পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে নৌকা মার্কায় মনোনয়ন পেয়েছেন প্রফেসর ডা. আব্দুল আজিজ। মনোনয়ন পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক ছিলেন আওয়ামী ঘেষা চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের এই নেতা। কিন্তু সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন হয়েছে আওয়ামী লীগ থেকে এই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে মনোনয়ন দেওয়ায়। তবুও নির্ধারিত এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনীত এই প্রার্থী।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিধান সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, প্রজাতন্ত্রের বা কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, ‘লাভজনক পদ’ অর্থ প্রজাতন্ত্র কিংবা সরকারি সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকারের ৫০শতাংশের অধিক অংশীদারিত্ব সম্পন্ন কোম্পানিতে সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত কোন পদ বা অবস্থান।
এছাড়া, প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের কোন চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন বা অবসর গমন করেছেন এবং উক্ত পদত্যাগ বা অবসর গমনের ৩ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে তাহলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
এদিকে ঢাকা শিশু হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বা সরকারের ৫০শতাংশের অধিক অংশীদারিত্ব সম্পন্ন। যেমন- ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপ-সচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বাৎসরিক অনুদানের ১ম কিস্তি ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রদানের কথা জানানো হয়েছে। এই অর্থ হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ প্রদান করা হয়েছে। যেখানে বেতন বাবদ এই অর্থবছরের মোট বাজেট ৩০ কোটি টাকা।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের সূত্রে আরও জানা গেছে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা শিশু হাসপাতাল সরকারি সাহায্যপুষ্ট হলেও এটি সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়। তাই এটি পরিচালনায় একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠন করা হয়। বর্তমানে যে ব্যবস্থাপনা বোর্ড দ্বারা হাসপাতাল পরিচালিত হচ্ছে সেই বোর্ডটি আইনত বৈধ নয়। কারণ এটি একটি বাতিল অধ্যাদেশ অনুযায়ী গঠন করা হয়েছে।
তারা জানান, ২০০৮ সালে তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার হাসপাতাল পরিচালনায় একটি অধ্যাদেশ জারি করে। যদিও পরবর্তী গণতান্ত্রিক সরকার সেই অধ্যাদেশ জাতীয় সংসদের মাধ্যমে বাতিল করে দেয়। কিন্তু ২০১৬ সালে গঠিত হাসপাতালের বর্তমান বোর্ড সেই বাতিলকৃত অধ্যাদেশ অনুযায়ী গঠন করা হয়।
তাছাড়া এই বাতিল অধ্যাদেশে পরিচালিত হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সভাপতি প্রফেসর ডা. সৈয়দা ফিরোজা বেগম স্বাক্ষরিত নির্দেশিকায় বলা আছে, এই হাসপাতালে কর্মরত কেউ কোন প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত হতে পারবে না। অথচ নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটির পরিচালক প্রফেসর ডা. আব্দুল আজীজ নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ৩ মাসের ছুটিতে রয়েছেন। এবং এই সময়ে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অন্য আরেকজন মনোনীত ব্যক্তি পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। অর্থাৎ নির্বাচনে হেরে ফিরলে তিনি আবার পরিচালক পদে অধিষ্ট হতে পারবেন। সংসদ সদস্য হতে পারলে এই পদটি বাতিল হবে। তাছাড়া হাসপাতালটির এই পরিচালকের বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্মসাত, রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া, হাসপাতালটির চরম অব্যবস্থাপনার মূল হোতাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ।
সর্বোপরি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিধান অনুসারে তিনি (প্রফেসর ডা. আব্দুল আজীজ) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অযোগ্য প্রার্থী। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। বর্তমানে তিনি নির্বাচনী গণসংযোগের কাজে রায়গঞ্জ-তাড়াশ ও সলঙ্গা এলাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।