Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপি নেতাদের হয়রানি না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৭ এএম

বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হয়রানি না করতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার ঘটনার বিষয়ে আমরা এখনো অবহিত হইনি। আমরা লিখিত অভিযোগ পাইনি ও সে রকমভাবে অবহিতও হইনি।
গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। মিরপুরে ড. কামাল হোসেনের গাড়ি বহরে হামলার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, তিন শ আসনে নির্বাচন হচ্ছে। যেসব নেতিবাচক ঘটনা ঘটছে তা তুলনামূলক কম। তারপরও পুলিশকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে কেউ ইসিতে অভিযোগ করেনি।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের পুলিশ গণহারের গ্রেফতার করছে ইসির কাছে বিএনপি এমন অভিযোগ করেছিল। বিএনপির অভিযোগ কতটা আমলে নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, বিষয়গুলো ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি তদন্ত করে ইসিতে প্রতিবেদন পাঠাবে। কমিশন থেকেও পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিএনপির সিনিয়র কোনো নেতাকে যেন হয়রানি না করা হয়। কিছু অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। সেগুলোর ব্যাপারের ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সারাদেশে এত বড় নির্বাচনী কর্মযজ্ঞের মধ্যে আনুপাতিকহারে চিন্তা করলে যেসব ঘটনা ঘটছে এগুলো এক শতাংশ বা দুই শতাংশ। আমরা এগুলো অস্বীকার করবো না। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কমিশন যথেষ্ট সজাগ আছে। পুলিশকে এ বিষয়ে নির্দেশনাও দেয়া আছে। কোন অভিযোগ পেলেই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেরকম নির্দেশনা দিয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে কমিশন। এরই মধ্যে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও শেষ হয়েছে। এখন শুধু বাকি আছে, প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ।
ইসি সচিব জানান, জাতীয় নির্বাচনের সাতদিন আগে সকল সংসদীয় আসনে ব্যালট পেপার পাঠাতে সক্ষম হবে ইসি। এখনো বেশ কিছু নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থিতা নিয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অপেক্ষমাণ থাকায় সেসব আসন বাদ দিয়ে বাকি আসনগুলোর ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ চলছে। তবে ৩০ ডিসেম্বরের আগেই সব জেলার রিটার্নিং অফিসারদের কাছে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেয়া হবে। নির্বাচনের আগে আটটি বিভাগে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করবেন নির্বাচন কমিশনাররা। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা নিয়ে আগামী ১৮ই ডিসেম্বর রাঙামাটিতে একটি সমন্বয় সভা করবে কমিশন। ওইদিন বিকেলে চট্টগ্রামে বিভাগীয় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর অন্য বিভাগগুলোতেও সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় সভা করবেন নির্বাচন কমিশনাররা। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। রিটার্নিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী। তিনি বলেন, আলাদা কোন বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার সুযোগ নেই। বিভিন্ন এলাকায় হামলা ও সহিংসতার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জানান, যেসব প্রার্থীরা কমিশনে অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে প্রত্যেকটি অভিযোগ আমরা গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করছি আমলে নিচ্ছি। রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচনী তদন্ত কমিটির কাছে এসব অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে। বেশ কয়েকটি তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। আদো সত্য নয় এরকম কয়েকটি প্রতিবেদনও পাওয়া গেছে। কিছু কিছু জায়গায় প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছে কমিশন। সেরকম তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। বিনা অপরাধে কাউকে হয়রানি না করতে ও পরোয়ারা ছাড়া গ্রেফতার না করার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সভায় কমিশন কড়া ভাষায় নির্দেশনাও দিয়েছে।
ইসি সচিব বলেন, পেন্ডিং ওয়ারেন্ট এবং আদালতের তাগিদ থাকলে স্বাভাবিকভাবে পুলিশ গ্রেফতার করে থাকে। অনেক দিন এলাকায় না থাকায় পুলিশ হয়তো তাদের খুঁজে পায়নি। নির্বাচন প্রচারণার সময় প্রকাশ্যে আসায় গ্রেফতারের সুযোগ পাওয়ায় পুলিশ এসব জায়গায় আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য আলাদা নীতিমালা আছে। তবে, সাংবাদিকদের জন্য লিখিত কোন নীতিমালা নেই। আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সভায় বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা সাংবাদিকদের জন্য একটি নীতিমালা প্রনয়ণে তাগিদ দিয়েছেন। সাংবাদিকদের জন্য আলাদা একটি গাইডলাইনে তৈরির চিন্তাভাবনা করছে কমিশন। কমিশনাররা বলেছেন, সাংবাদিকরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন, ছবি তুলতে পারবেন ও ভোটারদের প্রতিক্রিয়াও নিতে পারবেন। তবে কেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার না করার বিষয়ে কমিশনের পর্যবেক্ষণ আছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে নির্দেশনা দেয়া হবে।
ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশ ইনচার্জের কাছে দুটি মোবাইল থাকবে। এছাড়া অন্যদের কাছে মোবাইল থাকলে ব্যবহারের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সভায় কমিশন একটি বিধিনিষেধ দিয়েছে। সাংবাদিকরা মোবাইল নিয়ে যাবেন, তবে কেন্দ্রের বাইরে গিয়ে ব্যবহার করলে অসুবিধা নেই। কেন্দ্রের ভেতরে বা বুথের ভেতরে মোবাইল ব্যবহার হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপব্যবহার করতে উৎসাহিত হতে পারে, এ ব্যাপারে বিধিনিষেধ থাকা দরকার বলে কমিশন মনে করে। এটা একটা পরামর্শ এসেছে, এটা এখনো আমরা সেভাবে গ্রহণ করিনি। ভয়ের কোন বিষয় নেই।



 

Show all comments
  • নাজমুল আলম পাপন ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১০ এএম says : 0
    আজ তিন দিন যাবত বি এন পির নেতা কর্মিদের উপর যেভাবে হামলা মামলা গ্রেফতার করছে তার পরেও ইসি বলে বি এন পির নেতাদের অভিযোগের বেশীর ভাগেই সত্যেতা নেই,সেখানে পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে কি হবে ? আপনারা নিজেরাই বি এন পি জামাত নেতাদের উপর পুলিশ নামের কুকুর লাগিয়ে দিয়েছেন
    Total Reply(0) Reply
  • Fateh Ali ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১১ এএম says : 0
    জনগনকে এত বোকা বানানোর কি দরকার আপনাদের?
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rahman Sabuj ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১১ এএম says : 0
    আপনারা মিডিয়ার দায়সারা কথা বলেন কিন্তু জায়গামত আপনাদের গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।মানুষ সব কিছু বোঝে।
    Total Reply(0) Reply
  • Saiful Islam ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১১ এএম says : 0
    অভিযোগ করা লাগবে কেন? ইসি কি অন্ধ? তারা পত্রিকা পড়েন না??
    Total Reply(0) Reply
  • আজিম ইমরান ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১২ এএম says : 0
    তার মানে যারা তৃণমূল কর্মী বা ছোট নেতা তাদেরকে সমানভাবে মামলা করুন, গ্রেফতারি করুন, হয়রানি করুন। কারন জ্যেষ্ঠ নেতাদের হয়রানি করলে সংবাদপত্র এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয় কিন্তু ছোট নেতাদের করলে কোন সমস্যা হয় না। কেউ জানে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Guljar Ahmed ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৩ এএম says : 0
    অশুভ সংকেত একের পর এক আসছে!একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার পরিবেশ থাকবে কি না?আমরা সাধারণ জনগণ চাই না সংঘাত, চাই না রক্তপাত।আওয়ামীলীগ বলছে কেন্দ্র রক্ষা করবে আর বিএনপি বলছে পাহারা দিবে!এতে সংঘাত অনিবার্য! তাই আমি মনেকরি ২০ তারিখ থেকে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন করা হোক।।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Sariful Feni ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৪ এএম says : 0
    পুলিশকে ইসির নির্দেশ দিলেও কোনো লাভ হবে না কারণ পুলিশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নাই তারা আওয়ামী লীগের অধীনে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করতে ছে
    Total Reply(0) Reply
  • Halim Khan ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৪ এএম says : 0
    আপনারা বসে বসে শুধু নির্দেশ দিচ্ছেন কিন্তু সে নির্দেশ কি মানছে কেও।পুরো দেশে যে তান্ডব চলছে এগুলো কি আপনাদের চোখে পারেনা
    Total Reply(0) Reply
  • Parvez Mosharrof ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:১৪ এএম says : 0
    I support the united front because all these freedom fighters were associated with independence. All of them are brave freedom fighters. So I will invite everyone to vote in the rice field.
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৮:০৮ এএম says : 0
    Mr.you are bias,If you instracted the police dept. How come they are ........ on the BNP & it is united front leaders & it is workers?
    Total Reply(0) Reply
  • বললে সমস্যা আছে ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৮:৫২ এএম says : 0
    আমরা গণতন্ত্র চাই।ভোট দিতে চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Engr Amirul Islam ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:২৩ এএম says : 0
    This EC is .................. so no good things they will do
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ