পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া প্রার্থীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হলেও সবার অভিযোগ প্রায় অভিন্ন। রিটার্নিং কর্মকর্তারা (জেলা প্রশাসক) পক্ষপাতমূলক আচরণ করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে রেকর্ডসংখ্যক মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন বলে অভিযোগ তাদের। মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের দ্বিতীয় দিনে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এসে সংক্ষুব্ধ প্রার্থীরা এই অভিযোগ তুলে প্রার্থীতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন। জবাবে ইসির পক্ষ থেকে অভিযোগের সঠিক বিচার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় তাদেরকে। গতকাল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল করার কথা থাকলেও তা আদালতের কাগজ না পাওয়ার কারণে করা হয়নি। আজ বধুবার করা হবে বলে জানিছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিষ্টার কায়সার কামাল।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনে গতকাল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ২৩৪ জন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করছেন। এর মধ্যে খুলনা বিভাগে ১৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৬ জন, সিলেট বিভাগে ১৫ জন, বরিশাল বিভাগে ১২ জন, ঢাকা বিভাগে ৬৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২২ জন, রংপুর বিভাগে ২৭ জন। এ নিয়ে গত দুই দিনে আপিল করেছেন ৩১৮ জন।
আপিলকারীদের মধ্যে রয়েছেন- নাটোর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, নেত্রকোনা-১ আসনের সাবেক এমপি এমএ করিম আব্বাসী, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য চিত্রনায়ক সোহেল রানা, মেজর (অব.) মনজুর কাদের প্রমুখ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার পক্ষে কেউ আপিলের আবেদন করেননি। এর আগে, গত সোমবার আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্রের বৈধতা পেতে ইসিতে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া, সাবেক মন্ত্রী মীর নাছির, সাবেক এমপি গোলাম মওলা রনি, হিরো আলমসহ ৮৪ জন প্রার্থী আপিল করেছিলেন। এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলে শুনানি করতে প্রস্তুত হচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য নির্বাচন ভবনের ১১ তলায় ট্রায়াল রুম তৈরি করা হয়েছে। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব, আর অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা উপস্থিত থাকবেন। পরশু ৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ থেকে শুনানি শুরুহবে। প্রার্থীদের আইনজীবি আনতে হবে।
গতকাল প্রার্থীদের আপিল গ্রহণ করা আট বিভাগের ডেস্কগুলো পরিদর্শন করেন ইসি কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এসময় তিনি আপিলকারীদের প্রতি পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করা হবে না। বলে জানান। তিনি বলেন, আমরা যা কিছু করব, তা হবে আইনানুগ। কারো প্রতি পক্ষপাতিত্ব আমরা অবশ্যই দেখাব না। প্রতিটি কেসেরই (আপিল) মেরিট আমরা দেখব। নির্বাচন কমিশন সব ব্যাপারেই একটা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে।
নিরপেক্ষতা আপেক্ষিক উল্লেখ করে ইভিএম, নির্বাচন পেছানোসহ কমিশন বৈঠকে বিভিন্ন সময় নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দেয়া এই কমিশনার বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজন সাজাপ্রাপ্ত হন, পরে আবার তিনি খালাসও পান। সেক্ষেত্রে আমি বলব, ন্যায়বিচার বিষয়টি পুরোপুরি আপেক্ষিক। কোনটা ন্যায়বিচার আর কোনো ন্যায়বিচার নয়, সেটার বিচারক তো আমি নই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে কি না এবং আপিলে কমিশন নিরপেক্ষতার পরিচয় দেবে কি না – এমন দু’টি প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, এ ব্যাপারে আমার এককভাবে কোনো বক্তব্য দেয়ার কথা নয়। এভাবে বলে তো আর লাভ হবে না। যারা আপিল করেছেন বা করছেন, শুনানিতে তারা তাদের তথ্যগুলো উপস্থাপন করবেন। এ বিষয়ে ব্যক্তিগত কোনো অভিমত আমার নেই।
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাজী সেলিম ও পঙ্কজ দেবনাথ নির্বাচন করতে পারবেন কি না জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, এসব প্রশ্নের উত্তর আমি এই মুহূর্তে দিতে পারি না। এই মুহূর্তে আমি এটার জন্য প্রস্তুত না। আমি কেবল দেখতে এসেছি, যারা আপিল করতে আসছেন, তাদের কোনো অভিযোগ আছে কিনা, জমা দেয়ার ব্যাপারে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা?’ রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের বিষয়ে তিনি বলেন, আমিও পত্রিকায় দেখেছি। এ বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী আপিল করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। নির্বাচনের পরিবেশের বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ আছে কি নেই, যদি দুই পক্ষই (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) অভিযোগ করে, আমরা এখন কী বলব? নির্বাচনের পরিবেশ আছে কি নেই, আমরা এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে দেখতে পারি। তবে, এই মুহূর্তে আমি কোনো কিছু বলার জন্য প্রস্তুত নই। মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণার বিষয়ে এই কমিশনার বলেন, যাদের যা কিছু অভিযোগ, লিপিবদ্ধ করে আমাদের এখানে দেবেন, তাদের প্রত্যেকটি অভিযোগের বিষয়ে আমরা শুনানি করব। এরপর আমরা এটার বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। যাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে তারা ৫ ডিসেম্বর পর্যরাত আপিল করতে পারবেন। আগামী ৬, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর আপিলের শুনানি হবে। শুনানি শেষে আমরা আমাদের জাজমেন্ট (রায়) দেব। ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এরপর আমরা প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেব।
উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন পত্র বাছাইয়ের দিন। সারা দেশে দাখিল করা ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়ন পত্র বাছাইয়ের পর ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়ন পত্র বৈধ এবং ৭৮৬টি মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বাতিল হওয়া প্রার্থীদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩ ডিসেম্বর থেকে আপিল শুরু হয়েছে; চলবে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর ৬ ডিসেম্বর থেকে প্রার্থীদের আপিল গ্রহণের ওপর শুনানি চলবে। পরদিন ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর হবে ভোটগ্রহণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।