Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রাম নগর ও পাশের পাঁচ আসন শীতেও ঘামছেন নৌকার মাঝিরা

বশ মানেননি মনোনয়নবঞ্চিতরা

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। কখনও নেতাদের রুদ্ধদ্বার সভা। কখনও কর্মীসভা। বৈঠক-সভার টার্গেট একটাই ‘নৌকার’ বিজয়। বিজয়ের জন্য চাই সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্য। কিন্তু অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়েও নেতা-কর্মীদের মাঝে সংশয়-সন্দেহ কাটছেই না। কেননা ‘নৌকার’ মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের বশে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল ও মহাজোটের অভ্যন্তরে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগরী এবং এর সংলগ্ন ৫টি আসনে। এরফলে শীতের মধ্যেও জেতার উপায় খুঁজতে গিয়ে ঘামছেন ‘নৌকার’ মাঝিরা। তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের মাঝেও চলছে পক্ষে-বিপক্ষে মেরুকরণ। কখনও পর্দার আড়ালে। কখনও প্রকাশ্যে তা চলছে। মহাজোটের নেতাদের কাছের ‘ঘরের সমস্যা’র কারণে মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম-৪ ও ৫, চট্টগ্রাম-৮ থেকে ১১ আসনগুলো।
মহানগরীর চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ-বায়েজিদ একাংশ) আসনে মহাজোটের প্রার্থী ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল জাসদ একাংশের নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদল। সেখানে ‘নৌকার’ মনোনয়ন বঞ্চিত মহানগর আওয়ামী লীগের দুই নেতা নুরুল ইসলাম বিএসসি এবং আবদুচ ছালাম। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা এই দুই বঞ্চিত এবং তাদের বিরাট সংখ্যক কর্মী-সমর্থকের ক্ষোভ-অসন্তোষ, মান-অভিমান ভাঙানোর জন্য মরীয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু বশে আনা যাচ্ছে না।
নগরীর চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে মহাজোটের ‘নৌকা’ প্রতীকে প্রার্থী মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সেখানে মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সদ্য পদত্যাগী প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এবং বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তাদেরকে নৌকার বিজয়ে একাট্টা করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নগরীর অপর দুই আসন চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) ‘নৌকার’ প্রার্থী বর্তমান এমপি ডা. আফছারুল আমীন। এ আসনে তিনি ছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সাবেক সিটি মেয়র বিশিষ্ট ব্যবসায়ী-সমাজসেবী এম মনজুর আলম। চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে মহাজোটের পক্ষ থেকে ‘নৌকার’ প্রার্থী বর্তমান এমপি, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সাবেক সভাপতি এমএ লতিফ। এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা খোরশেদ আলম সুজন।
মনজুর আলম ও সুজনকে ‘নৌকা’র প্রার্থীদের জয়ের লক্ষ্যে একাত্ম করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনসহ দলের প্রথম সারির নেতারা।
শহরতলীর চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনে মহাজোটের তরফে ‘নৌকার’ প্রার্থী বর্তমান এমপি মো. দিদারুল আলম। সেখানে আওয়ামী লীগ তৃণমূলে ত্রিধারায় বিভক্ত। একটি ধারার নেতা আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষিত হয়। তবে বশে আনা যাচ্ছে না বঞ্চিত বাকেরসহ দলের অন্য গ্রুপগুলোকে। তাছাড়া এ আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির দিদারুল কবির ‘লাঙল’ মার্কায় পৃথক অবস্থান বজায় রেখেই ভোটের লড়াইয়ে আছেন।
বন্দরনগরী সংলগ্ন চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে মহাজোটের ‘লাঙল’ প্রতীকে প্রার্থী শরিক দল জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। আসনটিতে ‘নৌকার’ মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম। সেখানে মহাজোটের মধ্যকার দূরত্ব প্রকট হয়ে উঠছে। মহাজোটের প্রার্থীকে নিয়ে সেখানে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মী, সমর্থকরা দ্বিধাবিভক্ত। উক্ত এলাকায় হেফাজতে ইসলামের অবস্থান মজবুত। তাদের সমর্থন কোন দিকে যাবে তা এখনও পরিস্কার নয়। এ অবস্থায় মহাজোট প্রার্থীর কপালে দুচিন্তার ভাঁজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ