Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বে ’৯১ আইনে ব্যবস্থা

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ইসি মাহবুব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:৩৬ এএম

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, আপনারা সংবিধান ও আইনের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করবেন। মূলত সাংবিধানিক দায়িত্ব ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আজ থেকেই নির্বাচনী ডামাঢোল শুরু হয়ে গেল। বাকিটা মাঠে আপনাদের দায়িত্ব। এদিকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংরক্ষণ ও পরিপালনের পূর্বশর্ত হলো আইনের শাসন। আইনের শাসন না থাকলে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে আমরা হলুদ গণতন্ত্র বলতে পারি। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে হলুদ গণতন্ত্র চাই না। কেউ শিথিলতা ও পক্ষপাতিত্ব করলে ১৯৯১ সালের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল সোমবার সকালে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। প্রথম ধাপের ব্রিফিংয়ে গতকাল ২১৫ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নিয়েছেন। তিন ধাপে মোট ৬৪০ জন জুডিশয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্রিফ করবে কমিশন। ভোটগ্রহণের আগের দিন, ভোটগ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের পরের দুই দিন নির্বাচনের মাঠে নিয়োজিত থাকবেন তারা। সিইসি বলেন, আপনি স্বাধীন, আপনি নিরপেক্ষ, আপনি বিচারক, বিচারকের মাইন্ড আপনাকে অ্যাপ্লাই করতে হবে। আতঙ্ক নয়, কমিশন চায় আস্থার একটি পরিবেশ। কোন দল বা পক্ষের নয়, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় কমিশন। বৈষম্যের ঊর্ধ্বে থেকে রাগ-অনুরাগ প্রশ্রয় না দিয়ে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞা ও মেধা খাটিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে হবে। আতঙ্ক নয়, কমিশন চায় আস্থার একটি পরিবেশ।
সিইসি বলেন, নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠুভাবে করবেন, সেটি আপনি আপনার মেধা, প্রজ্ঞা দিয়ে বিবেচনা করবেন। সংবিধান, জাতি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারের কাছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনেরর জন্য কমিশন দায়বদ্ধ। এসময় তিনি আস্থা অর্জনের জন্য নিরপোক্ষভাবে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন সিইসি। তিনি বলেন, ছয়শ জনের বেশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি মাঠে থাকবেন। আতঙ্ক নয়, কমিশন চায় আস্থার একটি পরিবেশ।
সিইসি বলেন, কোন দল বা পক্ষের নয়, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় কমিশন। মেধা প্রজ্ঞার সাথে ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব পালনের আহবান জানান সিইসি। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের সরব উপস্থিতি চায় কমিশন। কেউ শিথিলতা ও পক্ষপাতিত্ব করলে ১৯৯১ সালের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠুভাবে করবেন, সেটি আপনি আপনার মেধা, প্রজ্ঞা দিয়ে বিবেচনা করবেন। সংবিধান, জাতি, রাজনৈতিক দল ও ভোটারের কাছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশন দায়বদ্ধ।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, এবারের নির্বাচনে একটাই স্বপ্ন, কোনো প্রার্থী যেন ভোটের মাধ্যমে নিজের জয় নিশ্চিত না করে জাতীয় সংসদে আসতে না পারেন। মাহবুব তালুকদার বলেন, বিচারকের দৃষ্টি হতে হবে নির্মোহ। যিনি অবশ্যই আইনানুগ মন বা লিগাল মাইন্ডের অধিকারী হবেন। যিনি এই অবস্থান থেকে বিচ্যুত হবেন, তিনি বিচারকের যোগ্যতা হারাবেন। আমরা বলে থাকি, নির্বাচন আইনানুগ করতে হবে। এ কথাটার ব্যাখ্যা প্রয়োজন। আইন যদি নিজস্ব খাতে প্রবাহিত না হয়, তাহলে আইনানুগ কথাটা অর্থহীন হয়ে পরে। আইনের মূল কথা হচ্ছে সকল নাগরিকের প্রতি সম আচরণ। আইনের চোখে সবাই সমান- এই আপ্ত বাক্যের কোনো একক অভিব্যক্তি নেই। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সবাই সম অধিকার ভোগ করে কি না, সেটাই বিবেচ্য। জাতীয় নির্বাচনে সবার প্রতি সকল আইন নিরপোক্ষভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কি না, তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে আপনাদের সর্বোচ্চ সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন ভুয়া সাক্ষ্য প্রমাণে শাস্তি না পায়। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক সর্বজনীন ও পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন করতে চাই। এ জন্য কেবল দেশবাসী নয়, বিশ্ববাসী এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। মাহাবুব তালুকদার বলেন, আমি মনে করি, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের এক সোনালী অধ্যায় রচনা করবে। সেই সোনালী অধ্যায়ের রুপদানকারী আপনারা। আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করা। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আপনারা এক মহান দায়িত্ব নিয়েছেন। নির্বাচনের শুদ্ধতায় আপনাদের অবদান জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।
তিনি বলেন, একজন ভোটার নির্বিঘ্নে বাড়ি থেকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ইচ্ছানুযায়ী প্রার্থীকে ভোট দিয়ে যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, এটুকুই তো চাওয়া। রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই সামান্য চাওয়া বাস্তবায়িত করতে এক বিশাল কর্মযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় ১২ লাখ কর্মকর্তা কর্মচারী নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রমুখ।



 

Show all comments
  • Mokibul Mukut ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৩৩ এএম says : 0
    কথায় নয়, কাজে প্রমাণ চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • D M Nurul Amin ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৩৪ এএম says : 0
    কথা আর কাজে কোন মিল নেই। সাজাপ্রাপ্ত হাজী সেলিম কে বৈধ আর খালেদা জিয়াকে অবৈধ বলেছেন। আপনারা আওয়ামীলীগ। একদিন আপনাদের ও বিচারের কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে। ভুলে যাবেন না।
    Total Reply(0) Reply
  • Mujibur Rahman ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৩৪ এএম says : 0
    সুষ্ঠু নির্বাচনের প্ল্যান থাকলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এতো শত শত বিধি নিষেদ আরোপ কেন ? ছবি তোলাতে বিধিনিবেশ কেন ? মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকতে বলা কেন ? সম্প্রচার করতে নিষেধ কেন ?
    Total Reply(0) Reply
  • Md Atikul Islam Rana ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৩৫ এএম says : 0
    আপনারা কোন দলের কিনা এটাতো জনগণের মধ্যে পরিস্কার এক দেশে দই আইন এক দিকে আওয়ামীলীগ এর দলীয় লোকের ছত্রছায়ায় কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণের মৌলিক অধিকার হরন করার জন্য আপনাদেরকে জনতার আদালতে একদিন দারাতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kawsar Shah ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৩৭ এএম says : 0
    এ পর্যন্ত কোন কাজই নিরপেক্ষতার প্রমান দিতে ইসি ব্যর্থ হয়েছে। কথায় নয় কাজে প্রমান করে দেখান!!
    Total Reply(0) Reply
  • Mehotab Hakim Neel ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৩৮ এএম says : 0
    দলীয় সরকারের অধীনে আপনি সুস্থ নির্বাচন করে ইতিহাস গড়বেন আশাকরি। দেশবাসি আপনাকে ইতিহাসের পাতায় দেখতে চায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Mahbub Rahman ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ২:৩৯ এএম says : 0
    আপনারা ৫ জন কমিশনারই এক মত হতে পারছেন না তাহলে জাতি আপনাদের কাছ হইতে কিভাবে সুষ্ট নির্বাচন আসা করতে পারে। আপনারা এখনও নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে পারেন নাই আপনাদের কথায় কাজে এখনও কোনো মিল দেখা যাচ্ছে না। এখনও দর পাকড় অব্যাহত প্রসাশন এখনও সরকার নিয়ন্ত্রিত।লেবেল পিলট এখনও তৌরি করতে পারেন নাই। এইসব অভিযোগ আপনাদের বিরুদ্ধে।জাতি আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আপনারা জাতিকে একটা সুষ্ট নির্বাচন উপহার দেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Engr Amirul Islam ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৭:০৬ এএম says : 0
    Except Mahbub all of you are Awami league activist so don't tell lie. One day people will punish you for your slavery
    Total Reply(0) Reply
  • ইমরান হসাইন ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:১৫ এএম says : 0
    ইসিকে বলছি!!!! আপনারা বরাবর সরকারের নিরদেশনার দিকে চেয়ে থাকেন। কেন? আপনারাতো স্বাধীন, স্বাধীনভাবে কাজ করেন জনগন সারাজীবন আপনাদের মনে রাখবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ