পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে ব্যাপক গণসংযোগে নেমেছেন প্রার্থীরা। নৌকা-ধানের শীষের পক্ষে চলছে সরগরম প্রচার। দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের নিয়ে হেভিওয়েট প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের ঘরে ঘরে। পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে নগর থেকে গ্রাম। টানা ১০ বছর পর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। আর এ কারণে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পাশপাশি সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার মহানগরী ও জেলার ১৬টিসহ এ অঞ্চলের চার জেলার ১৯টি সংসদীয় আসনে প্রার্থীরা ভোটের প্রচারে নেমে পড়েছেন। চট্টগ্রামে প্রধান দুই জোটের মূল প্রতিদ্ব›দ্বীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র ১১৪ জন প্রার্থীর প্রায় সবাই গণসংযোগে ব্যস্ত ছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধরপাকড় আর পুলিশের ভয়ভীতির মধ্যে ভোটের প্রচারে নেমেছেন বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা। অন্যদিকে অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পুলিশের নিরাপত্তা নিয়েই বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। এরপরও বিএনপি নেতাদের গণসংযোগে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পক্ষান্তরে নৌকার প্রার্থীদের বহরে নেতাদের ভিড় ছিল বেশি।
গতকাল সকাল থেকেই মাঠে নেমে পড়েন চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। নগরীর ছোটপোল থেকে গণসংযোগ শুরু করে নির্বাচনী এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরেন তিনি। একই সময়ে গণসংযোগে নামেন চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ দুই প্রার্থীকে ঘিরে সাধারণ মানুষের ঢল দেখা যায় প্রতিটি এলাকায়। বিএনপি নেতারা সাধারণ মানুষকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান। তারা আশ্বাস দেন, এবার ভোট ছিনতাইয়ের কোন সুযোগ দেয়া হবে না।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন কারাবন্দি হলেও তার সমর্থনে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ হয়েছে। নাসিমন ভবনস্থ নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে খোলা হয়েছে তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়। দিনভর সেখানে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বাকলিয়াতেও ধানের শীষের সমর্থনে প্রচার-প্রচারণা চালায় দলের নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান দিনভর গণসংযোগ করেছেন।
চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ লতিফ গতকালও বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার স্বার্থে নৌকায় ভোট চান তিনি। চট্টগ্রাম-১০ আসনে নৌকার প্রার্থী ডা. আফছারুল আমীন এবং চট্টগ্রাম-৯ আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল দিনভর গণসংযোগে ব্যস্ত ছিলেন। নওফেলের সাথে একপর্যায়ে গণসংযোগে শরিক হন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। চট্টগ্রাম-৮ আসনে মহাজোটের প্রার্থী মঈনউদ্দিন খান বাদলও গণসংযোগ করেন।
সরকারি দলের প্রার্থীরা উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট চান। তারা দাবি করেন, নৌকা বিজয় না হলে উন্নয়ন থমকে যাবে। দেশ পেছনে চলে যাবে। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থীরা জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দেয়ার অঙ্গীকার করেন। তারা বলেন, হারিয়ে যাওয়া ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে নির্বাচনে শরিক হয়েছেন তারা। ধানের শীষে ভোট দিলে দুঃশাসনের অবসান হবে। মানুষ তার অধিকার ফিরে পাবে।
এদিকে প্রচারণা শুরু হলেও গায়েবি মামলায় ধরপাকড় অব্যাহত আছে। সীতাকুন্ডে বিএনপির নির্বাচনী জনসভা থেকে অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, সরকারি দল প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভয়ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও নতুন নতুন মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তিনি পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভ‚মিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, জনগণের বিরুদ্ধে যাবেন না।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের দাবি, পুলিশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় যা করণীয় তা করছে। কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিগত ১০ বছরে তাদের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড ভোটারদের সামনে তুলে ধরছেন। নৌকা বিজয় হলে দেশ উন্নয়নের ধারায় থাকবে বলে দাবি করেন তারা। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৯টি সংসদীয় আসনের প্রায় সবকটিতে সরকারি দলের প্রার্থীরা গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। ফটিকছড়িসহ কয়েকটি এলাকায় নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোথাও বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। ভোটের মাঠে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও কয়েকটি এলাকায় ভয়ভীতি ও সরকারী দলের বাধার মুখে ধানের শীষের প্রার্থীরা মাঠে নামতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে প্রার্থীরা যেকোন মূল্যে নির্বাচনী এলাকার প্রত্যেকটি ভোটারের কাছে যেতে চান। ধানের শীষের প্রার্থীরা বলছেন, এবারের নির্বাচন বাঁচা-মরার লড়াই। এ লড়াইয়ে পিছু হটার কোন সুযোগ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।