পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
“ভাই দেখলেন তো কীভাবে সারাদেশে প্রার্থীদের গণহারে মনোনয়ন বাতিল করে দেয়া হলো? বেগম খালেদা জিয়া, কাদের সিদ্দিকী, মোরশেদ খান, মীর নাছির, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, মোস্তফা মহসিন মন্টু, গোলাম মাওলা রনির মতো অনেকেরই তো ভোটের আগেই বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দেয়া হলো। এমনকি সদ্য গণফোরামে যোগদানকারী আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়ার মনোনয়নও বাতিল হলো মাত্র ৫ হাজার টাকা ক্রেডিট কার্ডের ঋণের জন্য। কই কোনো আওয়ামী লীগারের মনোনয়ন তো বাদ গেল না। এটা কেমন কথা হলো? এভাবে পাইকারি হারে মনোনয়ন বাতিল করে তাহলে কাদের নিয়ে ভোট”?
গতকাল (সোমবার) বন্দরনগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানির অফিসের লোকজন ও আগন্তুকগণ কাজের ফাঁকে চায়ের আড্ডায় প্রাণবন্ত আলাপচারিতায় মেতে উঠেন। আসন্ন নির্বাচন ঘিরে তাদের সরব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল গত রোববার মনোনয়ন বাতিলের হিসাবের অঙ্কে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) রেকর্ড গড়ার বিষয়টি।
উপরোক্ত আলাপচারিতায় কেউ কেউ বলেন, ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছিল ছোটখাট ভুল-ত্রুটির জন্য মনোনয়ন বাতিল করা হবে না। কিন্তু দেখা গেল মামুলি ভুল-ত্রুটির জন্যও অনেককে বাদ পড়তে হলো। নির্বাচনমুখী প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু করেই এভাবে হোঁচট খেতে হবে তা তারা ভাবতেও পারেননি। কেননা বিগত সংসদ নির্বাচনে তা দেখা যায়নি।
এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৯টি নির্বাচনী আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ২১২ জন। তাদের মধ্যে গত রোববার রিটার্নিং অফিসারদের যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয় ৫৯ জনের মনোনয়ন। বৈধ বিবেচিত হয়েছে ১৫৩ জনের। এরফলে চট্টগ্রাম অঞ্চলে শতকরা ২৭.৮৩ শতাংশই মনোনয়ন জমাদানকারীর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এরমধ্যে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে জমাকৃত ১৮০ জনের মনোনয়নপত্রের মধ্যে বাতিল হয় ৪৬ জনের। তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি মিলে তিনটি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয় ৩২ জনের। আর বাতিল হয়ে গেছে ১৩ জনের।
চট্টগ্রামে বাতিল হয়ে যাওয়া মনোনয়নের বেশিরভাগই হচ্ছে বিএনপির প্রার্থী ও বিএনপির বিকল্প প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের। অথচ চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের কোনো একজনও প্রার্থীর মনোনয়ন বাদ যায়নি। এভাবে গণহারে মনোনয়ন বাতিলের পরিপ্রেক্ষিতে চাটগাঁর রাজনীতি সচেতন সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের মাঝে আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনে ইসি এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে অনেকেরই যথাযথ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন নিয়েও সংশয় ব্যক্ত করেছেন এখানকার ভোটার তথা জনসাধারণ। এখানে সেখানে সরব আলোচনায় অনেকেরই অভিমত ভোটের মাঠে অবতীর্ণ দল, জোট কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্ব›িদ্বতার অধিকার বা সুযোগ তথা গণতান্ত্রিক আদর্শ চর্চার উন্মুক্ত রাখাটা ছিল বাঞ্ছনীয়। তারা বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে মাঠে নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায় থাকা সমীচীন। খেলোয়ারের ভূমিকায় থাকবেন প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীগণ এবং তাদের সমর্থিত নেতা-কর্মীরা।
কিন্তু প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আসার সুযোগ ও অধিকারটুকু না দিয়েই বাছাইয়ে অনেকের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দেয়া হলো। এতে করে শুধু বাদ পড়া প্রার্থীরাই নন; তাদের সমর্থিত তৃণমূলের নেতা-কর্মী এবং ভোটারদেরও হতাশা ব্যক্ত করতে দেখা গেছে। আবার অনেকেরই ধারণা আপিলের মাধ্যমে অনেকে নির্বাচনী লড়াইয়ে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়ে গেছে।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে ১৮০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এরমধ্যে চট্টগ্রাম জেলার ১০টি আসনে ২২ জন এবং বন্দরনগরীর ৬টি আসনে ২৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি আসনে জমাকৃত ৩২ জনের মনোনয়নপত্রের বিপরীতে বাতিল হয় ১৩ জনের মনোনয়ন। ঋণখেলাপি, বিল খেলাপি, তথ্যে অসঙ্গতিসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৯টি আসনে মোট ৫৯ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
চট্টগ্রামে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপির ১২ জন, স্বতন্ত্র ১৮ জন এবং অবশিষ্টরা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, স্বতন্ত্র ও বিভিন্ন দলের। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণহারে মনোনয়ন বাতিলের বিষয়টি নির্বাচনী এলাকাসমূহের সাধারণ জনগণ সহজভাবে নিচ্ছেন না। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে এক ডজন হেভিওয়েট প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের কারণে বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় নির্বাচনের আমেজ ও সৌন্দর্য অনেকাংশে ফিকে হতে চলেছে বলে হতাশা ব্যক্ত করেন এলাকাবাসী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।