পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ভাবনা শুনেছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। গতকাল (বুধবার) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কানাডা, আইআইডি ও এনডিআইর উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সাথে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইডেন, নরওয়ে, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কূটনীতিকরা ছিলেন। সকালে ওই হোটেলে একে একে আসতে থাকেন ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। এছাড়াও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা, সুশীল সমাজের কয়েকজনও সেই মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
তবে এটি ছিল পুরোপুরি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক। তাই, আগে থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের কিছুই জানানো হয়নি। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান এইচ টি ইমাম বলেন, একাদশ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব কিছু করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কিছু বিষয়ে সমস্যা আছে। তা সমাধানের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সকল রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যম নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এখানে মূলত নির্বাচনটি গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য যে প্রয়োজনীয়তা সেটা আমরা বলেছি। বর্তমান যে প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের, এই বাংলাদেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হওয়া সত্তে¡ও আমরা নির্বাচনে এসেছি। এখন আমরা নির্বাচনে আসার পর দেখছি আমাদের জার্নি হচ্ছে লং হিল জার্নি, আমরা আরও নিচের দিকে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, এটা ক্র্যাশ না করে। আমরা আশা করি বাকী দিনগুলোতে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই পর্যন্ত জনগণের কোনো আস্থা সৃষ্টি হয়নি। বস্তুতপক্ষে নির্বাচনটি নির্বাচনের আগে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন কারণে এবং এই প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া থেকে যদি বেরিয়ে আসতে চান তাহলে তাদের প্রমাণ করতে হবে তারা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। নইলে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আরো ‘খারাপের’ দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেন, নির্বাচনটা কিভাবে আরো ভালো করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের যে বক্তব্য সেটা হল গত ১০ বছরে ও তার আগে ২০০৭-৮ সালেও নির্বাচনী পুরো প্রক্রিয়ায় যে ধরনের সংস্কার করা হয়েছে, যার প্রত্যেকটি ছিল আওয়ামী লীগের উদ্যোগ। ওইসব সংস্কারের মাধ্যমে আজকে একটা সিস্টেম দাঁড়িয়েছে, যার মাধ্যমে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। তিনি বলেন, সেই নির্বাচনে যে পক্ষ-প্রতিপক্ষ আছে তাদের অবশ্যই ভূমিকা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যেন সঠিক ভূমিকা পালন করে। আওয়ামী লীগ সরকারে আছে, আমরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছি এবং করব। আমরা সবাইকে নিয়ে যে নির্বাচন করতে চাই, ভালো নির্বাচন করতে চাই, প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করেছেন তার মধ্য দিয়ে এবং নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা তা প্রমাণ করছি। তিনি বলেন, সরকারের যেটি উদ্দেশ্য সেটি হচ্ছে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচন করবে এবং সরকার তাকে সাংবিধানিক যে দায়িত্ব আছে সেই দায়িত্ব অনুযায়ী সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে এবং সরকার সেটি করে যাচ্ছে।
কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে দীপু মনি বলেন, ভেতরে আলোচনার কথা এখানে বলবার কথা না। তবে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সবাই সেটি আশা করেন এবং অতীতের চাইতে আমরা এখন যে পদ্ধতিগুলো আছে চতুর্দিকে যেভাবে ডিজিটাইলেজেশন বলেন, মিডিয়ার ব্যাপকতা বলেন, তাতে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভালো পরিবেশ তৈরি হচ্ছে সেটিকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ বলেন, এই ধরনের আলোচনা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যেহেতু এখানে নির্বাচনের সব অংশীদারীরা উপস্থিত ছিলেন, সেই জায়গাটা থেকে বলা যায়, সকলে তাদের জায়গা থেকে তাদের সমস্যাগুলো উত্থাপন করেছেন। সরকারের যারা প্রতিনিধি ছিলেন, তারাও যথেষ্ট খোলাসাভাবে তাদের বোধগুলো পেশ করেছেন। আমরা আশা করি এই ধরনের আলোচনা সবার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করবে, টেনশন ও অস্থিরতা কমাবে।
নির্বাচনের পর্যবেক্ষক হিসেবে পরিবেশ সম্পর্কে কি বলেছেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা আগামী দিনের দিকে তাকাতে চাই। আমরা মনে করি যে, রাজনৈতিক দলগুলো যেন একটু সহনশীল হয়। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। সেই ভূমিকাটা শক্ত করার জন্য সরকারি দল কমিশন থেকে দূরত্ব বজায় রাখবে। আমাদের বক্তব্য ছিল নির্বাচন কমিশনের ইন্ডিপেনডেন্স প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো তার থেকে দূরত্ব রক্ষা করবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানে যে জিনিসটা উঠে এসেছে, আগামী নির্বাচন যদি গ্রহণযোগ্য না হয় দেশে-বিদেশে যদি দৃশ্যমান ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন না দেখা যায়, যেটার এখন কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায়। এগুলো দে আর অবজারভিং। এটা হয়ত বাংলাদেশে এই পর্যন্ত যেসব অর্জন আছে, খুব ভালো ভালো অর্জন আছে সেই অর্জনগুলোকে ম্লান করতে পারে। সেটাই হল তাদের ধারনা। যেটা আলোচনায় উঠে এসেছে। এইটুকুই আমি বুঝতে পেরেছি।
মতবিনিময় সভায় আরও অংশ নেনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী, বিএনপির রিয়াজ রহমান, বিকল্পধারার শমসের মবিন চৌধুরী ছিলেন, সুজনের বদিউল আলম মজমুদারসহ বিভিন্ন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।