Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারের নির্দেশে খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:৫২ পিএম

সরকারের হুকুমেই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে একজন কমিশনারের সঠিক রায়কে উপেক্ষা করে স্বার্থসন্ধানী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে বাকি কমিশনার’রা বিভক্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ আদেশ দিয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। রোববার (৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিনি একথা বলেন।
রিজোভী বলেন, আপিল শুনানী চলাকালে আইনগতভাবে ন্যায়ের পক্ষে রায় না দিয়ে বিনা কারণে সময়ক্ষেপণ করেছে নির্বাচন কমিশন। সংবাদ পেয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেন যে, আইনগতভাবে খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন না। এর এক ঘন্টার মধ্যেই আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে ছুটে যান এবং নির্বাচন কমিশনকে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বিষয়ে সতর্ক করেন। প্রতিনিধি দল সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ইসি-কে সতর্ক করতেই তারা কমিশনে এসেছেন এবং আরও বলেন, সাংবিধানিকভাবে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার কোন সুযোগ নেই। এর কয়েক ঘন্টা পরেই নির্বাচন কমিশন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল করে। মূলত: তারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশনা দিতেই আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাকে নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে। আইনগতভাবে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচন করতে কোন বাধা না থাকলেও গভীর চক্রান্ত ও মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই গতকাল নির্বাচন কমিশন তাঁর মনোনয়ন বাতিল ঘোষনা করেছে। সিইসি’র নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন অনেক দন্ডপ্রাপ্ত লোকের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষনা করেছেন, যেমন ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পংকজ দেবনাথ, হাজী সেলিম, মহিউদ্দিন খান আলমগীর (ম খা আলমগীর) এবং নাজমুল হুদাসহ অনেকেরই মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষনা করেছে ইসি। তাহলে বেগম জিয়ারটা নয় কেন ? নয় এজন্য যে, বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন অবৈধ করতে সিইসি’র প্রতি শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিল। আইন সম্মতভাবেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য।
সিইসি সহ তার কয়েকজন কমিশনার দাসত্ব দেখিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসন থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বেগম জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন-যা সম্পূর্ণভাবে হাস্যকর। বেগম জিয়া তো কারাগারে, তাহলে তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেন কিভাবে ? রিটার্র্নিং কর্মকর্তার সিংহ আর হরিণ শাবকের পানি ঘোলা করার ঈশপের গল্পের মতো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনানীর রায়ে গোটা দেশবাসী আশা করেছিল ন্যায় বিচার পাবেন তাদের নেত্রী। কিন্তু কি ভয়াবহ দলদাসত্ব দেখালেন সিইসি কে এম নুরুল হুদা ও তাঁর কয়েকজন কমিশনার। সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে কে এম নুরুল হুদাসহ কয়েকজন কমিশনার আপিলে বেগম জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। এই ঘটনায় জাতীয় নির্বাচনী পরিবেশ আওয়ামী দাপটে এখন মিথ্যা জয়ের ফলাফলের স্পষ্ট আভাস বিধৃত হলো। নির্বাচন কমিশন মুখোশের শেষ সুতোটুকু ছুঁড়ে আওয়ামী স্বার্থের মেশিন হিসেবে স্বীয় মহিমায় উদ্ভাসিত হলো। এখন পর্যন্ত যা হয়েছে, যা হচ্ছে তা শুধুমাত্র জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্যই। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন ছিনিমিনি খেলছে। সরকারের হুকুমের বাইরে ইসি কোন কাজ করছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ