পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
রূপগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা ঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্যাসের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে গ্যাস না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। গ্যাসের চুলায় রান্না করতে না পেরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। অনেকে মাটির চুলা তৈরি করে রান্না করছেন। আবার অনেকেই এলপি গ্যাস ব্যবহার করছেন। গ্যাস সঙ্কটে শিল্প প্রতিষ্ঠানেও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে গ্যাসের প্রেসার স্বাভাবিক না হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধসহ বৃহৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আবাসিক গ্রাহক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা।
তিতাস সূত্র ও গ্রাহকরা জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৪ ইঞ্চি, ৩ ইঞ্চি, ২ ইঞ্চি ও ১ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ লাইন রয়েছে। আবাসিক গ্যাস ব্যবহারের জন্য লো-প্রেসারের পাইপ লাইনে ৫০ পিএসআইজি গ্যাস থাকার কথা রয়েছে। এ উপজেলায় বৈধ আবাসিক গ্যাস সংযোগের গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৮ হাজার। এছাড়া ১৫০ পিএসআইজি হাই প্রেসারের পাইপ লাইন রয়েছে। ওই সব পাইপ লাইনের আওতায় প্রায় দের শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানে বৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে পাইপে ৫০ পিএসআইজি প্রেসার থাকার কথা থাকলেও সেখানে প্রেসার রয়েছে মাত্র ১ বা ২ প্রেসার। কোন কোন সময় শূন্যের কোঠায় এসে পড়েছে। হঠাৎ করে গ্যাসসঙ্কট হওয়ায় গ্রাহকদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অনেকের রান্না করতে না পেরে বাহিরের হোটেল থেকে খাবার ক্রয় করতে হয়েছে।
আবার কেউ কেউ হালকা খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। মধ্যম ও নি¤œ আয়ের গ্রাহকরা গ্যাস সঙ্কটের কারণে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে উপজেলার ভুলতা, গোলাকান্দাইল, সাওঘাট, পাঁচাইখা, মাছিমপুর, রূপসী, বরাব, যাত্রামুড়া, তারাব, মাঝিপাড়া, সোনাব, মর্তুজাবাদ, ভায়েলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এ গ্যাস সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের রান্না করা খাবার না খেয়ে হালকা খাবার খেয়ে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। অনেক গ্রাহক গ্যাস পাইপ লাইনে কমপ্রেসার ব্যবহার করে গ্যাস টেনে আনছেন। এতে করে গ্যাসের প্রেসার বেড়ে গিয়ে যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ পদ্ধতিতে গ্যাস ব্যবহারের কারণে অন্যসব গ্রাহকরা একেবারেই গ্যাস পাচ্ছেন না। শুধু তাই নয়, হাইপ্রেসারের পাইপ লাইনে ১৫০ পিএসআইজি প্রেসার থাকার কথা থাকলেও সেখানে প্রেসার থাকছে মাত্র ২ থেকে ৪ পিএসআইজি। পাইপ লাইনে গ্যাসের প্রেসার না থাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় বন্ধের পথে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে উৎপাদন পরিচালনা করে আসছেন। অনেক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে শিল্প প্রতিষ্ঠানে ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্যাস সঙ্কটের কারণে প্রায় শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে।
অপর দিকে, গ্যাস সঙ্কট থাকলেও আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি চুলায় ৬৫০ টাকা মাসিক বিল গুনতে হচ্ছে। গ্যাস ব্যবহার করতে না পারলেও এসব গ্যাসের বিল বাধ্যতামূলক দিতে হবে। অন্যথায় গ্যাসের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় দ্রæত গ্যাসের প্রেসার বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন গ্যাসের আবাসিক গ্রাহকরা। পথে বসতে শুরু করেছে শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা। গ্যাসের প্রেসার স্বাভাবিক পর্যায় না আসলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধসহ বৃহৎ আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আবাসিক গ্রাহক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা।
ব্যবসায়ী শফিকুল আলম ভুইয়া বলেন, হঠাৎ করে গ্যাসের প্রেসার কমে যাওয়ায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এভাবে স্থানীয় তিতাস অফিসে যোগাযোগ করা হলেও কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোন সুরাহ দিতে পারছেন না।
এসিএস টেক্সটাইল বাংলাদেশ লিমিটেড-এর নির্বাহী পরিচালক জহিরুল কবির বলেন, গ্যাস সঙ্কটের কারণে গত এক মাসে মিলের উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এভাবে চলতে থাকলে মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অলটেক্স পোশাক কারখানার ম্যানেজার বাহাদুর বলেন, গত ১০ দিন যাবৎ কারখানার উইভিং সেকশন বন্ধ রয়েছে।
অনন্ত পেপার মিলের এজিএম নুর মোহাম্মদ বলেন, গ্যাস সঙ্কটের কারণে কারখানার ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৪টি ইউনিটই বন্ধ রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ওই ১টিও বন্ধ হয়ে যাবে।
অনিক কম্পোজিট কারখানার চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, কারখানার চার ভাগের এক ভাগ চলছে। বাকি তিন ভাগই বন্ধ হয়ে গেছে। এখন শিল্প ব্যবসায় ধস ছাড়া চোখে কিছুই দেখতে পারছি না।
এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁও শাখার ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আতিকুল হক সিদ্দিকী বলেন, শীতের কারণে অনেক সময় গ্যাস সঙ্কট দেখা যায়। তবে এ বিষয়টি গ্যাসের সিষ্টেম অপারেশন বিভাগ ডেমরা শাখা বলতে পারবে।
তিতাস গ্যাসের সিষ্টেম অপারেশন বিভাগ ডেমরা শাখার ম্যানেজার প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।