Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বস্তিদায়ক রহমতের বৃষ্টি

প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব রিপোর্ট : কঠিন রোদ, তাপদাহ আর গরম হাওয়ায় মানুষ অতিষ্ঠ। উপমহাদেশে এপ্রিলের এ দাবদাহ, প্রচ- গরম ও তীব্র সূর্যতাপ মানুষের জীবন করে তোলে ওষ্ঠাগত। অনেক লোক মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও অসংখ্য মানুষ হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়া, পানিস্বল্পতা ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয় এ সময়। নদীমাতৃক বাংলাদেশের স্বাভাবিক গ্রীষ্ম যেন এখন আর নেই। বেশ ক’বছর ধরে মরুর লু’ হাওয়ার মত বাংলাদেশের বাতাস কেমন যেন উষ্ণ শুষ্ক ও নির্মম হয়ে গেছে। অনেক গরমেও মানুষের শরীর ঘামে না। ঘাম শুষে নেয় তীব্র তাপদাহ। গ্রামবাংলার মানুষ যেমন নদীর কূলে বট পাকুড়ের ছায়ায় স্বস্তির বিশ্রাম নিত। অনেকে লিলুয়া বাতাসে দিত ক্লান্তির ঘুম। বর্তমানে গ্রীষ্মের দৃশ্যপট পুরোই বদলে গেছে। ছায়াতেও স্বস্তি নেই। নেই আরামের ঠা-া বাতাস। বাতাসে যেন আগুনের ঝাঁজ মেশানো। আর বহতা নদীই আর রইল কই? দেশের সব নদ-নদী শুকিয়ে কাঠ। অনেক নদীর বুকেই বাড়িঘর ক্ষেত খামার। গাড়ি ঘোড়া সাইকেল চলছে দেদারছে।
দেশের মানুষ গরমে অস্থির হয়ে, দাবদাহে জব্দ হয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানায়। এপ্রিলের শেষদিকে শুরু হয় দেশজুড়ে তওবা, ইসতিগফার ও দোয়া। কান্নকাটি মুনাজাত ও আহাজারি শোনা যায় ২৯ এপ্রিলের প্রতিটি জুমার জামাতে। নামাজ শেষে ইমাম খতিবগণ মুসল্লীদের নিয়ে চোখের পানি ফেলেন। সর্বশক্তিমাণ মহান আল্লাহর কাছে, তারা দেশের কোটি কোটি মানুষকে সাথে নিয়ে প্রাণ খুলে দোয়া করেন। বিভিন্ন জায়গায় খরতাপে রুদ্র আবহাওয়ায় খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বৃষ্টির নামাজ সালাতুল ইসতিসকা অবশ্য শাসক শ্রেণি, উচ্চপদস্থ লোকজন তওবা করে ইসতিসকা পড়লে কাজ দ্রুত হয়।
আবহাওয়া অফিস বলেছিল, আগামী সপ্তাহের ভোর বৃষ্টিপাতের কোন নমুনা দেখা যাচ্ছে না। মিডিয়ায় এল, মে মাসটি হতে বছরের উষ্ণতম মাস। গবেষকগণ বললেন, বিগত ২৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাবদাহ হচ্ছে চলতি বছর। হতাশ ও বিপন্ন মানুষ আল্লাহর রহমতের দিকে তাকিয়ে। উষ্ণতম মে মাসের প্রথম দিবসেই হয়ে গেল এক পশলা বৃষ্টি। এরপর দীর্ঘ বর্ষণ, সঙ্গে বোশেখের বাতাস। মৃদ ঝড়। রাজধানী ঢাকায় রেকর্ড করা হল ৮ মি.মি. বৃষ্টি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি। কমবেশি বর্ষণের সাথে ঝড়ো বাতাস। রহমতের বৃষ্টিতে প্রকৃতির রূদ্ররূপ কিছুটা হলেও বিনম্র হল। রহমতের বৃষ্টিতে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল মানুষ ও প্রকৃতি। পরদিনও বিছিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হল। বাতাস শীতল হল। দাবদাহ কমে এল। মøান হল রোদের তেজ। আল্লাহ তার বান্দাদের প্রার্থনা কবুল করেছেন। তিনি বাংলাদেশের লাখো মসজিদে কোটি কোটি মানুষের মুনাজাত কবুল করেছেন। তার নির্দেশেই বৃষ্টি বর্ষিত হয়। আকাশ থেকে নেমে আসে রহমত বরকত ও রিজিক সমৃদ্ধ বারিধারা। কঠিন কষ্টের মাঝে শান্তি স্বস্তি আর আনন্দের স্পর্শ নিয়ে আসতে পারে এক পশলা রহমতের বৃষ্টি। মানুষ আল্লাহর রহমতেই বেঁচেবর্তে থাকে রুদ্র প্রকৃতিতে, বৈরি বসুন্ধরায়। তাঁর একটু রহমতই যথেষ্ট পৃথিবীকে মানুষের বাসোপযোগী রাখতে। মানুষ তাঁরই আশ্রয়ে বেঁচে থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বস্তিদায়ক রহমতের বৃষ্টি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ