Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপির আড়াই লাখ নেতাকর্মীর তালিকা করেছে পুলিশ

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে সরকার হামলা-গ্রেফতার বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার টিকে থাকার জন্য শেষ মরণকামড় দিচ্ছে এখন। গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে-আইজিপি সব ডিআইজি ও এসপিদেরকে ঢাকায় তলব করেছে। বিএনপি’র আড়াই লাখ নেতাকর্মীদের একটি তালিকা করেছে পুলিশ। ডিআইজি এবং এসপিদের সঙ্গে বৈঠকের পর চিরুনী অভিযান চালিয়ে ঐসব নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে নির্বাচনী মাঠ ফাঁকা করা হবে। মূলত: শত বাধা বিপত্তি-গ্রেফতার-হামলা উপেক্ষা করে চারিদিকে ধানের শীষের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে থামিয়ে দিতেই এই অভিযানের পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নৌকার প্রার্থীরা সারাদেশে প্রতিকূলতায় পড়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ৫ বছর ঢাকায় আরাম-আয়েশে লুটপাট করে কাটিয়ে এখন নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে চরম প্রতিকূলতায় পড়েছে নৌকার প্রার্থীরা। দিকে দিকে জনগণ তাদের বিরুদ্ধে ফুসে উঠতে শুরু করেছে। ভোট চাইতে গিয়ে ভোটারদের রোষের মুখে পড়ছে। দলীয় সন্ত্রাসী আর পেটোয়া বাহিনী দিয়ে সাধারণ জনগণকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। সময় এখন জনগণের। এই কারণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফিয়া ডনদের মতো বলছেন-‘আর ভাষণ নয়, এ্যাকশনে যেতে হবে’। অর্থাৎ এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি নিজেদের দূর্বিনীত ক্যাডারদেরকে সহিংসতার পথ অবলম্বনের জন্য উস্কানি দিলেন। অব্যাহত মামলা-হামলা, গুম-খুন, দুর্নীতি ও দূর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে জনগণের রায় এখন প্রতিফলিত হবে। আমরা নিশ্চিত, এবার সরকারি সকল বাধা অতিক্রম করে সারাদেশে সাহসী জনতা ধানের শীষের বিজয় ছিনিয়ে আনবেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সারাদেশে আওয়াজ উঠেছে নৌকাডুবির। এখন পতনের ক্ষণগননা চলছে। তাই পলায়নপর সরকার নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরই চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছে ক্ষমতা এবার হাতছাড়া হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রমাণসহ তথ্য আছে, গত ১০ ডিসেম্বর সোমবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কতিপয় নেতাদের নিয়ে একটি গোপন বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদেরকে মাঠে নামাতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয়া। একটি পর্যায়ে তারা নিজেরাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর হামলা চালাবে। প্রয়োজনে বড় ধরণের নাশকতাও করতে পারে। পরে এসব হামলা ও নাশকতার দায়ভার চাপাবে বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট, জামায়াতের ওপর। এসব ঘটনার মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, যারা এখনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর হামলা করতে পারে তারা ক্ষমতায় আসলে পরিস্থিতি কী হবে? প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে টেলিফোনে বলছেন-বিএনপি’র ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর হামলা-মামলার সংবাদ যেন ছাপানো না হয়।
তিনি বলেন, বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলার জন্য যা যা করার দরকার আওয়ামী লীগ তাই করবে। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন বানচালও করে দিতে পারে তারা। সেই কারণে আমরা দলের পক্ষ থেকে আজকেই সেনা মোতায়েনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু আমাদের দাবির ঘন্টা খানেক পরেই তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের দিনের ৫ দিন আগে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিলো নির্বাচন কমিশন। আমাদের আশঙ্কাই ঠিক হলো-এই সময়ের মধ্যে তারা নির্বাচনী মাঠ বিরান ভূমিতে পরিণত করবে আওয়ামী চেতনায় সাজানো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা। তবে আমরা সকল বাধা অতিক্রম করে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ভোটের লড়াই করে যাবো। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। জনগণই আমাদের শক্তি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ