুরে তাঁদের প্রথম পথসভাটি হয় টঙ্গীর ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকারের বাড়ি প্রাঙ্গণে। যদিও এ সভাটি হওয়ার কথা ছিল শফিউদ্দিন সরকার একাডেমি মাঠে। কিন্তু এ মাঠের লাগোয়া টঙ্গী সরকারি কলেজে আওয়ামী লীগেরও একটি কর্মসূচি থাকায় ঐক্যফ্রন্টের সভা একাডেমি মাঠে হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিও হয়নি। আ স ম আবদুর রব বলেন, গণজোয়ার দেখে প্রধানমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন। নির্বাচন বন্ধ করার সুযোগ খুঁজছেন। তিনি নির্বাচন থেকে পালিয়ে যেতে চান। ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তা দেন তিনি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী বিদেশে যেতে চাইলেও দেওয়া হবে বলে জানান। রব বলেন, বিরোধী দলকে নিয়েই তাঁরা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আ স ম আব্দুর রব বলেন, শক্তিশালী কেন্দ্র কমিটি গঠন করে ভোটের আগের দিন রাত থেকে কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। ভোটের আগের রাতে যেন সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখতে না পারে সে ব্যাপারে কড়া পাহারা দিতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের প্রতিটি ভোট খালেদা জিয়ার মুক্তিকে তরান্বিত করবে।
আ স ম আবদুর রব বলেন, ১৯ মার্চ রাত থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হিন্দু-মুসলমান মা-বোনদের ওপর যে কমান্ডো বাহিনী অত্যাচার করেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়েছে সেই বাহিনীর কমান্ডারের হাতে শেখ হাসিনা নৌকা তুলে দিয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা প্রটোকল নিয়ে চলছে অভিযোগ করে রব বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য তাঁদের প্রটোকল দিতে হবে। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের মামলা-হামলা বন্ধ করার আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, এসব বন্ধ না হলে জনগণ রুখে দাঁড়াবে। তখন সবকিছুর দায় প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে।
ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা যুদ্ধে নেমেছি। ওদের কাছে অস্ত্র আছে, আমাদের নেই। আমাদের আছে ব্যালট। এ লড়াইয়ে আমরাই জিতব। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘরে ঘুমানোর দরকার নেই। মার খেলেও জবাব না দেওয়ার জন্য বলেন। সব জবাব ৩০ ডিসেম্বর দেওয়া হবে। সে জবাব এমন হবে যে আওয়াজও করতে পারবে না।
এ পর্যন্ত বিএনপির ৮ জন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, অপকর্মের জবাব দেওয়ার ভয়ে সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে দেশের অস্তিত্বের, দুঃশাসন হটানোর ও খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্বাচন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জেতার কোনো বিকল্প নেই। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পাঁচ দিনেই প্রধানমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন বলে জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনের মতো এত সহিংসতা আগে কখনো ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় হামলার জন্য লোক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি আগামীকালের মধ্যে সেনাবাহিনী নামানোর আহ্বান জানান। বলেন, আগামী ২ জানুয়ারি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে।
ঐক্যফ্রন্টের এ রোডমার্চে জোটের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা জানানো হলেও তিনি অসুস্থতার জন্য রোডমার্চে অংশ নেননি। এরপর গাজীপুর চৌরাস্তা, ময়মনসিংহের ভালুকা, ত্রিশাল, ময়মনসিংহে, বেশ কয়েকটি পথসভা হওয়ার কথা রয়েছে।
টঙ্গীর পথসভায় গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসানউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, এ জেড এম জাহিদ হাসান, স্থানীয় প্রার্থী সালাউদ্দিন সরকার প্রমুখ।



 

Show all comments
  • Ashraf Shahriar ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:০০ এএম says : 0
    রব মান্নাদের স্বরূপ চিনতে ৩০ তারিখ জনগন নৌকায় ভোট দিবে ।
    Total Reply(1) Reply
    • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:০১ এএম says : 4
      @Ashraf Shahriar রব মান্নাদের স্বরূপ চিনতে ৩০ তারিখ জনগন নৌকা ডুবিয়ে দিবে ।
  • রিদওয়ান বিবেক ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:০৩ এএম says : 0
    আওয়ামী লীগের জনসভা হয়নি।কিন্তু স্থান পরিবর্তন সত্ত্বেও ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ ঠিকই হয়েছে।এটাই হলো ভয়কে জয়।
    Total Reply(0) Reply
  • shibly ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:০৩ এএম says : 0
    জনগণ ৩০ তারিখে ভোট দিলে আপত্তি নাই। কিন্তু ২৯ তারিখ দিবাগত গভীর রাতে দিলে..... সরি, সম্ভবতঃ কিছুই করতে পারবো নাহ্!!!!!
    Total Reply(0) Reply
  • Mir Md Mofazzal Hossain ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:০৪ এএম says : 0
    ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাল্টে যাবে। সকল রাজাকার হয়ে যাবে দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা আর সকল মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাবে দেশদ্রোহী রাজাকার। বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামের মন্তব্যতে তারই ইঙ্গিত বহন করে।
    Total Reply(0) Reply
  • Imran Qatar ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:০৪ এএম says : 0
    ভয় তো সেই আগেই পেয়েছেন যখন ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাবে বলে ঘোষনা দিয়েছিল। উনারা জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছিলেন আবারো ৫ জানুয়ারীর মত নির্বাচন করে আরো ৫ টা বছর! আহ! ঐক্যফ্রন্ট সেই স্বপ্নের গুড়েবালি করে দিল।
    Total Reply(0) Reply
  • Engr Amirul Islam ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৭:২০ এএম says : 0
    in sha Allah people will vote against ..................
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৯:০০ এএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ। এবার আমরা প্রতিহত করিব জাতীয় বেঈমান। হত্যা, গুম নিপাত যাক নিপাত যাক জাতীয় বেঈমান। রক্তের হুলি খেলা বন্ধ হোক ফেলানি হত্যা বন্ধ হোক। জাতীয় বেঈমান দেশছারা হোক। ইনশাআল্লাহ। *********
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৯:০৪ এএম says : 0
    ঐক্যফ্রন্ট যাহা করিতেছেন জাতি চিরকাল মনে রাখিবেন। হটাও জাতীয় বেঈমান রক্ষা করো স্বাধীনতা। ইনশাআল্লাহ। *********
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ