Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কার ভুলে জিয়ার জন্মভূমির আসনে বিএনপি প্রার্থীশূন্য?

চূড়ান্ত মনোনয়ন নিয়ে বিভক্তি, বগুড়া-৫ আসনে গণপদত্যাগের হুমকি

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১১:৩৪ এএম, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

শহীদ জিয়ার জন্মভূমি বগুড়া-৭ আসনে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নের বিপরীতে একাধিক ডামি প্রার্থী না রাখা, সংষ্কারপন্থী ব্যবসায়ী নেতাদের ফের মনোনয়ন দেয়ার উদ্যোগসহ আরও কিছু বিষয়কে ঘিরে বগুড়া বিএনপিতে মতবিরোধ এখন তুঙ্গে। দল থেকে গণপদত্যাগের হুমকি দেওয়া হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
দল সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়া বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দলের সভাপতি ভিপি সাইফুল ও বগুড়া-৭ আসনের সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান লালু গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আছে। বগুড়ার সিনিয়র বিএনপি নেতা ও পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট মাহাবুব, উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আজগর হেনা, ড্যাব নেতা ডাঃ শাজাহান আলী, সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা প্রমূখ সিনিয়র নেতারা সাবেক এমপি লালু গ্রুপের সাথে কাজ করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই দুই গ্রুপের মধ্যে চাপাবিরোধ থাকলেও দলে একের পর এক সাংগঠনিক কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে এক দশক ধরে হেলালুজ্জামান লালু কোনঠাসা হয়ে পড়েন। তবে গত এক বছর তারেক রহমানের সাথে হেলালুজ্জামান লালুর সরাসরি যোগাযোগ তৈরী হবার প্রেক্ষাপটে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তার প্রভাব বেড়ে যায়।
এসব নিয়ে নিয়ে প্রায় কোনঠাসা হয়ে পড়েন জেলা সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম। এমনও শোনা যায় যেকোন মুহূর্তে তারেক রহমানের নির্দেশে ভিপি সাইফুল ইসলামকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করা হচ্ছে। তবে নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হয়ে গেলে জেলা কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া থমকে যায়। নতুন করে শুরু হয় মনোনয়ন নিয়ে অন্তর্বিরোধ ।
বগুড়া ৬ ও ৭ আসনে বেগম খালেদা জিয়ার দাখিল করা মনোনয়নের বিপরীতে পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট মাহাবুব এবং জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাকে প্রাথমিকভাবে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এটি সদর আসন হওয়ায় এই আসনে দলের সভাপতি ভিপি সাইফুল বা সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চানকে প্রাথমিক মনোনয়ন না দেয়া ভিপি সাইফুলের জন্য প্রেষ্টিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। পরে বগুড়া সদর আসনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে খালেদার বিকল্প প্রার্থী এবং ভিপি সাইফুলকে বগুড়া-৪ সংসদীয় আসনে প্রাথমিক মনোনয়নের ফরম দিয়ে পরিস্থিতি ঠান্ডা করা হয়।
তবে বগুড়া-৭ আসনে বেগম খালেদা জিয়ার পাশাপাশি বিকল্প প্রার্থী হিসেবে শুধু গাবতলী উপজেলা চেয়ারম্যান মোর্শেদ এবং শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদলকে প্রার্থী রাখা হল এবং সেটাও তারেক রহমানের ইচ্ছার কথা বলে। এ নিয়ে দলের ভিতরে ও বাইরে সব জায়গায় বড় প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। দলের সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খানকে প্রার্থী (খালেদার বিকল্প ) করার কথা শোনা গেলেও কেন সেটা করা হলনা, এ প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। দলে ও দলের বাইরে সর্বত্র শোনা যাচ্ছে কার ভুলে জিয়ার জন্মভূমিতে এখন বিএনপির কোন প্রার্থীই থাকলোনা ?
এদিকে নির্বাচনের আগে সাবেক ৩ সংষ্কারবাদী এমপি জিএম সিরাজ, কাজী রফিক ও ডাঃ জিয়াউল হক মোল্লাকে দলে ফিরিয়ে এনেই কেন মনোনয়নের জন্য প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত করা হলো তা নিয়ে কোথাও মিশ্র কোথাও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বগুড়া-৫ সংসদীয় আসনে বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে জানে আলম খোকার বদলে সংস্কারপন্থী নেতা হিসেবে ইতোপুর্বে দল থেকে বহিষ্কৃত কোটিপতি ব্যবসায়ী জিএম সিরাজকে মনোনয়ন দিতে পারে এমন আশঙ্কায় দলের তৃণমুলের নেতাকর্মীরা গণপদত্যাগের হুমকি দিয়েছে।
হুমকির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গতকাল সোমবার দুপুরে শেরপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত ঘোষনায় বলা হয়, ১ / ১১ পর থেকে গত ১২ বছর জিএম সিরাজ নিজে নিরাপদে ব্যবসা বাণিজ্য করে এখন নমিনেশন নিতে এসেছেন যা তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের কাছে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। কাজেই এখন তাকে চূড়ান্ত দলীয় মনোনয়ন দিলে বগুড়া-৫ নির্বাচনী আসনভুক্ত শেরপুর ও ধুনট উপজেলা বিএনপির ৯০ শতাংশ তৃণমূল নেতাকর্মী এক যোগে দল থেকে গণপদত্যাগ করবে ।
সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও শেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান রাফু। বগুড়া-৫ আসনের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখলেও সংষ্কারবাদী কাজী রফিকের বগুড়া-১ আসনের তৃণমুল নেতাকর্মী ও সংষ্কারবাদী ডাঃ জিয়াউল হক মোল্লার বগুড়া-৫ আসনের নেতাকর্মীদের মনোভাবও অনুরুপ বলেই জানা গেছে। সংষ্কারবাদীরা যদি দলে ফিরেই মনোনয়ন পায় তাহলে ত্যাগী নেতাকর্মীরা কেন দলের কারণে সরকারের রোষানলে পড়ে সর্বহারা হবে সে প্রশ্নটিই ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ।



 

Show all comments
  • Md Shafikur Rahman Shafiq ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩০ এএম says : 1
    বিষয় টা দলীয় হাই কমান্ডারদার ভাবা উচিত। স্থানীয় রাজনীতি দেখতে হবে, নইলে ভোট কেন্দ্র কে পাহারা দেবে???
    Total Reply(0) Reply
  • Noor Ul Islam ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩২ এএম says : 1
    এমনটি যে হবে তা তখনই স্পষ্ট হয়েছিলো যখন তুফান গতিতে ঐক্যফ্রন্ট এলো।বজ্রের মত ৭ দফার আঘাত হানলো।শর্ত আদায়ে সিংহের মত গর্জন ছাড়লো।তারপর হঠাৎ সংলাপ নিয়ে বিড়ালের মত দৌঁড়াদৌঁড়ি করলো।অবশেষে ইঁদুরের মত গর্তে ঢুকে পড়লো।
    Total Reply(0) Reply
  • Hossni Mubarak ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৩ এএম says : 1
    বিএনপির লোকদের মনোনয়ন বাতিল করে,ওরা পাচ জানুয়ারির ভূয়া ভোটারবিহীন নিরবাচের নীলনকসা কায়েম করতে চায় আরকি,,
    Total Reply(0) Reply
  • Sarkar Shofik ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৫ এএম says : 1
    দীঘ এক যুগ ধরে শেরপুর ধুনট টের ধানের শীস যার হাতে ছিল।কোন অতীতি পাখিকে আমরা চাই।খোকা ভাই কে ধানের শীস দিতে।এটা আমাদের প্রাণের দাবী গন মানুষের দাবী।খোকা ভাইকে ধানের শীস না দিলে।আমরা সত্যি স স পদ থেকে পদ ত্যাগ করবো।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shafikur Rahman Shafiq ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৬ এএম says : 1
    মাঠের নেতা জানে আলম খোকা, নমিনেশন তার'ই হওয়া উচিৎ। দলের অসহায় সময়ে তার অবদান ভোলার মত না।।।
    Total Reply(0) Reply
  • Masud Rana ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩৭ এএম says : 1
    মনোনয়নের জন্য হুমকি দিলে তারে দরকার নাই। পাগল না কি
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Jakiul Islam ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:০৮ এএম says : 0
    S
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ