Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরাজয়ের মুখে পিছু হটে পাকিস্তানি বাহিনী

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

আজ ৭ ডিসেম্বর। দেশজুড়ে চলছিল যুদ্ধের ঘোর ঘনঘটা। ১৯৭১ সালের এদিনে সবার মনে প্রশ্ন, এ যুদ্ধ আর কতদিন চলবে? শক্তিশালী পাকিস্তানী বাহিনীকে কি পরাজিত করতে পারবে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা? কারো কাছেই তার কোনো স্পষ্ট উত্তর ছিল না।
এদিকে বিভিন্ন রণাঙ্গনে অর্জিত হচ্ছিল একের পর এক সাফল্য। এদিন বিকেলে সিলেট হানাদারমুক্ত হয়। সকল জায়গাতেই পরাজয়ের মুখে পিছু হটছিল পাকিস্তানী সৈন্যরা। বিপদ ঘনীভ‚ত দেখে এদিন বরিশালের পাক সেনারা গানবোট, স্টিমার, লঞ্চে করে পালিয়ে যেতে শুরু করে। কিন্তু পথে আক্রমণের শিকার হয়ে তাদের সলিল সমাধি ঘটে। তারা আর ঢাকা পৌঁছতে পারেনি। যশোর, ঝিনাইদহ ও নড়াইল এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এবং মিত্র বাহিনী ৬ ডিসেম্বর মাগুরার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচন্ড গোলাগুলি চলে। পাক সেনারা যৌথ বাহিনীর প্রচন্ড চাপে দিশেহারা হয়ে মাগুরা থেকে ফরিদপুরের দিকে পালিয়ে যায়। মুক্ত হয় মাগুরা।
এদিন পশ্চিম রণাঙ্গনেও ভারতীয় বাহিনীর ব্যাপক সাফল্য লক্ষ করা যায়। ভারতীয় নৌবাহিনীর দ্বারা করাচি বন্দর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ভারতীয় জঙ্গী বিমান করাচিতে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল। পাকিস্তানের আকাশে তাদের অবাধ তৎপরতার প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান নিরাপত্তার জন্য ইসলামাবাদে প্রেসিডেন্ট হাউসের নিচে ভ‚গর্ভস্থ বাঙ্কারে আশ্রয় নেন।
১৯৭১ সালের এদিন ভারত-বাংলাদেশ যৌথ সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সিদ্ধান্ত হয়, বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী ভারতীয় ইস্টার্ন থিয়েটারের অধিনায়ক লেঃ জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিস্থিতির ব্যাখ্যা গুরুত্ব লাভ করে। ইন্দোনেশিয়ার পত্রিকা ‘ইন্দোনেশিয়া রায়া’র ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত সংখ্যায় লেখা হয়, পাকিস্তানের উচিত বাংলাদেশকে মেনে নেয়া এবং নিজেদের ভুল সংশোধন করা। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমেও বালাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে এদিন অভিমত প্রকাশ করা হয়। যেমন গার্ডিয়ান, দি টেলিগ্রাফ ও টাইমস। ‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বাস্তবতা হল, সদিচ্ছা ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশকে আর দমিয়ে রাখা যাবে না।
১৯৭১ সালের এদিনে নালিতাবাড়ি, শ্রীবর্দী, বরুড়া, গোপালগঞ্জ, বালাগঞ্জ, কোম্পানিগঞ্জ, রাজনগর, মেহেরপুর, শালিখা, সাতক্ষীরা, কেশবপুর, কেন্দুয়া, চুয়াডাঙ্গা, বেগমগঞ্জ, শেরপুর, নাসির নগর হালুয়াঘাট প্রভৃতি স্থান শত্রæমুক্ত হয়।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ