পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তারেক সালমান : দলের ২০তম জাতীয় কাউন্সিল সফলে ব্যাপক কর্মকা- চলছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে। কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারাও এখন প্রচ- ব্যস্ত সময় পার করছেন। দম ফেলবার সময় নেই অনেক নেতার। দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পুরনো ঐতিহ্যবাহী এই দলটির এবারের জাতীয় কাউন্সিলের শ্লোগান হচ্ছে ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের’ বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান।
নতুন করে অনিবার্য কোনো কারণ না ঘটলে জুলাই মাসের ১০ ও ১১ তারিখে পবিত্র ঈদুল ফিতরের মাত্র তিন দিন পর এ কাউন্সিল হওয়ার দিনক্ষণ নির্ধারণ করা আছে। নির্দিষ্ট দিনের কমপক্ষে ১০ দিন আগে সব কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্যরা।
ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি উপ-কমিটির বৈঠকে কাউন্সিলের সাজ-সজ্জা, শৃঙ্খলা, খাদ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে অতিথি হিসেবে কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে তা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আসছে। কাউন্সিল সফল ভাবে সম্পন্ন করা উপলক্ষে গঠিত ১১টি উপ-পরিষদ আলাদা আলাদা বৈঠক করেছে। কাউন্সিল সফল করার লক্ষ্যে ইতোমধ্য সারাদেশের সকল জেলা ও মহানগরের কাউন্সিলও শেষ হয়েছে।
জানা গেছে, সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি দলের কাউন্সিলকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্য চীনা কমিউনিস্ট পার্টি, ভারতের বিজেপি, কংগ্রেস, যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টি, যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টিসহ পৃথিবীর ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন ও প্রভাবশালী গণতান্ত্রিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এছাড়া সার্কভুক্ত দেশগুলোর আঞ্চলিক দলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের।
অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দলটির গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র যুগোপযোগী করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। আজ বুধবার গঠনতন্ত্র উপকমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের কাউন্সিলের শ্লোগানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতাসীন দলের এবারের কাউন্সিল উপলক্ষে কাউন্সিলের নির্ধারিত দিনের কমপক্ষে ১৫ দিন আগ থেকে রাজধানীতে এর বহিঃপ্রকাশ দেখা যাবে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন ফ্লাইওভার ও রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে ব্যাপক আলোকসজ্জা করা হবে। দিন-রাত ধরে বড় বড় এলইডি স্ক্রিনে দেখানো হবে আওয়ামী লীগের ইতিহাস, ঐতিহ্য, অর্জন ও সরকারের উন্নয়নের নানান চিত্র। এরই মধ্যে সেসব ডকুমেন্টারির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে বিশ্বের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দেশের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর মধ্যে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি, বিরোধী দল কংগ্রেস, যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টি, যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টি এবং চীনের চায়না কমিউনিস্ট পার্টিসহ অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান তিনি।
দলের জাতীয় কাউন্সিলে আগত কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ও অতিথিদের মুরগির মাংসের বিরিয়ানি দিয়ে আপ্যায়িত করা হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপ-পরিষদের আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।
মায়া বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যতগুলো উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে, তার মধ্যে খাদ্য উপ-কমিটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সারা দেশ থেকে প্রায় ৩০ হাজার কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও অতিথি আসবেন। তাদের দেখভাল করা এবং সর্বোপরি তাদের খাবার ব্যবস্থা করাই কমিটির দায়িত্ব।
তিনি জানান, কমিটির গুরুদায়িত্ব অনুসারে খাদ্য উপ-কমিটিতে প্রায় ১ হাজার সদস্য থাকবে। এখন পর্যন্ত মাত্র একশ’ সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই কমিটিতে সাংগঠনিক পদাধিকার বলে ঢাকা মহানগরীর দলীয় সংসদ সদস্য, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা সদস্য হিসেবে গণ্য হবেন। মহানগরীর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
শৃঙ্খলা উপকমিটির সদস্য সচিব আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, কাউন্সিলকে সফল করার লক্ষ্যে আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে শৃঙ্খলা, শান্তি এবং নিরাপত্তাসহ সব বিষয়কে মাথায় রাখা হচ্ছে। কাউন্সিল সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করার জন্য শৃঙ্খলা উপ-কমিটিতে মোট দুই হাজার সদস্য নিয়ে গঠন করা হবে। এ কমিটির সদস্যরা শুধু কাউন্সিল এলাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, পুরো ঢাকা সিটিকে শৃঙ্খলার আওতায় আনার জন্য কাজ করবেন। দুই হাজার সদস্যকে ৮০টি গ্রুপে ভাগ করা হবে। এক একটি গ্রুপে ২৫ জন করে সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
গঠনতন্ত্র উপকমিটির সদস্য সচিব ও তথ্য গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, গঠনতন্ত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে না; তবে যুগোপযোগী করা হবে। দলের সিনিয়র নেতারা এ কমিটিতে রয়েছেন। বুধবার আমরা বৈঠক করব। সেখানে কমিটির সদস্যরা তাদের মতামত তুলে ধরবেন, প্রস্তাব দেবেন। এরপর আমাদের সভাপতির সঙ্গে সে সকল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে কাজ করবো।
মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির সদস্য সচিব মির্জা আজম বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলন হবে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ। শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা রাজধানী নয়, ঢাকার প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যন্ত এর ব্যাপকতা থাকবে। রাজধানীতে কমপক্ষে ১৫ দিন ও সারা দেশে সাত দিন আগে থেকেই বোঝা যাবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হবে। আমরা সেভাবেই কাজ করে চলছি। ঈদের তিন দিন পর কাউন্সিল হবে। তাই আমরা ২৭ রমজানের আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করতে চাই।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর পরপর দলের কেন্দ্র থেকে শুরু করে সর্বস্তরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিধান রয়েছে। দলটির সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।