Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আইনজীবীদের অনাস্থা নতুন বেঞ্চের প্রতি

খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা শুনানি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

তিন আসনে মনোনয়ন বাতিলের বিএনপি চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়ার রিট শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির গঠন করে দেয়া নতুন বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে তার আইনজীবীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসানের একক বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে খালেদার জিয়ার আইনজীবীরা ওই বেঞ্চের বিচারপতির প্রতি অনাস্থা জানান।
এরপরই সোমবার পর্যন্ত আদালত মুলতবি ঘোষণা করেন বিচারপতি। ফলে খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কী পারবেন না, তা সোমবার পর্যন্ত ঝুলে থাকল। এর আগে ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভোটের লড়াইয়ে ফিরতে শেষ আশ্রয়স্থল হাইকোর্টে আসেন। গত মঙ্গলবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে খালেদা জিয়ার করা রিটের বিভক্ত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এরপর প্রধান বিচারপতি খালেদা জিয়ার রিট শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেন। বেলা ২টায় ওই বেঞ্চে মামলা তিনটির শুনানি শুরু হলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী মৌখিকভাবে অনাস্থা জানান। বিচারক তখন শুনানি মুলতবি করে দেন। শুনানির শুরুতেই এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে আপনার আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা নেই। বিচারক তখন এ জে মোহাম্মদ আলীকে লিখিত আবেদন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনারা তো এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে জানাতে পারতেন। এ জে মোহাম্মদ আলী তখন বলেন, আমাদের কিছু করার ছিল না। আমরা দেখেছি যে বেলা ২টায় এই আদালতে মামলার শুনানি হবে। যা বলার এই আদালতেই বলতে হবে। এ পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনালেন মাহবুবে আলম বলেন, উনারা এ কথা এ আদালতে বলতে পারেন না। প্রধান বিচারপতিকে বলতে পারতেন। কালক্ষেপণের কৌশল থেকে এই অনাস্থা জানিয়েছেন। এর জবাবে মোহাম্মদ অলী বলেন, আমরা হলাম সংক্ষুব্ধ পক্ষ। আমাদের আর্জেন্সি বেশি। উনি তো রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল। এ মামলায় উনার এত মাথাব্যথার কারণ কী? উনি ব্যক্তি মাহবুবে আলম হিসেবে দাঁড়াতে পারেন। বিচারপতি তখন বলেন, উনি ব্যক্তি মাহবুবে আলম হিসেবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। এ পর্যায়ে মোহাম্মদ আলী বিষয়টির শুনানি না করার আরজি জানালে আদালত তাতে সম্মতি দেন।
পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল সাংবাদিকদের বলেন, নিয়ম হচ্ছে বিভক্ত আদেশ দেয়া বেঞ্চের সিনিযর বিচারপতি যিনি থাকেন তার চেয়ে সিনিয়র কোনো বিচারপতিকে দিয়ে একক বেঞ্চ গঠন হবে। বিভক্ত আদেশ দেয়া বেঞ্চে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ সিনিয়র বিচারপতি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি বিচারপতি জে বি এম হাসানকে দিয়ে একক বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন। তিনি বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের কনিষ্ঠ। যে কারণে আমরা অনাস্থা জানিয়েছিলাম। আদালত লিখিতভাবে আবেদন করতে বলে সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রেখেছে। তবে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দাবি করেছেন, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতের প্রতি অনাস্থা দেননি।
আবেদনটি খারিজ হবে জেনেই খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা টালবাহানা শুরু করেছেন।, এ ধরনের কোনো আইন নাই বা সুপ্রিম কোর্টেরও বিধি নাই। প্রধান বিচারপতি নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির জন্য এই বেঞ্চকে এখতিয়ার দিয়েছেন। এ কারণে খালেদা জিয়ার মামলা তিনটিও এই বেঞ্চে পাঠিয়েছেন নিষ্পত্তির জন্য।
খালেদা জিয়ার ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দেয়া হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসি আপিল আবেদন করেন। শুনানির সময় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন সিইসি। তাঁরা তিনটি আসনেই খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করেন। এর পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভোটের লড়াইয়ে ফিরতে শেষ আশ্রয়স্থল হাইকোর্টে আসেন।
কুমিল্লার এক মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন বহাল
কুমিল্লার কাভার্ড ভ্যান পোড়ানোর মামলায় বিএনপি চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়াকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি আগামী ১৭ ডিসেম্বর পযন্ত মুলতবী করেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে রাষ্টপক্ষে নিয়মিত আপিল জমা দেন। এরপর শুননির জন্য সময় আবেদন করলে আদালত এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। সাথে ছিলেন ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সদরের পৌর এলাকার হায়দারপুল এলাকায় একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরদিন অর্থাৎ ২৬ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে বিএনপি চেয়ারর্পাসনসহ ২০ দলের স্থানীয় ৩২ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করেন। মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়।



 

Show all comments
  • রিদওয়ান বিবেক ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৫৫ এএম says : 0
    খালেদা জিয়াকে নির্বাচন করতে দেয়া হয় না আর মাহবুবে আলম,কাজলরা দলীয় মনোনয়নই পায় না এটাই পার্থক্য।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৫৫ এএম says : 0
    কিছুই করার নেই। সময় যখন খারাপ হয়, বিপদ তখন সঙ্গী হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Abu Sayed ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৫৬ এএম says : 0
    আদালতের গ্রহণযোগ্যতা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে! আহারে!
    Total Reply(0) Reply
  • সোলায়মান ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৫৬ এএম says : 0
    খালেদাকে কোর্টে ব্যস্থ রাখা আওয়ামী কৌশল। বিএনপি এই কৌশলের মাঝেই থাকুক।
    Total Reply(0) Reply
  • zobair ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৫৬ এএম says : 0
    ব্যাপার না, দেশবাসীর ও ত খালেদা জিয়া বা তার আইনজীবিদের প্রতি কোন আস্থা নাই!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ