পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রহণযোগ্য ও অর্থবহ নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের প্রবল চাপে সরকার। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ ভ‚মিকা নিশ্চিত করতে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে এ মুহূর্তে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের সজাগ দৃষ্টিপাত। এটি অব্যাহত থাকবে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতের চাপ, প্রভাব এবং তাগাদা আসছে সবদিক থেকেই।
রাজনীতির মাঠের মূল প্রতিদ্ব›দ্বী আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও তাদের জোটের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে অনেক আগে থেকেই জোরালো তাগিদ দেয়া হয়েছিল। প্রধান দুই পক্ষের অংশগ্রহণমূলক হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এবারের নির্বাচনে সঠিকভাবে জনমত প্রতিফলনের তাৎপর্য বহুগুণ বেড়ে গেছে। এনডিআই, ডেমোক্রেসী ইন্টারন্যাশনাল, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা, ফোরাম, প্রতিষ্ঠান, পর্যবেক্ষক ও দাতা গোষ্ঠির কাছে এখন সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব পেয়েছে অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের নিশ্চয়তার বিষয়টি। নির্বাচন পর্যবেক্ষক স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও সতর্ক। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের নির্বাচন-বান্ধব যথাযথ ভ‚মিকা তাদের কাছে সবচেয়ে প্রত্যাশিত। ২০১৪ সাল ফিরিয়ে আনার কোনো অবকাশ নেই। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আর দেখতে চাইছে না কেউই।
দায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনকে অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য করার উপায়গুলো নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই), ডেমোক্রেসী ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই) ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, পর্যবেক্ষক সংস্থা ও দাতা গোষ্ঠির শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিগণ ঢাকা সফর করছেন। তারা ইতোমধ্যে সরকারি দল ও তাদের নেতৃত্বে মহাজোট এবং বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ বা নীতিনির্ধারক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক, মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়েছেন। সেসব বৈঠকে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী পক্ষের জন্যও যাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত থাকে সে বিষয়টি সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব পায়।
সরকারের চাপ ও প্রভাবমুক্ত অবস্থাতেই নির্বাচন কমিশন (ইসি) যাতে তার বিধি-বিধান অনুযায়ী নিরপেক্ষ ও বলিষ্ঠ ভ‚মিকা নিশ্চিত করতে পারে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রশাসনযন্ত্র সরকারের চাপমুক্ত থাকার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। মত বিনিময়কালে সরকারের তরফে ইসি’র ওপর চাপ বা প্রভাব খাটানো হচ্ছেনা মর্মে আশ্বস্ত করে বলা হয়, এবার নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়ায় সরকারি দলও প্রথম থেকেই বিএনপি ও তার জোট ঐক্যফ্রন্টকে স্বাগত জানিয়ে আসছে । সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে কিছু কিছু সমস্যা, সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। তবে তা কেটে যাবে। এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হবে এবং তা ইতিহাস সৃষ্টি করবে এমনটি আশারবাণী শোনান সরকারের নীতিনির্ধারকগণ।
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনে বিরোধী পক্ষকে সহযোগিতা প্রদানের এবং নিছক সন্দেহ, অনুমান ও সমালোচনার খাতিরে সমালোচনা কিংবা গালমন্দ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। এনডিআই, ডিআইসহ আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিনিধিগণ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে একযোগে এবং পৃথকভাবেও বৈঠকে আলোচনা করেন। বৈঠক ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তারা উভয় পক্ষের শীর্ষ নেতৃবৃন্দর কাছ থেকে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অর্থবহ একটি নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্য সামনে রেখে অঙ্গীকার বা আশ্বাস লাভের প্রচেষ্টা করছেন। এ ধরনের বৈঠক ও মতবিনিময় অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সঙ্গে বৈঠক ও মতবিনিময়ে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নীতিনির্ধারকগণ তাদের অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং সর্বোপরি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের পথে প্রধান বাধা-প্রতিবন্ধক হচ্ছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ক্ষেত্রে অসম অবস্থা তৈরি করা হয়েছে। যা সরকারি দল ও তাদের জোটের দিকে সহায়ক এবং বিপক্ষের জন্য প্রতিকূলে রাখা হয়েছে। কেননা নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং প্রশাসনকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করে নির্বাচনী ব্যবস্থাকেই কার্যত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এর দৃষ্টান্ত হচ্ছে, এবার দেশে রেকর্ড সংখ্যক (২৫ শতাংশেরও বেশি) প্রার্থিতা রিটার্নিং অফিসারগণ বাছাইয়ে বাতিল করেছেন। যার বেশিরভাগই বিএনপির এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থী।
তাছাড়া বিএনপিসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী, সমর্থকের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা-হুলিয়া ঝুলছে। যখন-তখন গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ কারণে আতঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে কারাবন্দী রাখা হয়েছে। কারাগার থেকে তিনি প্রার্থী হলেও তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন নেতা বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী হয়েছেন কারাবন্দী অবস্থাতেই। তৃণমূল পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের এমনকি তাদের পরিবার-পরিজনকে নির্বাচনী কর্মকান্ড থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যথেচ্ছ হয়রানি করে যাচ্ছে।
গত ৪ ও ৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনডিআই, ডিআইসহ আন্তর্জাতিক মহলের শীর্ষ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ মহাজোট নেতৃবৃন্দ এবং বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নীতিনির্ধারকদের সাথে একাধিক বৈঠক ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, সুইডেন, নরওয়েসহ বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও গোষ্ঠি নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে নিবিড় দৃষ্টি দিয়েছে। নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কার্যকর ভ‚মিকায় দেখতে চায় আন্তর্জাতিক মহল। সেখানে নির্বাচন পর্যবেক্ষক স্থানীয় বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।
এনডিআই, ডিআইসহ আন্তর্জাতিক মহলের সাথে আলাপ-আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গতকাল (শুক্রবার) দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থাই প্রশ্নবিদ্ধ। এরজন্যই এনডিআই, ডিআইসহ আন্তর্জাতিক মহল, সংস্থা, ফোরাম ও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশে সফরে এসে আলোচনা করছেন। সদিচ্ছার তাগিদ থেকে সবারই চাপ রয়েছে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য এবং একটি অর্থবহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্য নিয়ে। তাদের সঙ্গে আলোচনায় আমাদের বক্তব্যগুলো তুলে ধরেছি। নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে এসে সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে। সরকারি দলও তাদের বক্তব্য রেখেছে। আমাদের প্রত্যাশা আসন্ন নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় এবং সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।