পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতগলু পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ মাসের শেষের দিকে তিনি তার ক্ষমতাসীন দল এ.কে. পার্টি থেকেও সরে দাঁড়াবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দাভুতগলু তার সিদ্ধান্ত জানান। এর আগে বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এরপর থেকেই তার পদত্যাগের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল।
বিবিসি খবরে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতগলু দীর্ঘদিন ধরে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের প্রেসিডেন্ট শাসিত সরকার গঠনের পরিকল্পনাকে অগ্রাহ্য করে আসছিলেন। এরই মধ্যে আহমেদ দাভুতগলু পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন। পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে আহমেদ দাভুতগলু বলেন, আগামী ২২ মে তাদের দলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কেমিল এরটেম বলেছেন, নতুন নেতা নিয়োগে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। তুরস্কের একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একীভূত হন, তাহলে তুরস্কের অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল হবে।
এদিকে বিদায়ী ভাষণে দাভুতগলু বলেন, আগামী চার বছর আরো শক্তিশালী একে পার্টি (তার নিজের দল) তুরস্ককে নেতৃত্ব দেবে। তবে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের কোনো সমালোচনা করে বরং তিনি বলেছেন, তার সাথে আমি ‘ভাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ।’ আপনারা কখনো তার ব্যাপারে আমার কাছ থেকে নেতিবাচক কিছু শুনবেন না।
পাঁচ ইস্যুতে দুই নেতার মতানৈক্য:
প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের সাথে মূলত পাঁচটি ইস্যুতে ঐকমত্য হতে না পেরে পদত্যাগ করেছেন দাভুতগলু। প্রথমেই রয়েছে এরদোগানের বহু কাক্সিক্ষত প্রেসিডেনশিয়াল শাসন ব্যবস্থা। বর্তমানে তুরস্কের সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে ক্ষমতাবান। কিন্তু এরদোগান চাচ্ছেন প্রেসিডেনশিয়াল শাসন ব্যবস্থা। দাভুতগলু এই ব্যবস্থার পক্ষে নন। এতে সব ক্ষমতা এক ব্যক্তি হাতে কুক্ষিত হওয়ার আশংকা থাকে। দ্বিতীয়ত, তুরস্কের পূর্বাঞ্চলের কুর্দি অধ্যুষিত এলাকার স্বাধীনতাকামী উগ্র বামপন্থীদের সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিকে অস্থির করে তুলেছে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত তাদের সাথে সরকারের শান্তি চুক্তি বিদ্যমান ছিল। কিন্তু এরপর চুক্তি ভঙ্গ হলে এরদোগান তাদের উপর রুষ্ট হন এবং ওই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেন। এ পর্যন্ত গত কয়েক মাসে কয়েক হাজার পিকেকে সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে তুর্কি বাহিনী। খুবই স্বাভাবিকভাবে এসব ঘটনায় বেশ কিছু সংখ্যক সাধারণ মানুষও প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। এই অভিযান এখনো চলছে। অবশ্য পাল্টা জবাব হিসেবে পিকেকের সন্ত্রাসীরা তুরস্কে বেশ কয়েকটি বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। যাতে অনেক সাধারণ মানুষ মারা গেছেন। আহমদ দাভুতগলু চেয়েছিলেন সংগঠনটির সাথে যুদ্ধের পরিবর্তে আবারও শান্তি আলোচনা শুরু করতে। কিন্তু এরদোগান এর ঘোর বিরোধী। তৃতীয়ত, পশ্চিমাদের সাথে সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে খুবই নেতিবাচক। তার আক্রমাণাত্মক বক্তব্য এবং অবস্থানের কারণে পশ্চিমা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশের সাথে প্রায়ই তুরস্কের সম্পর্ক খারাপ হচ্ছিল। বিশেষ করে ইউরোপিয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছিল। বর্তমানে একাধিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া তুরস্কের জন্য ইইউর মেম্বারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অতীতে একবার ইইউ দেশটির মেম্বারশিপ প্রক্রিয়া স্থগিত করায় এরদোগান এখন আর তাতে মোটেও উৎসাহী নন। অন্যদিকে সফল কূটনীতিবিদ দাভুতগলু সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিতে চাচ্ছিলেন। চতুর্থত, এরদোগান তার বিরুদ্ধ মতকে কঠোর হস্তে দমনে আগ্রহী। অন্যদিকে দাভুতগলু চাচ্ছিলেন এটা কমিয়ে আনতে। বিশেষ করে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এবং শিক্ষাবিদকে গ্রেফতার এবং জেলে পাঠানোর বিরোধী ছিলেন তিনি। বিরোধীদের আরো সুযোগ দেওয়া পক্ষপাতী সাবেক প্রধানমন্ত্রী। পঞ্চমত, তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও বিরোধ ছিল দুই নেতার মধ্যে। এরদোগান চাচ্ছিলেন পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে। অন্যদিকে দাভুতগলু কিছুটা স্বায়ত্তশাসন দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চালানোর পক্ষে ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার কমানো এবং বাড়ানো নিয়েও দ্বিমত ছিল প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।