Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারের নির্দেশে খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল : বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সরকারের হুকুমেই বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে একজন কমিশনারের সঠিক রায়কে উপেক্ষা করে স্বার্থসন্ধানী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে বাকি কমিশনার’রা বিভক্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ আদেশ দিয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। আপিল শুনানী চলাকালে আইনগতভাবে ন্যায়ের পক্ষে রায় না দিয়ে বিনা কারণে সময়ক্ষেপণ করেছে নির্বাচন কমিশন। সরকারি দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা আসার পর খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। গতকাল (রোববার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এদিকে যখন বিনা কারণে ইসি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানিতে সময়ক্ষেপণ করছিল, তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী থেকে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আইনগতভাবে খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন না। এর এক ঘন্টার মধ্যেই আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে ছুটে যান এবং নির্বাচন কমিশনকে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বিষয়ে সতর্ক করেন। প্রতিনিধি দল বলেন, ইসিকে সতর্ক করতেই তারা কমিশনে এসেছেন এবং আরও বলেন, সাংবিধানিকভাবে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার কোন সুযোগ নেই। এর কয়েক ঘন্টা পরেই নির্বাচন কমিশন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল করে। মূলত: তারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশনা দিতেই আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়েছিলেন।
বিএনপির এই নেতা বেলন, আওয়ামী লীগ সবসময় বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাকে নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে। আইনগতভাবে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচন করতে কোন বাধা না থাকলেও গভীর চক্রান্ত ও মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই নির্বাচন কমিশন তাঁর মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছে। সিইসি’র নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন অনেক দন্ডপ্রাপ্ত লোকের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন, যেমন ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পংকজ দেবনাথ, হাজী সেলিম, মহিউদ্দিন খান আলমগীর (ম খা আলমগীর) এবং নাজমুল হুদাসহ অনেকেরই মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষনা করেছে ইসি। তাহলে বেগম জিয়ারটা নয় কেন? নয় এজন্য যে, বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন অবৈধ করতে সিইসি’র প্রতি শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বেগম জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন-যা সম্পূর্ণভাবে হাস্যকর। বেগম জিয়া তো কারাগারে, তাহলে তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেন কিভাবে?
আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে চারিদিকে মৃত্যুর পদশব্দই শোনা যাবে আশঙ্কা প্রকাশ করে রিজভী বলেন, দেশে এখন গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও নির্যাতনে মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। গত দশ বছরে কেবলমাত্র বিএনপিরই ২০ হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। দেশে এখন প্রতিদিনই ২/৩ জন মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে। আবারও আওয়ামী লীগ জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে চারিদিকে মৃত্যুর মর্মরিত পদশব্দই শোনা যাবে। লাখ লাখ বিএনপি এবং বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ সমর্থকদেরকে নিজ গৃহ থেকে উচ্ছেদ হয়ে দেশ ছাড়তে হবে, কমপক্ষে কয়েক লাখ লোকের জীবন বিপন্ন হবে। বাড়িতে বাড়িতে কান্নার রোল উঠবে। সরকারি দলের জয়গান করা ছাড়া গণমাধ্যমের আর কোন কাজ থাকবে না। মানুষ হাসতেও পারবে না, কাঁদতেও পারবে না। ভিন্নমত ও বিশ্বাস চিরদিনের জন্য গোরস্থানে নির্বাসিত হবে।
নির্বাচনে অভিমান না রাখতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই চরম ক্রান্তিকালে আমরা এক অকল্পনীয় আওয়ামী জুলুমের জাহিলিয়াতের পরিস্থিতিতে নির্বাচন করছি। জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য গণতন্ত্র ও গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। তারেক রহমানকে সসম্মানে দেশে ফিরিয়ে আনা। এই নির্বাচন হলো আমাদের আন্দোলন। ভোটের আন্দোলন। আমাদের দায়িত্ব হলো বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি তথা দেশকে মুক্ত করার এই আন্দোলনের ভোটে কোন ধরণের অভিমান রাখা যাবে না। বেগম জিয়ার মুক্তি ও দেশের স্বার্থে সবাইকে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ