পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে ১৫ ডিসেম্বর, এটাই আমরা জানতাম। পত্রিকায়ও তাই এসেছে। আজকে (গতকাল) শুনলাম ১০ দিন পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ কী? কারণ হলো-বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে সাইজ করা। এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানো, যাতে করে তারা এলাকা ত্যাগ করে। যেখানে নেতাকর্মী থেকে শুরু করে নির্বাচনের প্রার্থীদের ওপর এত অত্যাচার নির্যাতন, সেখানে সেনা মোতায়েন ১০ দিন পিছিয়ে দেয়ার মাজেজা কী? এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, এমনিতেই নেতারা আগাম জামিন চাইতে এসে ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গত কয়েকমাস ধরে। অনেক নেতাকর্মী প্রাণভয়ে একবছর ধরে এলাকায় যেতে পারে না। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের মানবাধিকার গণতন্ত্র নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রতিটি অধিকার প্রতিদিনই পদদলিত হচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা ৬ বছর ধরে এলাকায় যেতে পারছেনা জানিয়ে বলেন, আমি ভোলা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী। অতীতে ছয়বার এই এলাকা থেকে জনগণ আমাকে নির্বাচিত করে জাতীয় সংসদে পাঠিয়েছে। ৯১-এর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করে জাতীয় সংসদে পাঠিয়েছে। কিন্তু গত ছয় বছর এলাকায় যেতে পারিনি। পত্র-পত্রিকায় নানা কথা লেখা হয়। কেন যেতে পারিনি, আজকে যে কথা বলবো, সেটা শুনলে আপনারা বুঝতে পারবেন। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছে এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পূর্ণ অপরিচিত এক ব্যক্তি। তিনি ইব্রাহিম, মালিবাগ মার্ডারে অভিযুক্ত আসামি। যেহেতু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় তাই হত্যাকান্ডের কোনো বিচার হয় না, হবেও না। আমার নির্বাচনী এলাকার ৪০০ জন নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে হাইকোর্টে চক্কর খাচ্ছি। কখনও ৫০, কখনও ২০ এইভাবে আগাম জামিন মঞ্জুর হয়। অবশেষে গতকাল আমার নির্বাচনী এলাকায় যাবার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদেরকে লঞ্চে করে যেতে হয়। চার লঞ্চে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। আমার সফরসঙ্গীরা লঞ্চে উঠে গিয়েছেন। আমি বাসা থেকে আগেই বেরিয়ে এসেছি। ৮টায় লঞ্চ ছাড়বে। ৬টা ২০ মিনিটে আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ লঞ্চ টার্মিনালটি দখল করে নেয়। লঞ্চে প্রবেশ করে আমার প্রায় ৫০ জন কর্মীকে মারাত্মকভাবে আহত করে। তারা এই এলাকাতেই আশাপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, টার্মিনালের প্রবেশে পথে তারা ২০০ জন মাস্তান, কারও হাতে অস্ত্র, কারও হাতে হকিস্টিক, কারও হাতে পিস্তল-এগুলো নিয়ে তারা গোটা টার্মিনাল ঘিরে রেখেছে যাতে আমি লঞ্চে উঠতে না পারি। স্লোগান দিচ্ছে, যে স্লোগান প্রতিদিনই আপনারা শুনতে পারেন। আমার বিরুদ্ধে স্লোগান হচ্ছে। টার্মিনালটি সম্পূর্ণ জনশূন্য হয়ে পড়ে তাদের অত্যাচারে। যাত্রীরা দিগ্বিদিক ছুটে পড়ে এবং লঞ্চটিকে তারা বাধ্য করে সারেংকে নদীর মধ্যে নিয়ে যেতে। এ কারণে আমি লঞ্চে উঠতে পারিনি, আমার নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, এলাকায় আমাকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য ৪০ হাজার লোক সমবেত হয়েছিল, তারা জানতে পেরেছে-আমি লঞ্চে উঠতে পারিনি, তারা কাঁদতে কাঁদতে ফিরে গেছে। এই হলো বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চিত্র। এখানে একজন প্রার্থী হয়ে আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছি না। আমি একজন সিনিয়র সিটিজেন, ৭৪ বছর বয়স। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, সাবেক এমপি হিসেবে, একজন গণতান্ত্রিক দলের কর্মী হিসেবে সন্ত্রাসীদের কাছে আমার কোনো মূল্য নেই।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি চিঠি দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জানিয়েছিলাম, নিরাপত্তা প্রদানের জন্য, কিন্তু তাদের তরফ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। আমরা নির্বাচনী এলাকায় এই মুহূর্তে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার ৪০০ সন্ত্রাসী সেখানে অবস্থান করছে। প্রকাশ্যে তারা মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাতে তাদের অস্ত্র। বিএনপি সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা হুমকি দিচ্ছে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ প্রমূখ।
নির্বাচনী এলাকায় যেতে দিচ্ছে না সরকারি দল
নিজের নির্বাচনী এলাকায় যেতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা লঞ্চে ওঠতেই দিচ্ছেনা বলে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অভিযোগ দিয়েছেন ভোলা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর আগারগঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গিয়ে নির্বাচন কমিশনার শাহাদত হোসেন চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ইসির কাছে লঞ্চে ওঠার নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি। অভিযোগ দিয়ে ইসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার তাসরিফ-৪ নামের লঞ্চে করে তাঁর নির্বাচনী এলাকা ভোলার লালমোহনে যাওয়ার কথা ছিল। সাড়ে ছয়টার দিকে তিনি সদরঘাটে যান। গিয়ে জানতে পারেন, ছাত্রলীগ– যুবলীগ কর্মীরা লঞ্চের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তারা লঞ্চটিকে মাঝনদীতে নিয়ে যায় এবং ৪০টি কেবিন ভাঙচুর করে। তাঁর কর্মীদের মারধর করে। তিনি জীবন নিয়ে ফিরে আসেন। ছয়বারের এমপি তিনি, জীবনে কখনো হারেননি উল্লেখ করে তিনি ইসির কাছে লঞ্চে ওঠার নিরাপত্তা দাবি করেন।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, লঞ্চে উঠতে পারলে তিনি এলাকায় যেতে পারবেন। আর এলাকায় গিয়ে পৌঁছাতে পারলে ইসির নিরাপত্তা লাগবে না, এলাকাবাসীই তাঁর নিরাপত্তা দেবে। তিনি জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য এখনই সেনা মোতায়েনের দাবি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।