পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টালিন সরকার : প্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার বাড়াতে দেশীয় ডেভেলপাররা বিভিন্ন কাজের জন্য বাংলা ভাষায় অ্যাপস তৈরি করছেন। এর অংশ হিসেবে বাংলা জোকস নিয়ে ‘বাংলা জোকস্ এক্টিভিস’ নামের মোবাইল অ্যাপস তৈরি করেছে ‘মিডিয়া টেক্সট কমিউনিকেশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ওই অ্যাপসে বাংলাদেশের প্রচলিত বিভিন্ন হাসি-তামাশার জোকস স্থান পেয়েছে। সেখানে বাসভাড়া কমানোর সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন জোকস্ আপলোড করা যেতে পারে। জোকস্ এমন হবে ‘বাসে পা দিলেই যাত্রীকে ৫ টাকা ভাড়া গুণতে হয়; প্রতি কিলোমিটার ৩ পয়সা ভাড়া কমলে যাত্রীদের কত টাকা সাশ্রয় হবে?’ এদেশে যে আম-জনতার আল্লাহ ছাড়া কেউ নেই সেটা আবারও প্রমাণ হলো। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ সেই উক্তি ‘--- থাকেন ঐ ভদ্রপল্লিতে; এখানে তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।’ সাধারণ মানুষের প্রতি সরকারের নীতি নির্ধারকদের বৈষম্যমূলক আচরণ-অবজ্ঞা-নিপীড়ন দেখে মনে হয় ‘এ রাষ্ট্র যেন ধনীদের জন্য গরিবের নয়’।
সারাবিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। ১২৫ ডলার ব্যারেল তেলের মূল্য নিচে নেমে এসেছে ২৫ ডলারে। তেলের মূল্য সারাবিশ্বে ৫ গুণ কমলেও ‘লোকসান কমানোর’ অজুহাতে দুই বছর ৫ গুণ দামও নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের ভোক্তাদের কাছ থেকে। প্রায় একবছর আগেই সরকার লোকসান তুলে নিলেও জ্বালানির মূল্য কমানোর প্রয়োজনবোধ করেনি। নানামুখী সমালোচনার মুখে আন্তর্জাতিক বাজারের দরের সঙ্গে দেশে জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষকে সুবিধা দেওয়ার বদলে রেন্টাল, কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ মালিকদের সুবিধা দিতে ৩১ মার্চ ফার্নেস অয়েলের দাম প্রতি লিটারে ১৮ টাকা কমানো হয়। এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ হলে গত ২৫ এপ্রিল অকটেন ও পেট্রোলের দাম লিটারে ১০ টাকা এবং ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৩ টাকা কমানো হয়। পেট্রোল-অকটেন প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে ব্যবহার হয়। আর কেরোসিন ও ডিজেল ব্যবহার করে সাধারণ গরিব মানুষ। প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের মালিকদের জন্য ব্যবহৃত জ্বালানির মূল্য ১০ টাকা কমালেও কৃষকের পানি সেচে ব্যবহৃত ডিজেল ও বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্ছিত মানুষের হারিকেন-কুপিতে ব্যবহৃত কেরোসিনের দাম মাত্র ৩ টাকা কমানো হয়। বাস মিনিবাস ডিজেলে চলে যার জন্য জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাস ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। এবার জ্বালানির মূল্য কমে যাওয়ায় সংগত কারণে বাসের ভাড়া কমানোর জনদাবি ওঠে। সরকার জনগণের প্রতি দরদী (!) মনোভাব নিয়ে বাসের ভাড়া কমানোর ঘোষণা দেয়। যথারীতি বাসের ভাড়াও কমানো হয় প্রতি কিলোমিটারে ৩ পয়সা। ইটস্ এ বিগ জোক!
দেশের ডিজেল চালিত বাস-মিনিবাসের প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ১ টাকা ৪৫ পয়সা এবং বাসে উঠলেই ৫ টাকা ভাড়া দিতে হবেই। এটা সরকার নির্ধারিত। কিন্তু কোনো বাস মালিক সে আইন মানেন না। রাজধানী ঢাকায় প্রতি কিলোমিটার বাস ভাড়া ২ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। কর্মজীবী মানুষ যাদের নিজস্ব যানবাহন ব্যবহারের সমর্থ নেই তারা বাধ্য হয়েই সে ভাড়া গুণছেন। সেখানে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রতি কিলোমিটার বাসভাড়া ৩ পয়সা কমানো হলো। এ যেন দেশের সাধারণ আম-জনতার যাতায়াত খবরের বিরাট সাশ্রয় করে দিয়েছে গণমুখী সরকার। যে দেশে ভিক্ষুক ২ টাকা ভিক্ষা নিতে চায় না সে দেশে কিলোমিটারে ৩ পয়সা বাস ভাড়া কমানো তামাশা নয় কি? প্রশ্ন হলো বর্তমানে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে কী পয়সা লেনদেনের প্রচলন আছে? বাংলাদেশ ব্যাংক কী ৫ পয়সা, ১০ পয়সা, ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সার কয়েন বাজারে ছাড়ে? যে ১ টাকা ২ টাকার কয়েন এবং ২ টাকার নোট বাজারে রয়েছে সেগুলো কেউ নিতে চায় না। যার জন্য দোকানদারেরা বাধ্য হয়েই কয়েন ও ১/২ টাকার বদলে চকলেট-সুইংগাম দেওয়ার প্রচলন করেছে। ফুটপাতে এক কাপ চায়ের দাম ১০ টাকা, এক শলাকা সিগারেটের দাম ১১ টাকা সেখানে বাসে খুচরা পয়সার লেনদেন হবে কেমন করে? সরকার নির্ধারিত সর্বনি¤œ বাসভাড়া ৫ টাকা। সেখানে প্রতি কিলোমিটারে ৩ পয়সা কমলে ভাড়া কমে ১৫ পয়সা। যাত্রীদের কীভাবে বাস কন্টাক্টর ১৫ পয়সা ফেরত দেবে?
প্রশ্ন হলো এ রাষ্ট্র এখন জনকল্যাণ; না ধনী কল্যাণমুখী? অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে দেশে ধনীরা দিন দিন ধনী হচ্ছে। আর মধ্যবিত্তরা হচ্ছে গরিব, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং গরিবরা হচ্ছেন মিসকিন। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার পর সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়া ও প্রত্যাশা নেই বললেই চলে। তারপরও সরকার করুণা করে বাস-মিনিবাসে যাতায়াতকারী যাত্রীদের জন্য কিলোমিটার প্রতি ৩ পয়সা ভাড়া কমিয়েছে। অতএব ধন্য ধন্য কেরাস গাওয়া ছাড়া সাধারণ মানুষের কী করার আছে? সাধারণ মানুষের প্রতি এমন ‘তামাশা’ করা কি সমীচিন?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।