পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হুইল চেয়ার করে গতকাল আদালতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাজির করা হলে আদালতের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আমাকে জেলে আর আমাদের নেতা-কর্মীদের আদালতে ব্যস্ত রেখে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না। সময় না দিলে বলে দিন, আমরা নির্বাচন করতে পারব না।
আদালত কক্ষের পরিবেশ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সিকিউরিটির কথা বলে কেন আমার এত কাছাকাছি অবস্থান নেয়? পুলিশ সিকিউরিটির মানে কি আমাকে ঘিরে রাখা? তাদের কারণে আমি আইনজীবীদের দেখতে পাই না। তাদের কথা শুনতে পারি না। পুলিশ আদালতের প্রবেশ পথে থাকুক, এজলাসে নয়। বহু স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা রয়েছে, যেগুলোর বিচার দ্রুত করা হয় না। নারায়ণগঞ্জের সাত হত্যা মামলার; কই এই মামলার বিচারতো তাড়াতাড়ি করা হলো না? বর্তমান রাজনীতির সঙ্গে সবকিছু চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে পুরান ঢাকায় পুরান কেন্দ্রীয় কারাগারে পাশের অস্থায়ী ঢাকার নবম বিশেষ জজ আদালতে তাকে হাজির করা হয়। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক মাহমুদুল কবির এ মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য শুনানি জন্য ৩ জানুয়ারী ২০১৯ দিন ধার্য করে দেন। বিচারক এজলাস থেকে নেমে যাওয়ার পর খালেদা জিয়াকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে পাশে একটি কক্ষে নেয়া হয়। সেখানে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলে। এ মামলার অন্যতম আসামি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের অব্যাহতির আবেদনের আংশিক শুনানির এ দিন ধার্য করেন।
বকশিবাজার থেকে আদালত স্থানান্তর করে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশেষ আদালতে নেয়া হয়। এতোদিন বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে বসে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের নাইকো মামলার কার্যক্রম চলছিল। ৮ নভেম্বর মামলার শুনানি শেষে এই এই দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে সানাউল্লাহ মিয়া, আমিনুল ইসলাম, আহমেদ আযম খান, খোরশেদ মিয়া আলম, জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, জাকির হোসেন ভুইয়া উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল। এসময় ব্যবসায়ী তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একে এম মোশাররফ হোসেন ও সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। হুইল চেয়ারে বসে বেলা ১১টা ৫৮মিনিটে খালেদা জিয়াকে কারাগারে ভেতরে অস্থায়ী আদালতে হাজির করা।
শুনানিতে যা হল: শুনানির এক পর্যায়ে বিচারকের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, দেশে তো আরো অনেক মামলা আছে। সেগুলোর তো স্বাভাবিক বিচার হচ্ছে। আমার মামলার মতো দ্রুত বিচার আর কোন মামলায় হয়েছে দেখাতে পারবেন? এরপর বিচারক বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে আমি কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারব না। তবে প্রসিকিউটরকে বলছি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য। এ রকম এজলাসে কোন বিচার হচ্ছে, আর কেনই বা এত দ্রুত বিচার শেষ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে প্রশ্ন তুলে বিচারকের কাছে খালেদা জিয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাত হত্যা মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কই এই মামলার বিচারতো তাড়াতাড়ি করা হলো না? জনসন রোডের মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের তো স্বাভাবিক বিচার চলছিল। তবে এখানে বিচারের কী কারণ? এ মামলার বিচার স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে না। অস্বাভাবিক দ্রুততায় চালানো হচ্ছে।
আদালত কক্ষে তার আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যদের অবস্থান নিয়েও অসন্তোষ জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। পুলিশ সিকিউরিটির কথা বলে কেন আমার এত কাছাকছি অবস্থান নেয়? তাদের কারণে আমি আইনজীবীদের দেখতে পাই না। তাদের কথা শুনতে পারি না। পুলিশ প্রবেশপথে থাকুক, এজলাসে নয়। তারা তো আদালতের বাইরে থাকবে। আমার কাছে কেন থাকবে? আর এই ছোট্ট পরিসরের আদালতে কীভাবে আপনি (বিচারক) এ মামলার বিচার করবেন। আগের আদালতে বিচার করুন।
আদলতে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, একদল নির্বাচন করবে আর আমরা আদালতে আসবে, এটা তো হতে পারে না। তিনি বলেন, যেহেতু এখন সবাই মাঠে নির্বাচনের কাজ করছে, কেউ আমার জন্য, কেউ তার জন্য। যেখানে ইলেকশন নিয়ে সবাই ব্যস্ত, সেখানে আমাদের আদালতে আটকে রাখা হয়েছে। অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আমাদের এগুলি করতে হচ্ছে। তারপরও যদি আমাদের কোর্টের মধ্যেই আটকে রাখা হয়, তাহলে বলে দিক, নির্বাচন করো না।। খালেদা জিয়া নির্বাচনের পর অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির জন্য অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে আমার নেতাকর্মীরা ব্যস্ত থাকবেন। কেউ আসতে পারবেন না। এ কারণে নির্বাচনের পর শুনানির দিন ধার্য করা হোক।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, জেলখানার ভিতরে আদালত বসিয়ে মামলা পরিচালনা করা ঠিক না। এটা তো হাই সিকিউরিটি মামলা নয়। আমাদের দেশে আইনের শাসন বিলুপ্তির পথে। এর চেয়ে ভালো আমাদের ফাঁসি দেন। এভাবে কোনো বিচার কাজ চলতে পারে না।
এসময় খালেদা জিয়া বলেন, আমাকে জেলে এবং আমাদের নেতা-কর্মীদের আদালতে ব্যস্ত রেখে, প্রতিদিন আদালতে দৌড়ঝাঁপ করিয়ে নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে না। একদল বছর ভরে ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনি প্রচারণা করছেন। আর আমাদের আদালতে ব্যস্ত রাখবেন। এখানে আমাদের আইনজীবীরা নির্বাচনের প্রার্থী। আবার প্রার্থী না হলেও নির্বাচনের জন্য তারা কাজ করবে। মামলা চললে কেউ আসতে পারবে না। আবার আইনজীবীও আসতে পারবে না। বিষয়টি বিবেচনায় নিবেন। এরপর প্রসিকিউটর বলেন, মামলার সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক নেই। আপনি যেটা বলেছেন তা রাজনৈতিক বক্তব্য।
এক পর্যায়ে খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার মোশাররফ হোসেন কাজলকে লক্ষ করে বলেন, তাকে প্রতিমন্ত্রী করে এ মামলা পরিচালনার পুরস্কার দেবে আওয়ামী লীগ। তার কথা টেনে খালেদা জিয়া বলেন, না, তাকে ফুল মন্ত্রী করে দেবে। তখন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে কাজল বলেন, ম্যাডাম, আমার জন্য দোয়া করবেন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা যুক্তি উপস্থাপনের বিচারক অভিযোগ গঠনের বাকি শুনানির জন্য নির্বাচনের পর ৩ জানুয়ারি দিন রাখেন। বেলা সোয়া ১টার দিকে বিচারক নেমে যাওয়ার পর খালেদা জিয়াকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে পাশে একটি কক্ষে নেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।