পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাষ্ট্রের অর্থের অপব্যবহার করে সরকারি দল ও মন্ত্রীরা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে, সুচিন্তিতভাবে একটা ভয়াবহ রকমের, জঘন্যরকমের অপপ্রচারে সরকার মেতে উঠেছে। এটা
করতে গিয়ে তারা সরকারি অর্থ ব্যয় করে সোশ্যাল মিডিয়া, দেশের প্রিন্টিং মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমকে ব্যবহার করছে। এধরণের অপপ্রচার বন্ধ না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গতকাল (সোমবার) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
সরকারি দল ও মন্ত্রীরা জঘন্য মিথ্যাচার শুরু করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গত রোববার বিভিন্ন পত্রিকায় একটা সিন্ডিকেটেড নিউজ ছাপানো হয়েছে যে, পাকিস্তানের দূতাবাসের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি এবং তথাকথিত আইএসআইয়ের সঙ্গে লন্ডনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বৈঠক করেছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এটা বলেছেন। ওবায়দুল কাদেরের মতো একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের মতো দলের সাধারণ সম্পাদকের মুখ দিয়ে এই ধরণের চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন জঘন্য মিথ্যাচার হয় সেটা শুধু অপ্রত্যাশিত ও অনাকাক্সিক্ষতই নয়, এটা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের প্রতি জঘন্য আঘাত বলে আমরা মনে করি। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও প্রতিবাদ করছি। আমি খুব দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি যে, এই ধরনের কোনো বৈঠক কখনোই আমাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়নি এবং লন্ডনেও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কোনো সংস্থার সাথে কোনো রকমের বৈঠক হয়নি। এটা শুধুমাত্র বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং এটা জঘন্য মিথ্যাচার। আমরা এহেন বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে বাধ্য হবো।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একটা প্রবণতা আছে তারা সব সময় বিএনপিকে এমন এমন কিছু সংস্থা ও দেশের সাথে যুক্ত করতে চায় যার মাধ্যমে বিএনপি হীন অবস্থায় নিতে চায় এবং বিপদে ফেলতে চায়। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, বিএনপির কোন সংস্থা বা অন্য কোন দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপি কখনই ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করেনি। বিএনপি সব সময় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে।
বিএনপির সমর্থিত সোশ্যাল মিডিয়ার এ্যাক্টিভিস্টদের গ্রেপ্তার করার অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট করেছেন, আইসিটি অ্যাক্ট, ৫৭ ধারা করেছেন। এসব করতে গিয়ে তারা সমস্ত স্বাধীন চিন্তা, মুক্ত চিন্তা, বাক স্বাধীনতাকে হরণ করেছেন। কিছুদিন আগে তারা (সরকার) শীর্ষ নিউজসহ ৫৮টি নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দেয়ার প্রস্তাব করেছে। এভাবে তারা মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশকে রক্ষা করতে হলে মিডিয়াকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের জানা মতে তিন‘শ উপরে আইডি খোলা হয়েছে তাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, নোংরা ছবি, বানোয়াট গল্প প্রচার করা। সরকার নগ্নভাবে অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টদের
বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তা নিকৃষ্টতম ফ্যাসিবাদ ছাড়া আর কিছুই না। প্রধানমন্ত্রীর তনয় সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক আইডিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের একটি কার্টুন দেখিয়ে তিনি বলেন, কার্টুন দিতেই পারেন। সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক নেতাদের কার্টুন আসতেই পারে। যখন আওয়ামী লীগের নেতা, প্রধানমন্ত্রী অথবা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের কার্টুন দেয়া হয় তখন তাদেরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামের মহিলা তাকেও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার একটা ছবি দেখেন। যখন আমি রাঙ্গামাটি যাচ্ছিলাম, সেই পথে আমার ওপর আক্রমণ করা হয়, আমাদের গাড়ি ভেঙে দিয়ে আমার কাপড়-চোপড়গুলো ছিঁড়ে যায়, রক্তাক্ত হয়। তখন একটা ছবি আপনারা (সাংবাদিকরা) নিয়েছিলেন। এই ছবিটাই গত পরশু আমাদের এখানে কিছু কিছু মনোনয়ন প্রত্যাশীর সমর্থকরা বিক্ষোভ করছিলেন তাদের মধ্য দিয়ে আমি যাওয়ার সময়ে বেরিয়ে যাই। তখন ওই ছবি দিয়ে বলেছি সেদিন নাকী আমার এই অবস্থা হয়েছে। এ যে চরিত্র হনন করা এসব তাদের স্বভাবজাত। এদের বিরুদ্ধে কিন্তু মামলা হয় না। মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমরা মামলা শুরু করবো। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। দেখব সরকার কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বিভিন্ন সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের দুর্নীতির ওপর পোস্ট দেয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়া অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট লায়ন আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির, কে এম হারুন, রেজোয়ানুল হক শোভন, ওয়াসীম ইফতেখার, রাজন ব্যাপারী, মো. ইভান, ফসিউল আলম, জাহিদ হাসান, ইকবাল চৌধুরী, সজীব পাইলট, মাহফুজুল হকসহ গ্রেপ্তার হওয়ার সোশ্যাল মিডিয়ার ও অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান
ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা জিএম ফজলুল হক, শহীদুল ইসলাম বাবু, আবদুল আউয়াল খান, এসএম জিলানী, আমিরুজ্জামান শিমুল, তাবিথ আউয়াল, শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার হওয়ার অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।