পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ও কুয়েতের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা। গতকাল বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে এক মতবিনিময় সভায় কুয়েত চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেসিসিআই) বাণিজ্য প্রতিনিধিদল এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) নেতারা এ আগ্রহের কথা জানান। সভায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়াতে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। কুয়েতের প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে কুয়েতের এই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করছে।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন, বর্ধনশীল প্রবৃদ্ধি এবং কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীর বিষয়টি উল্লেখ করে সভায় এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) কুয়েতের ব্যবসায়ীদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি বাংলাদেশে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসহ জ্বালানি, অবকাঠামো, থিম পার্ক, ফ্যাশনশিল্প ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ এবং যৌথ বিনিয়োগ করতে কুয়েতের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান। এ ছাড়া বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য কুয়েতের ভিসা পদ্ধতি সহজীকরণ, কুয়েতের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার এবং কুয়েত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের মধ্যে ‘যৌথ বিজনেস কাউন্সিল’ গঠনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এফবিসিসিআইয়ের নেতারা।
কেসিসিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ও কুয়েতের প্রাক্তন বাণিজ্যমন্ত্রী আব্দুল ওয়াহাব এম. আল ওয়াযান বলেন, বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ আছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা কুয়েতের বাজারে আরো বেশি পণ্য রপ্তানির উদ্যোগ নিতে পারে। এ ছাড়া তিনি কুয়েতের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদেরকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। কুয়েত বিনিয়োগের জন্য বর্তমানে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সে দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
আব্দুল ওয়াহাব এম. আল ওয়াযানের নেতৃত্বে কুয়েতের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন। এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং পরিচালকরা সভায় অংশ নেন।
বিদেশি ব্যাংককে পুঁজিবাজারে আনতে কর বাড়ানোর প্রস্তাব
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বিদেশি ব্যাংকগুলোকে দেশের পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করতে এসব ব্যাংকের কর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমবিএ)। গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাব দেয়া হয়।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির নয় এমন বিদেশি ব্যাংকের আয়কর সাড়ে ৪২ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে দেশীয় তফসীলি ব্যাংকের আয়কর ৪০ শতাংশ করার প্রস্তাবও দিয়েছেন আইসিএমবিএ’র সভাপতি আরিফ খান।
আরিফ খান বলেন, বিদেশি ব্যাংকগুলো দেশে ব্যবসায় করে হাজার হাজার কোটি টাকা মুনাফা করছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারে তালিকাভ্ক্তু হয়নি। তারা তালিকাভূক্ত হলে দেশের মানুষ উপকৃত হবে এবং দেশের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। এজন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং তালিকাভুক্ত নয় এমন ব্যাংকগুলোর কর ব্যবধান বাড়ানোর প্রস্তাব করছি।
বর্তমানে ব্যাংকগুলোর সুদহার কমে গেছে। বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে আকৃষ্ট করতে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়ানো প্রয়োজন। এ সীমা বাড়ানো হয়ে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে আসতে আগ্রহী হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে ১ লাখ টাকার জমি, বিল্ডিং অথবা অ্যাপার্টমেন্ট রেজিস্ট্রেশনের সময় বাধ্যতামূলক ভাবে ই-টিআইএন করতে হয়। সেখানে সব এলাকার ক্ষেত্রে ১ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হচ্ছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে তিনি আরো বলেন, ব্যক্তিগত কর মুক্ত আয় সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ করার প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে পণ্য ক্রয়ের উপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা প্রস্তাব করছি। কারণ পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই ক্রয়ের উপর ৫ থেকে ১০ শতাংশ ভ্যাট নিয়ে থাকে।
প্রাক-বাজেট আলোচনা পরিাচালনা করেন এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) ইকবাল পারভেজ। এসময় আগামী অর্থবছরের এনবিআরের বাজেট সমন্বয়কারী আকবর হোসনে ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।