পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’ (শামসুর রাহমান)। কবিতার এই পংক্তি ঘুরিয়ে বলা যায় ‘উদ্ভট ভাবে চলছে জাতীয় পার্টির রাজনীতি’। তিনশ আসনের প্রার্থীরা যখন নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন; তখন রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ দলকে রুহুল আমিন হাওলাদারের ‘হাওলায়’ তুলে দিয়ে কবিতার উটের বদলে বিমানের পিঠে চলে বিদেশ গেলেন। দলের ‘চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী’ হাওলাদারের হাওলায় জাতীয় পার্টিকে দেয়ায় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ ও কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের কার্যত ‘মাইন্যাস টু ফর্মূলায়’ পড়ে গেছেন। এরশাদের অসুস্থতা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই বাতাসে ভাসছে নানা গুঞ্জন। তিনি সিএমএইচে ভর্তি হন। দলের নেতাকর্মীদের একেক সময় তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত ভিন্ন তথ্য দেন. নরম-গরম কথা বলেন।
প্রশ্ন ওঠে, মনোনয়ন বাণিজ্য ও দলের নেতাকর্মীদের তোপ থেকে বাঁচতেই এরশাদ নিজেকে পর্দার আড়ালে রাখেন। দলের নতুন মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা সংবাদ সম্মেলন করে জানান, দূতাবাস রোডের প্রেসিডেন্ট পার্ক বাসায় থাকতে ভয় পাওয়ায় এরশাদ রাতে সিএমএইচএ যান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহাজোটের নিয়ন্ত্রক আওয়ামী লীগের কাছে এইচ এম এরশাদ হচ্ছেন গল্পের ‘মিথ্যাবাদী রাখাল বালক’ চরিত্র। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের আগে হঠাৎ কর তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিপাদে ফেলেন। ভারতের ওই সময়ের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং এর ‘আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর’ প্রস্তাব প্রকাশ করে দিল্লির কূনজরে পড়েন। তখন চিকিৎসা নিয়ে অস্বীকার করা অবাধ্য বালকের মতো ধরে নিয়ে সিএমএইচএ চিকিৎসা দেয়া হয়। রওশন এরশাদকে দিয়ে জাতীয় পার্টিকে পাতানো ভোটে রাখা হয়। এবারও ড. কামাল-বি চৌধুরী-রব-কাদের সিদ্দিকী-মান্নার জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন জিএম কাদের। ক্ষমতাসীনদের ভয় ছিল আনপ্রেসিক্টেবল এরশাদ অধিক আসন পেলে যে কোনো সময় নৌকা (মহাজোট) থেকে ঝাপ দিয়ে ধানের ক্ষেতে (ঐক্যজোট) পড়তে পারেন। এ আশঙ্কা থেকেই তাকে অসুস্থতা দেখিয়ে পর্দার অন্তরালে রাখা হয়। সিদ্ধান্ত হয় ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর ডিগবাজি দেয়ার সুযোগ থাকবে না; তখন তিনি বিদেশ যেতে পারবেন। জাপার মহাসচিব রাঙ্গা প্রথম দিন সংবাদ সম্মেলন করে সে তথ্য দিয়ে জানান ১০ ডিসেম্বরের আগে নয় পরে স্যার (এরশাদ) বিদেশ যাবেন। ময়মনসিংহ-৪ রওশন এরশাদ এবং লালমনিরহাট-৩ এ জিএম কাদের মহাজোটের প্রার্থী হলেও দলে সাংগঠনিকভাবে তারা কার্যত ‘মাইন্যাস টু ফর্মুলায়’ পড়ে ‘সো-পিছে’ পরিণত হয়েছেন। দলের প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন ক্ষমতা মসিউর রহমান রাঙ্গার হাতে দেয়া হলেও এরশাদ নিজের অবর্তমানে ‘চেয়ারম্যানের সার্বিক সাংগঠনিক দায়িত্ব’ পালনের ক্ষমতা দিয়েছেন এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের হাতে।
ঋণ খেলাপের অভিযোগে পটুয়াখালী-১ আসনে রুহুল আমিন হাওলাদারের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেলে আকস্মিকভাবে দলের মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে রাঙ্গাকে মহাসচিব করা হয়। এক সাপ্তাহের মাথায় হাওলাদারকে চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী পদে বসিয়ে সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হয়। এতে দলীয় ক্ষমতায় মাইন্যাস হয়ে যান রওশন ও জিএম কাদের। সবশেষ নির্বাচন কমিশন হাইকোট হয়ে রুহুল আমিন হাওলাদার প্রার্থীতা ফিরে পান। কিন্ত ততদিন সব শেষ। পটুয়াখালী-১ আসনে আওয়ামী লীগ নৌকার প্রার্থী দিয়েছে। এখন জাপার সর্বময় ক্ষমতা পেলেও ভোটের মাঠে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে লাঙ্গল নিয়ে লড়তে হবে রুহুল আমিন হাওলাদারকে।
দায়িত্ব নেওয়ার পর গত সপ্তাহে নতুন মহাসচিব রাঙ্গা বলেন, এরশাদ এখন ‘হান্ড্রেড পারসেন্ট ফিট’। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার পর শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘ভয়ে থাকেন’। রাতে বাসায় ঘুমাতে ভয় পাওয়ায় তিনি সিএমএইচে যান। মহাজোটের আসন ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত হলে ১০ ডিসেম্বরের পর এরশাদ বিদেশে যেতে পারেন। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে এরশাদ নাটকীয় অসুস্থতা নিয়ে সিএমএইচে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি এমপি নির্বাচিত হন এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পান। এবারও একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ‘অসুস্থ’ এরশাদের সিএমএইচে ভর্তির খবর প্রচার হওয়ায় নানামুখি গুঞ্জন শুরু হয়। এর মধ্যেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নভেম্বরের শেষ দিকে বলেন, এবার এরশাদের অসুস্থতা ‘রাজনৈতিক‘ নয়; তিনি ‘সত্যিই’ অসুস্থ। তাকে দুই-এক দিনের মধ্যে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হতে পারে। এরশাদকে নিয়ে কটুক্তি না করার জন্য দলের নেতাদের সতর্ক করে দেন। এদিকে আসন ভাগাভাগিতে ২৬টি আসন পাওয়ায় ‘অসন্তুষ্ট’ জাতীয় পার্টি মাহজোটের বাইরে প্রায় দেড়শ আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী দিয়েছে। জানতে চাইলে জাপার বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, দলের বিক্ষুব্ধ নেতাকার্মীদের ছেলে ভোলানো বুঝ দেয়ার জন্যই এতোগুলো আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী দেয়া হচ্ছে। এই প্রার্থী দেয়ার পিছনে চালাকি রয়েছে। এরশাদের অবস্থা যেন নির্বাচন নিয়ে কমরেড তোয়াহার ঐতিহাসিক বক্তব্য ‘ --- তোমরা করো ভোটের গান/ আমি যাই সুন্দরবন’। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।