পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাবি রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকা-ের ১১ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তদন্তে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। এর মধ্যে গতকাল দোষীদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে বক্তারা বলেন, একের পর এক শিক্ষক হত্যা করে জাতির মেরুদ- ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। অপরাধীরা শিক্ষক হত্যার মতো জঘন্য কাজ করেও বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। এতে করে সর্বত্র বিচারহীনতা বাড়ছে। শিক্ষকরা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস নয়, আমরা এ হত্যাকা-ের বিচার চাই। গতকাল বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব প্রফেসর ড. মাকসুদ কামাল বলেন, অধ্যাপক তাহের, ইউনুস ও লেলিন হত্যাকা-ের বিচার যেমন ঝুলে আছে, আমরা চাই না রেজাউল করিম সিদ্দিকীর হত্যাকা-ের বিচারও ঝুলে থাকুক। ছাত্র-শিক্ষক সকলে মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সরকার ক্ষমতায় আছে কিন্তু তাদের আচরণ মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যায় না। তারা বারবার যে আশ্বাস দিচ্ছে সেই আশ্বাস আমাদের মনকে শান্ত করতে পারছে না। বছরের পর বছর ঘুরিয়ে বিচারের নামে এসব প্রহসন চলবে না। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পেরে উঠতে পারবো না। কিন্তু আমরা সবাই মিলে যৌক্তিক পরিণতি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো, এতে কোন সন্দেহ নেই।’
সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর শাহ আজম শান্তুনু। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, উপ-উপার্চায প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপর্চায প্রফেসর মোকাদ্দেম হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, রাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর রেজাউল করিম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান প্রধান ও নিহত রেজাউল করিম সিদ্দিকীর স্ত্রী ও কন্যাসহ বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃিত বিভাগ, নাট্যকলা বিভাগ, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগ, হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, সমাজকর্ম বিভাগ, ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ‘মুকুল প্রতিবাদ ও সংহতি মঞ্চ’-এ এসে যোগ দেয়। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এদিকে সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়। তবে এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে না পারলে, নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রদীপ জ্বালিয়ে এ কর্মসূচিতে সংহতি জানানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর শাহ আজম শান্তুনু।
হত্যার সঙ্গে জড়িত নিজ বিভাগের দুই শিক্ষার্থী : পুলিশ
এদিকে প্রফেসর ড. এএফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যাকা-ের জড়িত দুইজনকে শনাক্ত করা গেছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ। তারা দুইজনই রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। ওই দুজনই জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। ঘটনার পর থেকে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ধরতে পারলেই এ হত্যাকা-ের সঙ্গে আর কারা জড়িত তা বের হয়ে আসবে বলেও দাবি করেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার তমিজউদ্দীন আহমেদ।
তিনি বলেন, আদর্শিক কারণে মৌলবাদী সংগঠনের সদস্যরা রাবি শিক্ষক রেজাউল করিমকে হত্যা করেছে। এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগেরই দুই শিক্ষার্থী জড়িত রয়েছে। তারাই এ হত্যাকা-টি ঘটিয়েছে বলে পুলিশ অনেকটা নিশ্চিত হয়েছে। তবে শিক্ষক রেজাউল হত্যাকা-ের সঙ্গে কোনো ব্যক্তিগত কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।