Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করুন

দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে সিইসি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে আস্থার পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি স্বীকার করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। ভোটারদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টির তাগিদ দিয়ে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, মানুষ যেন ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন। সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ভোটের উত্তাপ ছড়াক তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত যেন না হয়। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিংকালে তিনি এ নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, কে সাদা, কে কালো, কে রঙিন সেটা বিচারকদের একেবারেই দেখার বিষয় নয়। বিবেক দিয়ে তারা বিচার করবেন। বিচারকদের মানুষ শ্রদ্ধা করেন। কাজীর আমল থেকেই বিচারকরা যে সিদ্ধান্ত দিতেন সেটা মানুষ মান্য করতেন, এখনো করেন। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত আশাবাদী, আপনারা যদি মাঠে থাকেন, আপনাদের পদচারণায় এই নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর হবে। মানুষের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। মানুষ যেন ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন। সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
সিইসি বলেন, এটা বলার এবং বোঝার অপেক্ষা রাখে না যে, নির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে, উত্তাপের এই পরিবেশ যেনো উত্তপ্ত না হয়। উত্তপ্ত হয়ে নির্বাচনী পরিবেশ যেন ব্যাহত না হয়, ব্যাঘাত না ঘটে। সে কারণে এই আয়োজন। আমাদের কাজ শুধু ৩০ তারিখ। সেদিন ভোট হবে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ করা, যেন কোনো সংঘাত না হয়, ভুল বোঝাবুঝি না হয়। প্রার্থী ভোটার সবাই যেনো নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলেন, সেটা বুঝিয়ে দেয়া। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। একটা সময় সাধারণ মানুষ ও বিচারকদের মধ্যে একটা অদৃশ্য কৃত্রিম দেয়াল ছিল। সেটি ক্রমেই সরে যাচ্ছে। আমি মনে করি, যারা বিচার করবেন এবং যাদের মধ্যে বিচার তাদের মধ্যে এতো বড় দেয়াল থাকার প্রয়োজন ছিল না। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সেই দেয়াল আরো কিছুটা শিথিল হবে। মানুষের কাছাকাছি গিয়ে বুঝতে পারবেন তারা কি চায়। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বপালনের ক্ষেত্র আরো প্রশস্ত হবে। বিচারকদের মানুষের সঙ্গে মিশলে ক্ষতি নেই। মিক্সড আপ হবেন না। আপনার ব্যক্তিত্ব কতটা শক্তিশালী তার ওপর নির্ভর করে আপনি প্রভাবিত হবেন কি হবেন না। আইন, বিবেক আছে, আপনাদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা, ব্যক্তিত্ব প্রয়োগ করে একটি সুন্দর-সাবলীল নির্বাচন করতে পারবেন।
নুরুল হুদা বলেন, বিচারকরা বিচারক। কে সাদা, কে কালো, কে রঙিন সেটা বিচারকদের একেবারেই দেখার বিষয় নয়। বিচার কার্যটাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করবেন এটাই আমাদের কামনা। বিচার করে একেবারে জেলে পাঠিয়ে দেবেন এটাও কাম্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এর জন্য যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই প্রয়োগ করবেন।
নির্বাচনের পরের দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগের দিন ও নির্বাচনের দিন যতটা না সংঘাত হয়, তার থেকে বেশি সংঘাত হয় নির্বাচনের পরের দিন। অতিউৎসাহী লোক ও প্রতিহিংসা পরায়ণের কারণে এসব হয়ে থাকে। ভাটের পরের দিন মিছিলের কারণে অনেকের মনে আঘাত লাগে, অনেকে কষ্ট পায়। এতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হয়। এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে, সজাগ থাকতে হবে। নির্বাচনী আইনে আছে নির্বাচনের পরের দিন কোনো শোডাউন হবে না। এটাকে কঠোরভাবে দেখতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা সৃষ্টির আগের অবস্থানে আপনারা অবস্থান করবেন। কেউ যেনো কোন ধরনের সহিংসতার প্রস্তুতি না নিতে পারে। সেটাই যথেষ্ট। সেখানে তড়িৎগতিতে আপনাদের উপস্থিতি, সারাদেশে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখবে। ওটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কমিশন অত্যন্ত আশাবাদী, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে থাকবে। হাজার হাজার মানুষ থাকবে। সব রাজনৈতিক দল একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে নির্বাচন শুরু করে দিয়েছে। এতো বড় নির্বাচনে এখন পর্যন্ত কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। আপনারা যখন মাঠে যাবেন আর কোনো সংঘাত ঘটবে বলেও মনে করি না। আপনারা সফল ও সার্থক নির্বাচন করবেন বলেও আশাবাদী।
আইনানুগ নির্বাচনের কথা মুখে না বলে কাজে করে দেখানোর আহ্বান জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, কালো টাকা আর পেশিশক্তির প্রভাব খাটানো বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের উৎসব যেন কোনো অবস্থাতেই প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়, সেজন্য বিচারকদের যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। আর নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, আইনের চোখ বাঁধা থাকলেও অন্তরের চোখ দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য কাজ করতে হবে।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৯:৪৭ এএম says : 0
    EC shaheb astar poribesh toiri korar jodi shot ichsa thake tobe apni ta korte paren polish o onnano ayn sringkhola bahinito apnar hate nirbachon shushto korar khomotao apnar hate tobe keno bivonno rokom boktobbo dia jonogonke bivranto korsen?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ