Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বরিশালে মহাজোট-ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদারের মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশনে আপিলেও বাতিল হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে পটুয়াখালী সদরে মহাজোট প্রার্থীসহ নেতা কর্মীদের মাঝে। কিন্তু বরিশাল-২ আসনে জাপা’র মাসুদ পারভেজের আপিল গৃহীত হওয়ায় মহাজোটের মূল শরিক আওয়ামী লীগ শিবিরে বেড়েছে অস্বস্তি ।বরিশাল-২ আসনে ঐক্যফ্রন্টের মূল শরিক সরফুদ্দিন সান্টুকেই বেছে নিয়েছে। তবে বরিশাল-৩ ও ঝালকাঠি-২ আসনে বিএনপি’র সঠিক প্রার্থী বাছাইয়ে দুরদর্শিতার অভাবে বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সান্টুকে সবুজ সংকেত দিলেও বরিশাল-৩ আসনে বিএনপি সেলিমা রহমানের পরিবর্তে অ্যাডভোকেট জয়নুল অবেদিন ও ঝালকাঠি-২ আসনে ইলেন ভ‚ট্টোর পরিবর্তে জেবা আমীন খানের মনোনয়ন নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। জনমনেও বিষয়টি নিয়ে নানা মত ও কথাবার্তা চলছে।
জানা গেছে, পটুয়াখালী-১ আসনে জাপার সদ্য বিদায়ী মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদারের মনোনয়নপত্র গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের আপিলেও খারিজ হয়ে গেছে। ফলে পটুয়াখালী আওয়ামী লীগ শিবিরে স্বস্তির ভাব লক্ষ্য করা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে ২০১৪-এর নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েই আমরা কাজ করেছি। আর কোন প্রবাসী এমপিকে আমরা ছাড় দিতে রাজী নই। এ আসনে আওয়ামী লীগ সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়াকে মনোনয়ন দেয়।
এদিকে বরিশাল-২ আসনে জাপার মাসুদ পারভেজের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর ফলে অস্তস্তি বেড়েছে মহাজোটের মূল শরিক দলে। ঐ আসনে আওয়ামী লীগ সাবেক ছাত্র নেতা শাহে আলমকে মনোনয়ন দিয়েছে। মাসুদ পারভেজের দাবি মহাজোটের শীর্ষ পর্যায়ে সবুজ সংকেত পেয়েই তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
অপরদিকে ঐক্যফ্রন্টের সরফুদ্দিন সান্টু ও শহিদুল হক জামাল একাধিক নির্বাচন করেছেন। জামাল ১৯৯১ সালে বিএনপি প্রার্থী হয়ে আমীর হোসেন আমুকে পরাজিত করলেও ’৯৬-এর নির্বাচনে পরাজিত হন। আবার ২০০১-এর নির্বাচনে তিনি ফয়জুল হককে পরাজিত করেন। তবে পরবর্তীতে সংস্কারবাদীদের দলে নাম লিখিয়ে দল থেকে বহিস্কৃত হন। সরফুদ্দিন সান্টু ২০০৮-এর নির্বাচনের কয়েকদিন আগে বিএনপিতে যোগ দিয়ে প্রায় ৮৮ হাজার ভোট পেলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে ২২ হাজারের ব্যবধানে হেরে যান। তিনি ২০০৮ সালেই বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেব প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে ৫৭৫ ভোটে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে হেরে যান।
দিন কয়েক আগে জামালের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের পরেও বিএনপি শেষ পর্যন্ত বরিশাল-২ আসনে সান্টুকেই চ‚ড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তবে ভোটের লড়াই নির্ভর করবে মহাজোটের প্রার্থী কে হচ্ছেন তার ওপর। শেষ পর্যন্ত জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে মাসুদ পারভেজ ভোটের মাঠে থাকলে লড়াই কিছুটা ত্রিমুখী হলেও মাসুদ পারভেজ জনমতের বাইরেও থাকতে পারে।
এদিকে বরিশাল-৩ আসনে সেলিমা রহমানের পরিবর্তে জয়নুল আবেদিনকে চ‚ড়ান্ত মনোনয়ন দেয়ায় খুশি মহাজোট শিবির। রাশেদ খান মেনন ও সেলিমা রহমানের পৈত্রিক ভূমি বাবুগঞ্জ-মুরামী নিয়ে গঠিত এ আসনে ২০০৮-এর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়নুল আবেদিন ২০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। সেলিমা রহমান ৬হাজারের ব্যবধানে হেরে যান। এবার দল জয়নুল আবেদিনকেই মনোনয়ন দিয়েছে। এ আসনে মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির বর্তমান এমপি টিপু সুলতান এবারো প্রার্থী।
অপরদিকে ঝালকাঠি-২ আসনে ইলেন ভূট্টোর পরিবর্তে জেবা আমীন খানকে মনোনয়ন দেয়ায়ও খুশী মহাজোট শিবির। এখানে মহাজোটের প্রার্থী আমীর হোসেন আমু। এ আসনে ১৯৯১ ও ’৯৬-এর নির্বচনে আমু তৃতীয়স্থান লাভ করেন। ’৯৯সালের উপ-নির্বাচনে তিনি প্রয়াত এমপি জুলফিকার আলী ভূট্টোর স্ত্রী ইলেন ভ‚ট্টোকে প্রায় ৫৮হাজার ভোটে পরাজিত করলেও একবছর পরে ২০০১-এর নির্বাচনে ঐ প্রার্থীর কাছেই ৩৮হাজার ভোটে হেরে যান। ২০০৮-এর চরম প্রতিকুলতার নির্বাচনেও ইলেন ভূট্টো ৬০হাজারের বেশী ভোট পান। তবে রাজনীতি ও নির্বাচনে নবীন জেবা আমীন খানকে নিয়ে দল এবার কি ধরনের ‘ভোটের পরিক্ষা’ করছে তা বোধগম্য নয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ