Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্ব মিডিয়ায় খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল প্রসঙ্গ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:৫৬ পিএম | আপডেট : ৪:৫২ পিএম, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

দুর্নীতির অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত থাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনে দাখিল করা মনোনয়নপত্রই বাতিল হয়েছে। ফেনী-১, বগুড়া-৬ এবং বগুড়া-৭ আসনে প্রার্থিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। তিনটি আসনের একটি থেকেও নির্বাচন করতে পারবেন না তিনি। এ ঘটনায় বিশ্ব জুড়েই আলোচিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি আর্ন্তজাতিক সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। আল জাজিরা, এপি, ওয়াশিংটন পোস্ট, নিউইয়র্ক টাইমস, ডেইলি মেইল, পিটিআই, বিবিসি, এনডিটিভি, চ্যানেল নিউজ এশিয়া, দ্য স্টেট পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ সহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় আর্ন্তজাতিক মিডিয়ায় এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবিসি বাংলা সংস্করনে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘সংসদ নির্বাচন: বিএনপি নেতা খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিল তিন আসনেই।’
বার্তা সংস্থা এপি’র শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে পারবেন না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির শিরোনাম, ‘খালেদার প্রার্থী পদ খারিজ করে দিল বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন।’
ওয়াশিংটন পোস্ট শিরোনাম দিয়েছে, ‘বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতা জিয়া নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।’
নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ‘বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দলের নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কারণ, দু’টি দুর্নীতির মামলায় তিনি কারাদ- ভোগ করছেন।’
পিটিআই লিখেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। কিন্তু দু’টি দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় নির্বাচন কমিশন রোববার তার প্রার্থিতা বাতিল করেছে। এর চারদিন আগে হাইকোর্ট রুল দেয়, কোন ব্যক্তিকে যদি দুই বছরের বেশি জেল দেয়া হয় তাহলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না।
এতে ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে খালেদা জিয়ার সুযোগ কার্যত শেষ হয়ে গেছে। তার স্বামী, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা নিয়ে দু’টি দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমানে জেলে রয়েছেন ৭৩ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, একজন প্রার্থীকে যদি অযোগ্য ঘোষণা করা হয় তাহলে তিনি নির্বাচন কমিশনের ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারেন। তিনি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারেন অথবা কমিশনের সিদ্ধান্তকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। খালেদা জিয়া ছাড়াও উচ্চ পর্যায়ের ১৫ জন প্রার্থীকেও বিভিন্ন অজুহাতে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্রের দুর্নীতির মামলায় ঢাকার বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করে জেল দেয়। তারপর ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। ওই মামলায় তাকে ৫ বছরের জেল দেয়া হয়। ৩০শে অক্টোবর হাইকোর্ট ওই শাস্তিকে দ্বিগুন করে ১০ বছর করে। ২৯শে অক্টোবর একটি বিচারিক আদালত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করে ৭ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে।
২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি এবার প্রসিদ্ধ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
আল জাজিরা লিখেছে, এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রোববার ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী যদি কোন ব্যক্তি অভিযুক্ত হন এবং দুই বছর বা তারও বেশি শাস্তি হিসেবে তাকে জেল দেয়া হয় তাহলে তিনি বৈধ প্রার্থী হতে পারেন না। খালেদা জিয়া ৩ টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তার প্রার্থিতা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। এমন ঘোষণাকে তার দল প্রত্যাখ্যান করেছে রোববার। তারা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে চ্যালেঞ্জ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপির রিপোর্ট উদ্ধৃত করে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল লিখেছে, মনোনয়নপত্র বাতিলের এমন সিদ্ধান্ত অশুভ উদ্দেশ্যমূলক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী। তার ভাষায়, মনোনয়নপত্র বাতিল হলো সরকারের নীলনকশার অংশ। এর মধ্য দিয়ে তারা খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবার নির্বাচন। তিনি টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরতে চান।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রয়েছে আরো ৩০টি অভিযোগ। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি থেকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা পর্যন্ত। তবে তার দল দাবি করে, এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিরোধীদের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার।



 

Show all comments
  • Jahangir ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৮:১৮ পিএম says : 1
    খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দুরে রেখে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের নতুন ভোটারদের ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • রিপন ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১১:২৮ পিএম says : 0
    কাপুরুষ। আ'লিগ তার টপ টু বটম তামাম লোকবলসমেত কাপুরুষ এবং বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য কৃষ্টি সংস্কৃতির বৈরি। বাঙালির বীরত্বের ইতিহাসে আমরা দেখি লড়াইরত বৈরি মানসিংহের তরবারি ভেঙে গেলে বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম বীর ঈশা খাঁ লড়াই বন্ধ করে আগে প্রতিপক্ষের হাতে নিজ তরবারি তুলে দিয়েছেন, আরেকটি তরবারি আনিয়ে নিজে হাতে নিয়েছেন। তারপর ফের লড়াই। সমানে সমান লড়াই করে বীর বাঙালি। আর এরা হেরে যাবার ভয়ে প্রতিপক্ষকে ময়দানের বাইরে রাখছে। আচ্ছা বলুন তো দেখি, একে ফুটবল ম্যাচটি পাতানো, তায় বিপক্ষ দলের হেভিওয়েট খিলাড়িরা মাঠে যেন নামতে না পারে সেজন্যে মাঠে নামার আগেই লাল কার্ড দেখানো হচ্ছে; এমন ম্যাচ কি কাপুরুষের ম্যাচ নয়? কি মল্লযুদ্ধ কি কাবাডি কি নৌকা বাইচ সর্বত্রই বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য, সর্বজনীন মূল্যবোধ হলো প্রতিপক্ষের সাথে সমানে সমান লড়াই। নৌকা বাইচে একপক্ষ মোটরবোটে অপরপক্ষ দাঁড়ে, একপক্ষ নদীতে, অপরপক্ষকে রাখা হচ্ছে নদীর বাইরে - বলুন তো মশাই এসব বুঝি বাঙালি কৃষ্টি সংস্কৃতির সাথে মেলে? আস্ত কাপুরুষ নপুংসক। পরাজয়ে ডরে না বীর। এরা বীর নয়, বাঙালি তো নয়ই। নইলে পরাজয়ের ডরে প্রতিপক্ষকে ময়দানের বাইরে রাখতো না, যেকোন মূল্যে ময়দানে হাজির করিয়ে লড়াই করতো, কিন্তু এখন কী দেখছি জানেন? দেখছি গণমানুষের মননে-বিবেকে মহীয়সী বীর নারী খালেদা আর তাঁর অনুসারীদের জয়, আর দেখছি কতিপয় কাপুরুষের নর্তন কুর্দন। ঘেন্না ধরে গেছে মশাই। কেন জানি মনে হচ্ছে ঘেন্নার এ অনুভূতি অনুভূত হচ্ছে বিবেকবান প্রতিটি বাঙালির মনে। নেহায়েত অশোভন দেখাবে, তাই কোনমতে চেপেচুপে রেখেছি মশাই, নইলে আমারও প্রাণখুলে ঝেড়ে কাশতে ইচ্ছে করে, হা.....ক্ থুহ্!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ