Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উজ্জীবিত বিএনপি নেতাকর্মীরা

গলেছে বরফ

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

দেশের মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে অবশেষে মুক্তাদিরের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ভোট রাজনীতির শক্তিমান নায়ক সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সেকারণে উজ্জীবিত দলের নেতাকর্মীরা। ইনাম আহমদ চৌধুরীকে নিয়ে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল আরিফের সাথে মুক্তাদিরের।
আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপরীতে ইনাম আহমদ চৌধুরী মানানসই সেই বাস্তবতায় অনড় ছিলেন আরিফের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রভাবশালী অংশ। অতীতের নির্বাচনী ইতিহাসে প্রার্থীদের লড়াইও হয়েছে সেই বিবেচনায়। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তে বাদ পড়েন ইনাম আহমদ চৌধুরী, মনোনয়ন যুদ্ধে এগিয়ে যান দলের চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে মুক্তাদিরের লড়াই ভবিষ্যত ভেবে কপালে ভাঁজ দেখা দেয় দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের। কিন্তু উল্লাসে বলিয়ান হয়ে উঠে দলের তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। নির্বাচনী লড়াইর আগেই টিকিট যুদ্ধে বিজয়ের আনন্দে তারা হয়ে উঠে সাহসী, তেজদীপ্ত। এরপর আরিফসহ দলের মনোনয়ন বিরোধীদের মন জয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন খন্দকার মুক্তাদির। আরিফের অফিস, বাসায় গিয়ে সমর্থন আদায়ে মনোযোগি হয়ে উঠেন তিনি। গত বুধবার সকালে আবারো মেয়রের বাসায় গিয়ে নির্বাচনের জন্য তার সহযোগিতা চান মুক্তাদির। আর এর জবাবে তাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র আরিফ। সেই আশ্বাস-বিশ্বাসে আরিফ-মুক্তাদিরের ঐক্যের সুরে বাজিমাত করতে চায় বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
স্বাভাবিক নির্বাচনী মাঠে হেভিওয়েট প্রার্থী সিলেট-১ আসনের অলঙ্কার হলেও বর্তমান বাস্তবতা একেবারে ভিন্ন। কঠিন বাস্তবতা এখন মুখোমুখি নির্বাচনী পরিস্থিতি। গত ১০ বছরের সরকার বিরোধী আন্দোলনে দলের নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল নেতাকর্মীরা হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত। চলমান এই রাজনীতির মাঠে সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব ও আগলে রাখার বিবেচনায় খন্দকার মুক্তাদিরের অবদান ভুলতে পারেনি তৃণমূল নেতাকর্মীরা। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দলের প্রার্থী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পাশে ছিলেন মুক্তাদিরও তার অনুসারীরা।
নির্বাচনের আগ থেকেই প্রার্থী তালিকায় বিভিন্নভাবে উঠে আসতে থাকে মুক্তাদিরের নাম। কিন্তু পুরানো প্রথায় হেভিওয়েট প্রার্থীরা খোঁজে থাকে বিএনপির একটি ত্যাগি অংশ। তাদের কারণেই সিলেট-১ আসনে প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড এর সাবেক চেয়ারম্যান ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরীর আবির্ভাব ঘটে। মনোনয়ন যুদ্ধে নেমেই আলোচিত হয়ে উঠেন তিনি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বাসায় সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হতে গিয়ে দলের একটি অংশের প্রচন্ড বিরোধীতায় পড়েন তিনি। কিন্তু মনোনয়নের শেষ লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারেননি তিনি। টিকিট তৃণমূলে পছন্দের প্রার্থীর খন্দকার মুক্তাদির-ই। একারণে দলের সক্রিয় প্রভাবশালী একটি অংশ চরম ভাবে মনক্ষুন্ন হয়। বিয়য়টি আঁচ করতে পেরে দফায় দফায় মান-অভিমান ভাঙতে তৎপর হয়ে উঠেন মুক্তাদির। গত বুধবার আরিফের কুমারপাড়াস্থ বাসভবনে যান তিনি। সেখানে উভয় নেতা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। আলাপচারিতা শেষে মেয়র আরিফের বাসার সামনে দু’জনে হাত তুলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। তাদের এই ঐক্যে মুর্হূতেই ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে নেতাকর্মীদের মধ্যে। বরফ গলে ভোটের জোয়ার এখন বইছে ধানের অনুকূলে। দলের সুসময়, দুঃসময়ে পাশে থাকার অঙ্গীকারও করছেন মুক্তাদির। দল ও সরকার বিরোধী সাধারণ ভোটারদের সমর্থন এখন মুক্তাদিরের পক্ষে। সেই সমর্থন কাজে লাগিয়ে মুক্তাদিরের বিজয় নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি তৃণমূল নেতাকর্মীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ