পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানী থেকে এখনও অপসারণ হয়নি আগাম নির্বাচনী প্রচারণার পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ও বিলবোর্ড। অথচ নির্বাচন কমিশন থেকে বার বার সময় বেধে দেয়ার পরও তা কর্ণপাত করেনি সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা। সর্বশেষ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে আগাম প্রচারণার এই সামগ্রীগুলো নিজ নিজ এলাকা থেকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা যথাযথ পালন হয়নি। এখনও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার, লিফলেট, ফেস্টুন ও ব্যানারসহ আগাম নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী সাঁটানো থাকতে দেখা গেছে।
যদিও রাজধানীতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এই প্রচারসামগ্রী সরাতে তৎপর রয়েছে। গত বেশ কিছুদিন তাদের তৎপরতা চোখে পড়ছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য অপসারণ বিভাগের কর্মীদের কয়েকটি স্থানে পোস্টার সরাতে দেখা গেছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার বিভিন্ন স্থাপনার দেয়াল ও পিলারে সাঁটানো দেখা গেছে, ঢাকা মহানগর যুবলীগের সভাপতি ইসমাইস চৌধুরী সম্রাটের নির্বাচনী আগাম প্রচারের পোস্টার। পল্টনের একটি দেয়ালে নৌকার ভোট চেয়ে সাঁটানো কয়েকশ পোস্টার দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশন থেকে দফায় দফায় নির্দেশনা দেয়ার পরও একটি দেয়ালে এতোগুলো পোস্টার এখনো সাঁটানো দেখে বুঝার উপায় নেই যে সিটি কর্পোরেশন এই পোস্টার আপসারণের কাজ করেছে। এছাড়াও ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতাল এলাকা, মৎস ভবন এলাকা, ধানমন্ডি আওয়মী লীগ কার্যালয়ের আশেপাশের এলাকাসহ রাজধানীজুড়েই নির্বাচনী আগাম প্রচারণার পোস্টার, ব্যানার লিফলেট সাঁটানো রয়েছে। এছাড়াও মিরপুর শেওড়াপাড়া থেকে ইব্রাহীমপুর হয়ে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সেই রঙিন নির্বাচনী পোস্টারগুলোই। ইব্রাহীমপুর বাজারের আগে এম সাইফুল্লাহ সাইফুলের জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান সংবলিত রঙিন পোস্টার সাঁটানো রয়েছে বিভিন্ন স্থাপনার দেয়ালে। কোথাও কোথাও মোহাম্মদ মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে এমপি দেখতে চাওয়ার প্রত্যাশা জানিয়ে সাঁটানো পোস্টারও দেখা গেছে। এছাড়াও জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের সামছুল হককে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাঁটানো পোস্টারও রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সর্বশেষ নির্দেশনা অনুসারে, গত ১৮ নাভেম্বের মধ্যরাতের আগে এসব সরানোর কথা ছিল। নির্বাচনের আচরণবিধিমালা অনুযায়ী এ আদেশ না মানা হলে শাস্তির বিধান রয়েছে। শুধু রাজধানীতে নয়, আগাম নির্বাচনী প্রচারণার পোস্টার, ব্যানার, তোরণ সরানো হয়নি দেশের অনেক স্থান থেকেই। নির্বাচনী আগাম প্রচারণার এই সব সামগ্রী সরানোর ক্ষেত্রে অনেকটাই নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে। কোথাও পোস্টারের অংশিক ছেঁড়া, কোথাও দুয়েটি ছেঁড়া আবার কোথায় সম্পূর্ণ অক্ষত রয়ে গেছে এইসব প্রচারণা সামগ্রী। একেবারে যথযথভাবে এইসব সামগ্রী কোথও থেকে সরানো হয়নি।
জানা গেছে, গত ৯ নভেম্বর থেকে নির্বাচন কমিশন দফায় দফায় নির্দেশ দিয়েছে আগাম প্রচারসামগ্রী অপসারণের। কিন্তু তা আজও সরানো হয়নি। সর্বশেষ নির্দেশনা অনুসারে, গত ১৮ নভেম্বর মধ্যরাতের আগে তা সরানোর কথা ছিল। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর, কুড়িল, গুলশানসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী পোস্টার চোখে পড়েছে। প্রায় সব এলাকায় পোস্টার ছাড়াও লাগানো ছিল ব্যানার ও ফেস্টুন। নির্বাচন কমিশন সর্বশেষ নির্দেশনায় বলেছে, ‘১৮ নভেম্বর রাত ১২টার মধ্যে মার্কেট, রাস্তাঘাট, যানবাহন ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ অন্যান্য জায়গায় যাদের নামে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুনসহ প্রচারসামগ্রী রয়েছে তাদের এবং যেসব ব্যক্তি বা যৌথ মালিকানাধীন ভবন, প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, যানবাহন ও স্থাপনায় প্রচারসামগ্রী রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠান ও মালিকদের নিজ নিজ উদ্যোগে এবং নিজ খরচে তা অপসারণ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানা না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল। সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী এ আদেশ প্রতিপালন না করার কারণে শাস্তির বিধান রয়েছে।
সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীকে এ আদেশ প্রতিপালন না করার কারণে কারাদন্ড এবং জরিমানা করার বিধান রয়েছে। আর নির্বাচন কমিশন চাইলে প্রার্থীর প্রার্থিতাও এই অপরাধের জন্য বাতিলের ক্ষমতা রাখে।
এ বিষয়ে গত ৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (গণসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রচারণা চালানো যাবে না। নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার, দেয়াললিখন, বিলবোর্ড, গেট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল বা আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচারণা ও নির্বাচনী ক্যাম্প থাকলে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিজ খরচে অপসারণ করবেন। কমিশনের প্রধম দফায় বেঁধে দেওয়া সময়ে এসব পোস্টার না সরানোয় দ্বিতীয় দফায় আবারও নির্দেশনা দেয় ইসি। ইসির প্রথম দফার সময় শেষ হয় ১৪ নভেম্বর রাত ১২টায়। পরে আরও তিন দিন সময় দেয় ইসি। আর দ্বিতীয় দফার মেয়াদও শেষ হয় গত ১৮ নভেম্বের রাত ১২টায়। কিন্তু গতকাল সরেজমিনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণের কাজ কোন প্রার্থী করেছে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি। বরং নতুন নতুন পোস্টার ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা গেছে।
রাজধানীতে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার ও সামাজিক মাধ্যমে নিজের প্রচারে সরব আছেন আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থী সাদেক খান, শিল্পপতি আদম তমিজি হক। এদের লিফলেট ও পোস্টার চোখে পড়ে চলাচলরত মিনিবাস, ফ্লাইওভারের পিলারগুলোতে। একইভাবে বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচির প্রচারও চোখে পড়েছে। বিভিন্ন বাস, মিসিবাস, ফ্লাইওভারসহ মিরপুর-পল্লবী অঞ্চলের ভবনের দেয়াল, রাস্তার মোড়ে তার পোস্টার ও ব্যানার চোখে পড়ে।
এছাড়া জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন হাজি সেলিম, গোলাম মোস্তফা, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, মোহাম্মদ নাজমুল হক, ডা. দিলীপ কুমার রায়, হারুনর রশিদ মুন্না, আমিরুল হক খোকা, সাইফুদ্দিন মিলন, রাশেদ খান মেনন। প্রচারে আছেন বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী। যদিও বিএনপির এসব নেতাদের পোস্টার ও ব্যানার দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ভিত্তিক প্রচার চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।