Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দ্য ডিপ্লোম্যাটের প্রতিবেদন- বাংলাদেশে সহিংসতায় যোগ হল আরও এক হামলা

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:৫৭ পিএম

আগামী ৩০শে ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকায় একটি অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে বিরোধী দলীয় এক নেতার গাড়িবহরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে নির্বাচনের সঙ্গে ঘন ঘন যে সহিংসতা ঘটে, এটা তার সর্বশেষ উদাহরণ।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র লতিফুল বারি বার্তা সংস্থা এপি’কে বলেছেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকায় শ্রদ্ধা জানিয়ে ফিরছিলেন বিরোধী দলীয় নেতা ড. কামাল হোসেন। এ সময়ই তার ওপর ওই হামলা হয়। লতিফুল বারি বলেছেন, হামলাকারীরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। কিন্তু অক্ষত আছেন ড. কামাল হোসেন। পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিমুজ্জামান বলেছেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং তারা তদন্ত করছেন।
গত সোমবার নির্বাচনী প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে এরই মধ্যে কমপক্ষে দু’জন নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ। প্রচারণা শুরুর পর প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের দু’জন সমর্থক। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শুক্রবার একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আহ্বান জানানো হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলীয় নেতাদের গ্রেফতার, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকিতে ফেলার জন্য বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের সমালোচনা করেছে ওই সংগঠনটি।
দেশের ভিতরকার ও দেশের বাইরের অধিকার কর্মীরা নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুম ও অপহরণের অভিযোগ করে যাচ্ছেন। বলা হচ্ছে তারা শুধু সরকারবিরোধীদের টার্গেট করছেন। তবে বাংলাদেশী কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ জোর দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বিরোধীরা বলছে, তাদের হাজার হাজার নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, বিরোধী দলীয় নেতাদের রাজনৈতিক উদ্দেশে গ্রেফতার করা হয় নি। বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিপক্ষ তিনি। কিন্তু সম্প্রতি আপিল আদালত প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করেছেন খালেদা জিয়াকে।
বাংলাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা একটি সাধারণ বিষয়। এই সংঘর্ষ সাধারণত প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হয়ে থাকে। কিন্তু মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পরে স্ব স্ব দলের ভিতরেও এ সংঘর্ষ হয়ে থাকে। এখন পর্যন্ত আগের বছরগুলোর তুলনায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংসতা কমই ঘটেছে।
বিরোধীরা বলছে, নির্বাচন সামনে রেখে তাদেরকে দুর্বল করে দেয়ার জন্যই এসব হামলা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের অভিযোগ, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা পরাজিত হওয়ার ভয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্তিধর চ্যালেঞ্জার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন ড. কামাল হোসেন, বিশেষ করে তার জোটে বিএনপি যোগ দেয়ার পর থেকে। বাংলাদেশের ইসলামপন্থি সবচেয়ে বড় দল জামায়াতে ইসলামীও যোগ দিয়েছে তার ফ্রন্টে। এ দলটির বেশির ভাগ নেতাকে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়কার অপরাধের জন্য ফাঁসি দেয়া হয়েছে।
ড. কামাল হোসেন একজন প্রসিদ্ধ আইনজীবী ও সাবেক আইনমন্ত্রী। তিনি নির্বাচনে নিজে প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন না। কিন্তু তার দলীয় কর্মকান্ড শেখ হাসিনার জন্য বিবেচ্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

(অনলাইন দ্য ডিপ্লোম্যাটে প্রকাশিত রিপোর্টের অনুবাদ)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দ্য ডিপ্লোম্যাট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ