Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অসহায় ইসি তবুও আশান্বিত বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:৪৩ এএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের গাড়িকহরে হামলা ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধর পাকড়ের বিষয়ে ইসির বিব্রত বোধ করা সংস্থাটির অসহায়ত্বের প্রকাশ বলেই মনে করছে বিএনপি। তবে দলটি আশা করে নির্বাচন কমিশন তাদের ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে হামলা-মামলার ঘটণা কমে যাবে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল সিইসি এসব বিষেয়ে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, আব্দুল কাইয়ুম, ড্যাবের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেনও বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন।
ইসিতে এসে ঘটনার বর্ণনা সিইসিকে জানিয়ে ফেরার পথে সাংবাদিকদের কাছে সেলিমা রহমান বলেন, নির্বাচনে ইসি কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। দলের মহাসচিবের গাড়ী বহরে হামলা এবং নির্বাচনের সহিংসতায় নিহত হওয়ার ঘটনায় কমিশন কিছু করতে পারছে না। এ কারণে অবশ্য কে এম নুরুল হুদা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আমরা মনে করি তিনি (সিইসি) অসহায়। তিনি বিব্রত বোধ করছেন এটা সত্যি। কারণ তিনি কিছুই করতে পারছেন না। তবুও আমরা আশা রাখি সিইসি যেহেতু এবার একটি সুযোগ পেয়েছেন, তিনি যদি সঠিকভাবে পদক্ষেপ নেন তাহলে কিন্তু আমরা এই নির্বাচনকে গ্রহনযোগ নির্বাচন হিসেবে প্রমাণ করতে পারব। এর আগে বিএনপি সমর্থিত একজন প্রার্থী তাদের নেতাকর্মীদের আটক ও হয়রাণি করছে ইসিতে অভিযোগ দিয়ে নির্বাচনের এলাকায় ফেরার পথে পুলিশ একজন নেতাকে আটক করেছেন বলে পুনরায় বুধবার পৃথক আরেকটি অভিযোগ জানানো হয়।
সেলিমা রহমান বলেন, ১০ তারিখ থেকে প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রচারণার পর পরই আমাদের মহাসচিবের গাড়ি বহরে আক্রমণ করা হয়েছে। ব্যারিষ্টার মওদুদের প্রচারণায় বার বার হামলা করা হচ্ছে। মঈন খানের এলাকায় হামলা চালানো হচ্ছে। পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী ও যুবলীগ মিলে এই হামলা করছে। যারা জামিনে আছেন তাদেরর গ্রেফতার করা হচ্ছে। আটক নেতাকর্মীদেরর জামিন দেয়া হচ্ছে না। বুধবার সকালে ভাটারা থানার একজন কর্মীকে পুলিশ ধাওয়া করে ছাদের উপর থেকে ফেলে দিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এমন ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। নাটোরে জামিনে থাকা সত্বেও বিএনপি নেতা দুলুকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী মির্জা আব্বাসের বাসায় কেউ আসতে পারে না। তার বাসায় আসলে সাদা পোষাকের পুলিশ গ্রেফতার করে নিচ্ছে। বিনা কারণে ডিসিসির সাবেক কমিশনার মির হোসেন মিরুসহ বেশ কয়েকজন কমিশনারদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এমন ভাবে পুলিশ সারাদেশে নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, তারা চাইছে আমরা যেন নির্বাচনে প্রচারনা চালাতে না পারি, নির্বাচন যেন না করতে পারি। তারা একতরফাভাবে নির্বাচন করতে পারে। সে কারণে এখন ভয়ভীতি হামলা মামলাসহ বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করছে। এবং প্রার্থীদের উপর বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ করা হচ্ছে। এই ঘটনাগুলো জানাতে আজ আমরা এসেছি। কারণ তিনি বলেছিলেন আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেবো। সবাই সমান সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা এখন পলাতক। আমরা বলতে পারছি না আমরা কোন কোন জায়গায় নির্বাচনের জন্য এজেন্ট খুঁজের পাবো কিনা। কারণ পুলিশের ভয়ে অনেকে পলাতক রয়েছেন। এই বিষয়গুলো আমরা কমিশনকে জানালাম। তফসিলের পর গ্রেফতার হবে না বললেও এখন প্রতিনিয়ত গ্রেফতার হচ্ছে। অজ্ঞাতনামা দিয়ে অনেক নেতাকর্মীকে আটক করা হচ্ছে। এই অজ্ঞাতনামা জানতে চাইলে পুলিশ বলছে তাদের নামে আগে থেকে মামলা ছিল। তারা নিজেরাই এগুলো করছে। সিইসি আমাদের বলেন-আমি চেষ্টা করছি। কিন্তু পুলিশ বলছে আগে থেকে যাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে. তাদের আমরা ধরছি। পুলিশ বলছে তাদের নামে সুনির্দিষ্ট কেইস আছে। সিইসি বলছেন সেই সুনির্দিষ্ট কেইস কি সেটা আমি কি করে জানব। আমি চেষ্টা করছি, আমি চেষ্টা করব।
এদিকে, ঢাকা-১৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী আব্দুস সালাম নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ধরপাকড়ের অভিযোগ দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার পরই তার সাথে থানা কর্মীকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তুলে নিয়ে গেছে বলে ইসিতে ফের অভিযোগ দিয়েছে।
আব্দুস সালাম মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সভাপতি ওসমান গণি শাজাহানকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাত করে ধরপাকড়ের অভিযোগ দিতে বের যান। আধাঘণ্টা পরে আবার ফেরত এলে সাংবাদিকরা কারণ জানতে চান। তখন তিনি বলেন, ইসি থেকে বেরিয়ে পথে শাহজানকে নামিয়ে দিই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সামনে যখন যাই, তখন ফোন আসে সাদাপোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন শাহজাহানকে ধরে নিয়ে গেছে। এ সময় তিনি বারবার বলতে থাকেন-এভাবে কেমন করে নির্বাচন করবো।



 

Show all comments
  • হতদরিদ্র দীনমজুর ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৯:১৫ এএম says : 0
    নির্বাচন কমিশন সত্যিই বিব্রত হওয়ারও কথা সারা দেশে যে ভাবে প্রচার প্রচারনা বাধা সৃস্টি করা হচ্ছে | তাতে ইসি প্রশ্নের সম্মুখিন হতে বাধ্য| আশা করি অতিদ্রুত নিবাচনি মাঠ সমতল করতে বলিস্ঠ পদখ্খেপ নিবেন|||
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ